Ajker Patrika

টাঙ্গাইল-২ : ছোট মনিরের নৌকা নিয়ে টানাটানি

আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইল-২ : ছোট মনিরের নৌকা নিয়ে টানাটানি

গত নির্বাচনে জয়লাভ করে দলে নিজের অবস্থান তৈরি করেন। সেই অবস্থান আরও পাকাপোক্ত করেন শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার মধ্য দিয়ে। তবে আগামী নির্বাচন নিয়ে বেশ চিন্তিতই থাকতে হচ্ছে টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর ও ভূঞাপুর) আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের তানভীর হাসান ছোট মনিরকে। আওয়ামী লীগের গোটা চারেক নেতা ওত পেতে আছেন তাঁর হাত থেকে নৌকা কেড়ে নিতে। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও ফিরিয়ে নিচ্ছেন মুখ। অন্যদিকে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু একক প্রার্থী থাকায় বিএনপি বেশ ফুরফুরে।

এই আসনের ভোটারদের মধ্যে ভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে। তাঁরা বারবার পছন্দের প্রার্থী ও দল বদল করে থাকেন। এই আসনে আওয়ামী লীগ পাঁচবার, বিএনপি চারবার, জাসদ (সিরাজ) ও জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী একবার করে নির্বাচিত হয়েছেন।

এবারও মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন ছোট মনির। তবে তাঁকে টেক্কা দিয়ে মনোনয়ন নিতে তৎপর ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদুল হক মাসুদ, গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক খন্দকার আশরাফুজ্জামান স্মৃতি, সাবেক এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামানের ছেলে সিআইপি খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেল।

ছোট মনির দাবি করেন, তিনি নির্বাচিত হয়ে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় এক হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে চরাঞ্চলের ইউনিয়নগুলো বিদ্যুতের আওতায় এনেছেন। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখায় গোপালপুর ও ভূঞাপুরের ১১টি ইউনিয়ন, ২টি উপজেলা, ২টি পৌরসভায় নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।

তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রের দাবি, দলের প্রবীণ ও ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন না করা, পছন্দের ব্যক্তিদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া, অপেক্ষাকৃত তরুণ-কিশোর (যুবলীগ ও ছাত্রলীগ) কর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া, উন্নয়নকাজে স্থানীয় নেতাদের পরামর্শ না নেওয়া, দলীয় ত্যাগীদের সংযুক্ত না করা, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে নেতাদের সঙ্গে যোগ না দেওয়াসহ নানা কারণে দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী বর্তমান এমপির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।

মনোনয়নপ্রত্যাশী ছোট মনিরের বিরোধী বেশ কয়েকজন। এ কারণে সিনিয়র অনেক নেতার সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের মনোনয়ন ঘিরে এই দূরত্ব বাড়ায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, বিলবোর্ড ভাঙচুরসহ নানা ঘটনা ঘটছে। এমনকি সম্প্রতি ছোট মনিরের বিরুদ্ধে খুন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, বালুমহাল দখলসহ অনেক অভিযোগ করেছেন দলটির স্থানীয় এক নেতা। 
নির্বাচনী ভাবনা জানতে চাওয়া হলে মাসুদুল হক মাসুদ বলেন, ‘আমি মনোনয়নপ্রত্যাশী হওয়ায় বর্তমান এমপি আমার ওপর ক্ষুব্ধ। আমি মনোনয়ন পেলে নির্বাচিত হয়ে জনতার সঙ্গে হাতে হাত রেখে উন্নয়নকাজকে আরও বেগবান করব।’ ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু এবার আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগে তাঁর অবদান ঈর্ষান্বিত।

কোন্দলের ব্যাপারে তানভীর হাসান ছোট মনির বলেন, ‘বড় দলে ছোটখাটো বিভক্তি থাকেই। তারা আবার দলের স্বার্থে এক হয়ে কাজ করেন। ভবিষ্যতেও যাকেই শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক দেবেন, তাঁর হয়ে আমরা সকলে কাজ করব। নৌকার বিজয় নিশ্চিত করব।’

এদিকে গোপালপুর ও ভূঞাপুরে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় বিএনপি। নেতা-কর্মীরা দলীয় কর্মসূচির মধ্যে সীমাবদ্ধ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেওয়া অনেকটা অনিশ্চিত। তারপরও কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী না থাকায় টুকুই আগামী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

টুকু বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আব্দুস সালাম পিন্টুর ছোট ভাই। এলাকায় তাঁর পরিবারের নিজস্ব বলয় রয়েছে। গোপালপুর ও ভূঞাপুরে বিএনপি নিষ্ক্রিয় থাকলেও তাদের শক্তিশালী ভোটব্যাংক রয়েছে।

গোপালপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম রুবেল বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে যাচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোট হলে এই আসনের বিএনপির প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত