Ajker Patrika

‘বেঁচে ফিরব ভাবি নাই’

বন্দর (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ০৮: ২১
‘বেঁচে ফিরব ভাবি নাই’

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় লঞ্চের ধাক্কায় যাত্রীবাহী ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৮-১০ জন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন। গতকাল বুধবার সকাল ৯টায় ফতুল্লার এনায়েতনগর ইউনিয়নের ধর্মগঞ্জ খেয়াঘাটে ট্রলার পারাপারের সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় বেঁচে ফেরাদের একজন ফাহিম আহমেদ (১৭)। ট্রলার ডুবে যাওয়ার আগ মুহূর্তে নদীতে লাফ দিয়েও নিজেকে আবিষ্কার করেন লঞ্চের নিচে। চোখ বন্ধ করে সাঁতরে কীভাবে যে রক্ষা পেলেন তা নিজেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। বেঁচে ফেরার পরে এখনো দুঃসহ স্মৃতি তাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।

ধর্মগঞ্জ পশ্চিম তীর ঘাটের কাছেই ফাহিমের বাড়ি। বাড়ির উঠানে চেয়ার নিয়ে রোদে বসে আছেন, তাকে ঘিরে তার আত্মীয়স্বজনেরা। ব্যাগে থাকা ভেজা বইখাতা শুকাতে দিয়েছেন ঝোপের ওপর। আরবি হরফের অক্ষরগুলোর দিকে তাকিয়ে রয়েছেন অপলক দৃষ্টিতে। নাম ধরে ডাক দিতেই মাথা ঘুরিয়ে তাকালেন প্রতিবেদকের দিকে।

ফাহিম ফতুল্লার স্থানীয় একটি মাদ্রাসার মিজান বিভাগের শিক্ষার্থী। হেফজ শেষ করেই ভর্তি হয়েছেন তিনি। প্রতিদিনের মতো আজও বেরিয়েছিলেন মাদ্রাসার উদ্দেশে। কিন্তু সকাল থেকে তীব্র কুয়াশায় দেখা যাচ্ছিল না কিছুই। তবুও ক্লাসে দেরি হয়ে যাচ্ছে বিধায় দ্রুত উঠে পড়েন যাত্রী বোঝাই ট্রলারে।

ট্রলার ছাড়ার তাড়া দিচ্ছিল সবাই। মাঝিও ছেড়ে দেয় ট্রলারটা। কিন্তু কুয়াশায় কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। অনেকক্ষণ ধরে মাঝ নদীতে ঘুরছিল ট্রলারটি। পরে এক তীরে এসে গুগল ম্যাপের সহায়তা নিয়ে নিজেদের অবস্থান দেখি। পরে দেখলাম আমরা পশ্চিম তীরেই আছি। ধর্মগঞ্জ ঘাট দেখে আবার ট্রলার চালানোর পরে হর্ন শুনতে পাই। চিৎকার করে থামতে বলতে বলতেই দেখি লঞ্চ আমাদের সামনে। তারপর ধাক্কা দিয়ে ডুবিয়ে দেয় আমাদের ট্রলার।’

আমি লাফ দিয়ে পানিতে পড়ার পর মাথা তুলতেই লঞ্চের নিচে আঘাত পাই। বুঝলাম লঞ্চের নিচে আছি। পাখায় আঘাত থেকে বাঁচতে চোখ বন্ধ করে সাঁতার কাটতে থাকি। আমার হাতে ছিল ট্রলারের পাটাতনের একটা কাঠ। একটু পরে সামনে একটা বয়া দেখে সেটাতে ভেসে থাকি। আমার ব্যাগ খুলতে পারছিলাম না। প্রায় দশ মিনিট পর একটা ট্রলার এসে আমাদের উঠিয়ে নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত