Ajker Patrika

কয়েক লাখ পানিবন্দী মানুষ চরম দুর্ভোগে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ১৯ মে ২০২২, ১৩: ১৫
কয়েক লাখ পানিবন্দী মানুষ চরম দুর্ভোগে

জেলার বিয়ানীবাজার, জৈন্তাপুর ও জকিগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এসব উপজেলায় কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এসব মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

বিয়ানীবাজার: অব্যাহত বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। উপজেলার সব কটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। গতকাল বুধবার সুরমা-কুশিয়ারা নদীতে পানি বেড়েছে। উপজেলার বেশ কয়েকটি নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ১৫০ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া বিয়ানীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় গতকাল বুধবার সকাল থেকে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। বিয়ানীবাজার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহমেদ রাশেদুন নবী জানান, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় এখানকার প্রায় ১৫০ হেক্টর ধান পানিতে তলিয়ে আছে। সুরমা ও কুশিয়ারার একাধিক পয়েন্টে ডাইক ভেঙে হু-হু করে পানি ঢুকছে। ফলে নিম্নাঞ্চলের বহু বাড়ি ও এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।

ইউএনও আশিক নূর বলেন, ‘সুরমা ও কুশিয়ারার নদীর পানি বেড়েছে। উপজেলায় ২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে কোনো দুর্গত মানুষের ওঠার খবর পাইনি। তবে যাঁরা আশ্রয় নেবেন তাঁদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।’

জৈন্তাপুর: জৈন্তাপুর কয়েক দিনের পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। গতকালও কোনো কোনো এলাকায় পানি বেড়েছে। তবে সারী ও বড় নয়াগং নদীর পানি স্বাভাবিক উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল বুধবার ঘুরে দেখা গেছে, দরবস্ত, ফতেপুর, চিকনাগুল, নিজপাট ও জৈন্তাপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের পানি কিছুটা কমেছে। পরে দুপুর ১২টার পর থেকে পুনরায় পানি বাড়া শুরু করে। অপরদিকে বন্যাকবলিত মানুষের খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলায় ২১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ সব আশ্রয়কেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। গবাদিপশু নিয়ে অনেকে রাস্তার পাশে অবস্থান করেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল বশিরুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল আহমদসহ ইউপি চেয়ারম্যানেরা বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।

জকিগঞ্জ: জকিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে জকিগঞ্জ ইউনিয়নের রারাই এবং বীরশ্রী ইউনিয়নের সুপ্রাকান্দি গ্রাম দিয়ে হু হু করে পানি ঢুকছে। টানা বৃষ্টি আর গত এক সপ্তাহ থেকে ভারতের উজান থেমে নেমে আসা ঢলে বারহাল, মানিকপুর, কাজলসার, বিরশ্রী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ডাইক উপচে এবং ভেঙে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। ঘরের বাইরে অনেকে মাচা বানিয়ে রাতযাপন করছেন। চালু করা হয়েছে বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র। কৃষি ও মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। বন্ধ হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ রাস্তাঘাট। মসজিদ, মাদ্রাসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হেক্টর জমির সবজি, ১০ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়েছে। বিভিন্ন পুকুর ও ফিসারির মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। কাঁচা-আধা কাঁচা অনেক ঘরের ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে গেছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট। বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বারহাল ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ বলেন, নোয়াগ্রাম, উত্তর খিলোগ্রাম, চকবারাকুলি, শরীফাবাদ, শাহগলী বাজার ও কচুয়া এলাকায় সুরমা ডাইক ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করেছে, তলিয়ে গেছে বোরো ধান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত