Ajker Patrika

সংকট না থাকলেও বেড়েছে চালের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০: ২৯
Thumbnail image

সরবরাহের কোনো সংকট না থাকলেও বাজারে চালের দাম বাড়ছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে কেজিপ্রতি চালের দাম ৪-৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। ভোক্তা অধিকার সংগঠন বলছে, বাজারে সরকারের নজরদারি কম থাকায় ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিচ্ছেন।

পুরান ঢাকার বাবুবাজারের মেসার্স মা-বাবার দোয়া রাইস এজেন্সির মালিক মনির হোসেন জমাদার বলেন, জুলাইয়ের শেষ দিকে পাইকারিতে প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ছিল ৫৮-৬৬ টাকা। বর্তমানে তা ৬৩-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তখনকার ৫৮-৫৯ টাকা কেজির নাজিরশাইল চাল এখন ৬৪-৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ৫১-৫২ টাকার মাঝারি মানের চালের দাম এখন ৫৭-৬০ টাকা কেজি।

খিলগাঁও কাঁচাবাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ী কালাম রাইস স্টোরের মালিক কালাম ব্যাপারী বলেন, মাস দুয়েক আগেই প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ছিল ৬৮-৭০ টাকা। বর্তমানে তা ৭২-৭৫ টাকায় বিক্রি করছেন। ৭৩-৭৫ টাকার নাজিরশাইল এখন বিক্রি করছেন ৮০ টাকায়। ৫৭-৫৮ টাকার বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ চাল এখন ৬২ টাকায় বিক্রি করছেন।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের চাল ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, সাম্প্রতিক বন্যার সময় ত্রাণ দেওয়ায় মাঝারি মানের চালের দাম বাড়ে। এরপর আর কমেনি। মিলাররা চালের দাম বাড়ানোর চেষ্টায় আছেন। পরিস্থিতি বুঝে তাঁরা দাম বাড়িয়ে দেবেন।

চালের দাম বাড়ার বিষয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের কয়েকটি জেলায় ত্রাণের জন্য চাল কেনা বেড়ে যাওয়ায় মাঝারি মানের চালের চাহিদা অনেক বেড়ে গিয়েছিল।

এ কারণে ওই ধরনের চালের দাম অনেকটাই বেড়েছে। সেই প্রবণতা অনুসরণ করে অন্যান্য চালের দামও বেড়েছে।

নওগাঁ জেলা ধান-চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি নীরদ বরণ সাহা বলেন, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে তাদের পাইকারি বাজারে মাঝারি মানের চালের দাম কেজিপ্রতি ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে অন্যান্য চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আগে মাঝারি মানের প্রতি কেজি চালের দাম ছিল ৫২-৫৪ টাকা। বর্তমানে তা ৫৬-৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নীরদ সাহা বলেন, দেশের কোথাও ধান-চালের সংকট নেই। আগামী আমন মৌসুমের ধান ওঠা পর্যন্ত সংকট হওয়ার কোনো সম্ভাবনাও নেই। আমন মৌসুমের ধানের জন্য বৃষ্টির চাহিদা ছিল, সেটিও পূরণ হয়ে গেছে।

চালের দাম বাড়ার বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বাজারে সরকারের নজরদারির অভাবের কথা বললেন। তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা এখন মনে করছেন, বাজারে সরকারের কিছু করার নেই। এ কারণে তাঁরা ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। কারণ, সরকার পরিবর্তন হলেও সিদ্ধান্ত নেওয়ার কর্তাব্যক্তিরা অনেকে এখনো বহাল আছেন। এ কারণে ব্যবসায়ীরাও কাউকে ভয় পাচ্ছেন না।’

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি গুদামে চালের মজুত ছিল ১৩ লাখ ৭ হাজার ২৫৭ টন। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিদেশ থেকে আদৌ চাল আমদানি করতে হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত