Ajker Patrika

১৫০ মিটার স্পার যমুনায় বিদ্যালয় ভবন বিলীন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
১৫০ মিটার স্পার যমুনায়  বিদ্যালয় ভবন বিলীন

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার বেতিল স্পার বাঁধে ধস নেমেছে। গত মঙ্গলবার থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার (বেলা ৩টা পর্যন্ত) স্পার বাঁধের প্রায় ১৫০ মিটার যমুনায় বিলীন হয়েছে। এদিকে, চৌহালী উপজেলার সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নে চলতি সপ্তাহে এলাকার অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এ ছাড়া নদীতে বিলীন হয়েছে চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন। আরেকটি দোতলা ভবনও হেলে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হেলে পড়া ভবনটি যেকোনো সময় নদীতে ভেঙে পড়বে। এদিকে, স্পারটি ধসের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে ওই এলাকার মৎস্য ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর আজুগড়া সাবমেরিন কেব্‌ল সাইডের সার্স লাইন, ফসলি জমি, বসতভিটাসহ বহু স্থাপনা। নদীভাঙনের মুখে রয়েছে চাঁদপুর তামীরুল মিল্লাত হাফিজিয়া মাদ্রাসা, সদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চৌহালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এলাঙ্গী আটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এলাকাবাসী জানান, চলতি মাসে যমুনা নদীতে পানি বাড়ার কারণে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। বেলকুচি উপজেলার মেহেরপুর থেকে চৌহালী উপজেলার বেড়িবাঁধ পর্যন্ত নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

চাঁদপুর এলাকার জবেদা বেওয়া বলেন, ‘স্বামীর রেখে যাওয়া যেটুকু সম্পদ ছিল তা গত কয়েক দিনের নদীভাঙনে নিঃস্ব করে দিয়েছে। এখন কোথায় যাব, কী করব বলতে পারি না। অন্যের জমিতে বসবাসের জন্য গিয়েছিলাম। ১০ বছরের অগ্রিম টাকা চায়। গরিব মানুষ, থাকার জায়গা নাই, টাকা পাব কোথায়?’

চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়টি রক্ষায় দুই বছর আগে বাঁশের বেড়া দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু চলতি সপ্তাহে যমুনা নদীতে পানি বাড়ার কারণে তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় বালুর বস্তা ফেলার কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে স্কুলের একটি ভবন নদীতে ভেঙে পড়ল। আরেকটি ভবনের অর্ধেক নদীতে হেলে পড়েছে। এতে স্কুলে পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে। বিকল্প জায়গায় স্কুলটি স্থানান্তর করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাবনার বেড়া কৈটলা নির্মাণ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহীন রেজা জানান, চৌহালী উপজেলার সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের মেহেরনগর থেকে এনায়েতপুর স্পার বাঁধ পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকায় আন্ডার ওয়াটার ওয়েব প্রোটেকশন কাজ করা হবে। ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে বন্যা এবং নদীতীর ক্ষয়ের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার বিনিয়োগ কর্মসূচিটি প্রকল্প-২ এর আওতায় সম্পন্ন করা হবে। বর্তমানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চূড়ান্তের কার্যক্রম চলছে।

ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে অবহিত করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার বলেন, বেতিল স্পারে ধস নামায় বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। শুধু বস্তা ফেলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয়। পানি কমে গেলে বাঁধটির সংস্কারকাজ করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত