আমীন আল রশীদ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা প্রথম আলোচনায় আসে ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে—যেটি ওয়ান-ইলেভেন বা এক-এগারোর সরকার নামে পরিচিত। তখন মাইনাস টু বলতে বোঝানো হতো আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই শীর্ষ নেত্রীকে। যদিও তখন সেটি সম্ভব হয়নি।
২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে টানা ১৫ বছর দেশের রাজনীতিতে আরেক ধরনের ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা শুরু হয়—সেখানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছাড়াও দল হিসেবে বিএনপি এবং তাদের একসময়কার জোটসঙ্গী জামায়াতকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করতে নানাবিধ রাষ্ট্রীয় মেশিনারিজ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, একটি প্রশ্নবিদ্ধ মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে রাজনীতি থেকে এক অর্থে মাইনাস করে দেওয়া সম্ভব হলেও দল হিসেবে বিএনপি ও জামায়াতকে মাইনাস করা সম্ভব হয়নি। বরং ভেতরে ভেতরে তারা যে অধিকতর সংগঠিত হয়েছে, তার প্রমাণ ৫ আগস্ট। ফলে এখন এটি অনেকেই মনে করেন যে আওয়ামী লীগ যদি বিএনপিকে মাইনাসের চেষ্টা না করে একটা ন্যূনতম গণতান্ত্রিক পরিসর ও পরিবেশ নিশ্চিত করত, তাহলে কোনো রাজনৈতিক-সামাজিক ও আন্তর্জাতিক শক্তি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এতটা শক্তিশালী হতে পারত না, যাতে তার পতন নিশ্চিত হয়।
রাজনীতির মাইনাস ও নিষিদ্ধের প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানের সময় গত ১ আগস্ট সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। যদিও ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী সংগঠন হিসেবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছিল অনেক আগেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেনি। বরং জামায়াতকে তারা বিএনপিকে মাইনাসের প্রক্রিয়ায় তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করেছে। অথচ তারা এমন সময়ে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করল, যখন আন্দোলনের বল আর সরকার তথা আওয়ামী লীগের কোর্টে ছিল না। বলা হয়, আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল মূলত অভ্যুত্থানকে দুর্বল করার জন্য। যেহেতু সরকার বিশ্বাস করত যে এই অভ্যুত্থানটি ছাত্র-জনতার হলেও এখানে জামায়াতের বিরাট অশংগ্রহণ ও সমর্থন রয়েছে, ফলে জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করা হলে তাদের মনোবল ভেঙে যাবে এবং তাদের প্রতিহত ও মোকাবিলা করা সহজ হবে। কিন্তু কাজটি এমন সময়ে করা হয়েছে যখন কোনো কিছুই সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল না।
রাজনীতির এই বিয়োগ ও নিষিদ্ধকরণের প্রক্রিয়ায় এবার সদ্যবিদায়ী আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার এবং সেই একই সন্ত্রাসবিরোধী আইনে।
কেন ছাত্রলীগকে এখনই নিষিদ্ধ করা হলো বা করতে হলো, তার একাধিক কারণ থাকতে পারে। যেমন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরে স্বস্তিতে নেই। আইনশৃঙ্খলা ও নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ে তাদের অস্বস্তি অসীম। এর সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও তার সংগঠনগুলো যদি মাঠে নামে, তাহলে সেখানে মূল শক্তি হচ্ছে ছাত্রলীগ। অতএব ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হলে তাদের মোকাবিলা ও প্রতিরোধ করার আইনি শক্তি বৃদ্ধি পাবে। কেননা একটি বৈধ সংগঠনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে ধরনের আচরণ করে, অবৈধ বা নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে সেই একই আচরণ করা হয় না।
দ্বিতীয়ত, এখন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার যে সবকিছু গুছিয়ে উঠতে পারছে না, তার অন্যতম প্রধান কারণ পুলিশ-প্রশাসনের সক্রিয়তার অভাব। এটি বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে গত ১৫ বছরে পুলিশ-প্রশাসনে যত নিয়োগ হয়েছে, তার বিরাট অংশই হয়েছে দলীয় পরিচয়ে। দলীয় পরিচয়ে যাদের নিয়োগ-বদলি ও পদোন্নতি হয়েছে তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে যদি অসহযোগিতা করে, সেটি অস্বাভাবিক নয়। আবার এমনও অনেকের নিয়োগ হয়েছে, যাঁরা ছাত্রজীবনে সরাসরি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অতএব পুলিশ-প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায় থেকে এইসব লোককে বের করে দেওয়া, অর্থাৎ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন—এমন লোকদের বাদ দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার একটি কারণ হতে পারে। কেননা এরই মধ্যে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন: ‘সরকারি চাকরিতে নিষিদ্ধ সংগঠনের কোনো কর্মী যুক্ত হতে পারবেন না। যেসব নিয়োগ এখনও প্রক্রিয়াধীন, সেখান থেকেও তাদের বাদ দেওয়া হবে।’ এখানে এটি স্পষ্ট যে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এমন কেউ এই সরকারের আমলে সরকারি চাকরি পাবেন না। সেই ধারাবাহিকতায় যাঁরা একসময় ছাত্রলীগ করতেন এবং এখন চাকরি করছেন, তাঁদেরও হয়তো বেছে বেছে বাদ দেওয়া হবে।
এখন প্রশ্ন হলো, আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে কি না? প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে প্রস্তাব এসেছে। সুতরাং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে বৃহত্তর রাজনৈতিক সংলাপ জরুরি।’
স্মরণ করা যেতে পারে, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার সময়ও আওয়ামী লীগ একইভাবে রাজনৈতিক ঐক্যের দোহাই দিয়েছিল। অর্থাৎ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার আগে আওয়ামী লীগের শরিক ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে শেখ হাসিনা বৈঠক করেছেন এবং জামায়াতকে নিষিদ্ধের দাবিটি ১৪ দলের নেতাদের মুখ থেকে বলানো হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিটি যদি অন্তর্বর্তী সরকারের ঘনিষ্ঠ দল ও সংগঠনগুলো, বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং সদ্য গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটিকে দিয়ে উত্থাপন করা যায়, তাহলে এই রেফারেন্স ধরেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে। তবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার ঘটনাটি সেই প্রক্রিয়ারই অংশ কি না, তা বুঝতে আরেকটু সময় লাগবে।
এটা ঠিক যে যেসব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের জনভিত্তি রয়েছে; যারা একাধিকবার রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল এবং যাদের বিরাট ভোটব্যাংক আছে; নিরপেক্ষ ভোট হলে বিপুলসংখ্যক মানুষ যাদের ভোট দেবে—সে রকম কোনো দলকে নিষিদ্ধ করা বা তাদের রাজনীতি থেকে মাইনাস করার চেষ্টা যে আখেরে সফল হয় না, তার বড় উদাহরণ বিএনপি।
অস্বীকার করা যাবে না, বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ অনেকটাই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল এবং জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে দলটির জনপ্রিয়তা আরও কমেছে। কিন্তু তারপরও এই দলটিকে রাতারাতি রাজনীতি থেকে মাইনাস করে দেওয়া কঠিন। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের যে জনবিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে, তাতে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার (ভোটের মাঠে) জনগণের ওপর ছেড়ে দেওয়াই যুক্তিযুক্ত। মোদ্দা কথা, প্রতিহিংসা দিয়ে রাষ্ট্রকে খুব বেশি দূর নেওয়া যায় না—যে প্রতিহিংসা ও অহমিকা আওয়ামী লীগের পতনের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে করা হয়।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা প্রথম আলোচনায় আসে ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে—যেটি ওয়ান-ইলেভেন বা এক-এগারোর সরকার নামে পরিচিত। তখন মাইনাস টু বলতে বোঝানো হতো আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই শীর্ষ নেত্রীকে। যদিও তখন সেটি সম্ভব হয়নি।
২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে টানা ১৫ বছর দেশের রাজনীতিতে আরেক ধরনের ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা শুরু হয়—সেখানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছাড়াও দল হিসেবে বিএনপি এবং তাদের একসময়কার জোটসঙ্গী জামায়াতকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করতে নানাবিধ রাষ্ট্রীয় মেশিনারিজ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, একটি প্রশ্নবিদ্ধ মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে রাজনীতি থেকে এক অর্থে মাইনাস করে দেওয়া সম্ভব হলেও দল হিসেবে বিএনপি ও জামায়াতকে মাইনাস করা সম্ভব হয়নি। বরং ভেতরে ভেতরে তারা যে অধিকতর সংগঠিত হয়েছে, তার প্রমাণ ৫ আগস্ট। ফলে এখন এটি অনেকেই মনে করেন যে আওয়ামী লীগ যদি বিএনপিকে মাইনাসের চেষ্টা না করে একটা ন্যূনতম গণতান্ত্রিক পরিসর ও পরিবেশ নিশ্চিত করত, তাহলে কোনো রাজনৈতিক-সামাজিক ও আন্তর্জাতিক শক্তি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এতটা শক্তিশালী হতে পারত না, যাতে তার পতন নিশ্চিত হয়।
রাজনীতির মাইনাস ও নিষিদ্ধের প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানের সময় গত ১ আগস্ট সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। যদিও ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী সংগঠন হিসেবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছিল অনেক আগেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেনি। বরং জামায়াতকে তারা বিএনপিকে মাইনাসের প্রক্রিয়ায় তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করেছে। অথচ তারা এমন সময়ে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করল, যখন আন্দোলনের বল আর সরকার তথা আওয়ামী লীগের কোর্টে ছিল না। বলা হয়, আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল মূলত অভ্যুত্থানকে দুর্বল করার জন্য। যেহেতু সরকার বিশ্বাস করত যে এই অভ্যুত্থানটি ছাত্র-জনতার হলেও এখানে জামায়াতের বিরাট অশংগ্রহণ ও সমর্থন রয়েছে, ফলে জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করা হলে তাদের মনোবল ভেঙে যাবে এবং তাদের প্রতিহত ও মোকাবিলা করা সহজ হবে। কিন্তু কাজটি এমন সময়ে করা হয়েছে যখন কোনো কিছুই সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল না।
রাজনীতির এই বিয়োগ ও নিষিদ্ধকরণের প্রক্রিয়ায় এবার সদ্যবিদায়ী আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার এবং সেই একই সন্ত্রাসবিরোধী আইনে।
কেন ছাত্রলীগকে এখনই নিষিদ্ধ করা হলো বা করতে হলো, তার একাধিক কারণ থাকতে পারে। যেমন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরে স্বস্তিতে নেই। আইনশৃঙ্খলা ও নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ে তাদের অস্বস্তি অসীম। এর সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও তার সংগঠনগুলো যদি মাঠে নামে, তাহলে সেখানে মূল শক্তি হচ্ছে ছাত্রলীগ। অতএব ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হলে তাদের মোকাবিলা ও প্রতিরোধ করার আইনি শক্তি বৃদ্ধি পাবে। কেননা একটি বৈধ সংগঠনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে ধরনের আচরণ করে, অবৈধ বা নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে সেই একই আচরণ করা হয় না।
দ্বিতীয়ত, এখন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার যে সবকিছু গুছিয়ে উঠতে পারছে না, তার অন্যতম প্রধান কারণ পুলিশ-প্রশাসনের সক্রিয়তার অভাব। এটি বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে গত ১৫ বছরে পুলিশ-প্রশাসনে যত নিয়োগ হয়েছে, তার বিরাট অংশই হয়েছে দলীয় পরিচয়ে। দলীয় পরিচয়ে যাদের নিয়োগ-বদলি ও পদোন্নতি হয়েছে তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে যদি অসহযোগিতা করে, সেটি অস্বাভাবিক নয়। আবার এমনও অনেকের নিয়োগ হয়েছে, যাঁরা ছাত্রজীবনে সরাসরি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অতএব পুলিশ-প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায় থেকে এইসব লোককে বের করে দেওয়া, অর্থাৎ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন—এমন লোকদের বাদ দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার একটি কারণ হতে পারে। কেননা এরই মধ্যে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন: ‘সরকারি চাকরিতে নিষিদ্ধ সংগঠনের কোনো কর্মী যুক্ত হতে পারবেন না। যেসব নিয়োগ এখনও প্রক্রিয়াধীন, সেখান থেকেও তাদের বাদ দেওয়া হবে।’ এখানে এটি স্পষ্ট যে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এমন কেউ এই সরকারের আমলে সরকারি চাকরি পাবেন না। সেই ধারাবাহিকতায় যাঁরা একসময় ছাত্রলীগ করতেন এবং এখন চাকরি করছেন, তাঁদেরও হয়তো বেছে বেছে বাদ দেওয়া হবে।
এখন প্রশ্ন হলো, আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে কি না? প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে প্রস্তাব এসেছে। সুতরাং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে বৃহত্তর রাজনৈতিক সংলাপ জরুরি।’
স্মরণ করা যেতে পারে, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার সময়ও আওয়ামী লীগ একইভাবে রাজনৈতিক ঐক্যের দোহাই দিয়েছিল। অর্থাৎ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার আগে আওয়ামী লীগের শরিক ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে শেখ হাসিনা বৈঠক করেছেন এবং জামায়াতকে নিষিদ্ধের দাবিটি ১৪ দলের নেতাদের মুখ থেকে বলানো হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিটি যদি অন্তর্বর্তী সরকারের ঘনিষ্ঠ দল ও সংগঠনগুলো, বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং সদ্য গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটিকে দিয়ে উত্থাপন করা যায়, তাহলে এই রেফারেন্স ধরেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে। তবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার ঘটনাটি সেই প্রক্রিয়ারই অংশ কি না, তা বুঝতে আরেকটু সময় লাগবে।
এটা ঠিক যে যেসব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের জনভিত্তি রয়েছে; যারা একাধিকবার রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল এবং যাদের বিরাট ভোটব্যাংক আছে; নিরপেক্ষ ভোট হলে বিপুলসংখ্যক মানুষ যাদের ভোট দেবে—সে রকম কোনো দলকে নিষিদ্ধ করা বা তাদের রাজনীতি থেকে মাইনাস করার চেষ্টা যে আখেরে সফল হয় না, তার বড় উদাহরণ বিএনপি।
অস্বীকার করা যাবে না, বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ অনেকটাই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল এবং জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে দলটির জনপ্রিয়তা আরও কমেছে। কিন্তু তারপরও এই দলটিকে রাতারাতি রাজনীতি থেকে মাইনাস করে দেওয়া কঠিন। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের যে জনবিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে, তাতে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার (ভোটের মাঠে) জনগণের ওপর ছেড়ে দেওয়াই যুক্তিযুক্ত। মোদ্দা কথা, প্রতিহিংসা দিয়ে রাষ্ট্রকে খুব বেশি দূর নেওয়া যায় না—যে প্রতিহিংসা ও অহমিকা আওয়ামী লীগের পতনের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে করা হয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪