Ajker Patrika

চার্জশিটের আড়াই মাসেও ধরাছোঁয়ার বাইরে বেসিক ব্যাংকের বাচ্চু

এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮: ৪৮
Thumbnail image

বেসিক ব্যাংকের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুকে ৫৮ মামলায় আসামি করে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত জুনে এসব অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। তবে চার্জশিট দেওয়ার আড়াই মাসেও বাচ্চুকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এ নিয়ে আইনজীবীসহ বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

শেখ আবদুল হাই বাচ্চু গত ৯ আগস্ট আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেছিলেন। তবে আবেদনটি কোনো বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়নি বলে জানা গেছে। জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বলছেন, চার্জশিট হওয়ার পর আগাম জামিনের সুযোগ নেই।

এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী চার্জশিটের পর আগাম জামিনের সুযোগ নেই।

জানা যায়, ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণের অভিযোগ ওঠার পরপরই অনুসন্ধানে নামে দুদক। যাচাই না করে জামানত ছাড়া জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ ওঠে ব্যাংকটির তখনকার পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে।

অনুসন্ধান শেষে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা লোপাট করার অভিযোগে ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর তিন দিনে মোট ৫৬টি মামলা করা হয়। রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় এসব মামলায় আসামি করা হয় ১২০ জনকে। এর মধ্যে ঋণগ্রহীতা ৮২, ব্যাংকার ২৭ ও ভূমি জরিপকারী ১১ জন।

ওই ঘটনায় পরে আরও কয়েকটি মামলা করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও তদন্ত শেষ করতে না পারায় হাইকোর্ট বেশ কয়েকবার অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সবশেষে গত বছরের ২৯ নভেম্বর উচ্চ আদালত এই ঋণ কেলেঙ্কারির তদন্ত শেষ করতে দুদককে তিন মাস সময় বেঁধে দেন। এই সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করে বিচারিক আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আদেশে বলেছিলেন, আদেশের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর থেকে তিন মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে বিচারিক আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। না দিলে দুদকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবশেষে গত ১২ জুন অভিযোগপত্র অনুমোদনের পর তা আদালতে জমা দেয় দুদক।

কিন্তু অভিযোগপত্র দাখিল করার আড়াই মাস পরও বাচ্চুকে গ্রেপ্তার না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করছেন আইনজীবীরা। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, চার্জশিট হওয়ার দীর্ঘদিন পরও গ্রেপ্তার না করাটা দুঃখজনক।

এর আগে বেসিক শেখ আবদুল হাই বাচ্চুকে আসামি না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসও। ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ব্যারিস্টার তাপস তখনকার দুদক চেয়ারম্যানের পদত্যাগও দাবি করেন।

বাচ্চুকে গ্রেপ্তার না করার বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের প্রধান আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, আদালতে চার্জশিটের সঙ্গে গ্রেপ্তারের আবেদন করা আছে। দুদক তাঁকে ধরতে চেষ্টা করছে।

ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুক বলেন, ‘বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির বিষয়টি অনেক পুরোনো। ব্যাংকের টাকা গ্রাহকদের। অবশ্যই এসব উদ্ধার করতে হবে। দীর্ঘ সময় পর নিশ্চয়ই সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় বাচ্চুকে চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আশা করি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে এবং নিশ্চয়ই তাঁকে আইনের আওতায় আনবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত