তুহিন কান্তি দাস ও সৌগত বসু, সেন্ট মার্টিন থেকে
গত রোববার যে অবস্থাডা হয়েছিল, তা জীবনে কখনো দেহি নাই। যে ভয়ে-আতঙ্কে ছিলাম বলার মতো নই। যেভাবে বাতাসগুলো ছুটছিল, তা গাছের আগাগুলো দেহেন বুঝতে পারবেন। বাড়িগুলো দেহেন কেমন হয়ে গেছে। দাঁড়ানোর মতো সাহস কারও ছিল না এহেনে।। আমরা তো আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলাম। কী অবস্থা হয়েছিল, এমন আগে দেহি নাই। এর আগে হয়তো আমার আব্বারা দেখছেন।’
ঝড়ে ভেঙে যাওয়া বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে গতকাল সোমবার কথাগুলো বলছিলেন সেন্ট মার্টিন দ্বীপের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা হারিস মোহাম্মদ। ঘূর্ণিঝড় মোখায় পুরো যেন লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে ছোট্ট এই দ্বীপকে। ঝড়ের সময় দ্বীপের বেশির ভাগ বাসিন্দা আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন। ঝড় থামলে ফিরে এসে অনেকে ঘর পেয়েছেন অর্ধেক, আবার কেউ পাননি।
এর আগে ১৯৯১ সালে এমন ঝড় হয়েছিল। রোববার ১৪৭ কিলোমিটার গতির ঝড় এই দ্বীপে ৩০ বছর পর আবার ক্ষতচিহ্ন রেখে গেছে ভালোভাবে। ঘরের শুকনা খাবার নষ্ট হয়েছে বালু আর পানির সঙ্গে মিশে।
সেন্ট মার্টিনে জাহাজ নোঙর করার জেটি থেকে সামনের দিকে এগোলে দেখতে পাওয়া যায় ঝড়ের রেখে যাওয়া আলামত। বাঁশের চট ও বেত দিয়ে বানানো ঘরগুলো মিশে আছে মাটির সঙ্গে। টিনের ঘর ভেঙে পড়েছে এক পাশে। পরিবারের সদস্যরা তড়িঘড়ি করে ঠিক করছেন ঘর, আবার রাত কাটাতে হবে এই ঘরে।সাগর ঘেঁষে থাকা কেয়াবন উজাড় হয়েছে ঝড়ে। দ্বীপের সব গাছ হেলে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোশতাক আহমেদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিছানা, বালিশ রোদে দেওয়া হয়েছে। ঘর মেরামতে ব্যস্ত আছেন বাড়ির সবাই। মোশতাক বলেন, ‘সবকিছু ভেঙে গেছে।
এখন যদি সরকার তাদের কিছু সহায়তা দেয়, তাহলে বাঁচতে পারবে।’দেলপাড়ার বাসিন্দা মো জয়নাল বলেন, ‘জন্মের পর থেকে এমন ভয় পায় নাই। যারা ফোন দিয়েছে, কান্না করে দিছি। সবচেয়ে ভয় ছিল জলোচ্ছ্বাস নিয়ে। সবাই জলোচ্ছ্বাসের ভয় দিয়েছে। কিন্তু এখন ভালো আছি।’
ঢাকার বাসিন্দা আলমগীর হোসেন সেন্ট মার্টিনে রিসোর্ট ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, ‘ঝড় যখন হয়েছে শুধু দেখেছি। কিছুই করার ছিল না। ঝড় শেষে দেখি রিসোর্টের দুইটা চাল বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে।’
সেন্ট মার্টিনের প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার কামাল বলেন, ‘ঝড়ে ঘরবাড়ি সব বাতাসের আগায় আগায় ছিল। সাইক্লোন শেল্টার থেকে আমরা ঝড়ের ভয়াবহতা দেখেছি।’ তিনি আরও বলেন, গরিব মানুষের ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। তাদের কাঠ ও বাঁশের ঘর। সেগুলো সব ভেঙে গেছে। প্রায় ৭০০ পরিবারের ঘরবাড়ি শেষ হয়ে গেছে।
দ্বীপের বেশির ভাগ বাসিন্দা গরিব। পর্যটন মৌসুমে অর্থনীতি একটু চাঙা হয় পর্যটকদের আনাগোনায়। বাকি সময়টা মাছ ধরেই সংসার চালান বেশির ভাগ মানুষ। ঘোষণা অনুযায়ী, ২০ মে থেকে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ হবে। এই বিপদের দিনে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞাটা যদি ১০ দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে মানুষের কিছুটা উপকার হয় বলে জানিয়েছে দ্বীপবাসী।
দ্বীপের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ৭০০ জনের ত্রাণ আনা হয়েছে। বাকি ৩০০ জনের ত্রাণ আজ আনা হবে। ত্রাণের মধ্যে চাল, ডাল, তেল ও শুকনা খাবার রয়েছে। প্রাথমিকভাবে কিছু দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো তাঁর হেফাজতে আছে। মঙ্গলবার (আজ) কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী ও ইউনিয়ন পরিষদ ভাগ হয়ে ত্রাণ বিতরণ করবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, সেন্ট মার্টিনের জন্য ঢাকায় বিশেষ বরাদ্দ চাওয়া হবে। কাউকে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে হবে না। আজ থেকেই পুনর্বাসন শুরু হবে।
আরও পড়ুন:
গত রোববার যে অবস্থাডা হয়েছিল, তা জীবনে কখনো দেহি নাই। যে ভয়ে-আতঙ্কে ছিলাম বলার মতো নই। যেভাবে বাতাসগুলো ছুটছিল, তা গাছের আগাগুলো দেহেন বুঝতে পারবেন। বাড়িগুলো দেহেন কেমন হয়ে গেছে। দাঁড়ানোর মতো সাহস কারও ছিল না এহেনে।। আমরা তো আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলাম। কী অবস্থা হয়েছিল, এমন আগে দেহি নাই। এর আগে হয়তো আমার আব্বারা দেখছেন।’
ঝড়ে ভেঙে যাওয়া বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে গতকাল সোমবার কথাগুলো বলছিলেন সেন্ট মার্টিন দ্বীপের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা হারিস মোহাম্মদ। ঘূর্ণিঝড় মোখায় পুরো যেন লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে ছোট্ট এই দ্বীপকে। ঝড়ের সময় দ্বীপের বেশির ভাগ বাসিন্দা আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন। ঝড় থামলে ফিরে এসে অনেকে ঘর পেয়েছেন অর্ধেক, আবার কেউ পাননি।
এর আগে ১৯৯১ সালে এমন ঝড় হয়েছিল। রোববার ১৪৭ কিলোমিটার গতির ঝড় এই দ্বীপে ৩০ বছর পর আবার ক্ষতচিহ্ন রেখে গেছে ভালোভাবে। ঘরের শুকনা খাবার নষ্ট হয়েছে বালু আর পানির সঙ্গে মিশে।
সেন্ট মার্টিনে জাহাজ নোঙর করার জেটি থেকে সামনের দিকে এগোলে দেখতে পাওয়া যায় ঝড়ের রেখে যাওয়া আলামত। বাঁশের চট ও বেত দিয়ে বানানো ঘরগুলো মিশে আছে মাটির সঙ্গে। টিনের ঘর ভেঙে পড়েছে এক পাশে। পরিবারের সদস্যরা তড়িঘড়ি করে ঠিক করছেন ঘর, আবার রাত কাটাতে হবে এই ঘরে।সাগর ঘেঁষে থাকা কেয়াবন উজাড় হয়েছে ঝড়ে। দ্বীপের সব গাছ হেলে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোশতাক আহমেদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিছানা, বালিশ রোদে দেওয়া হয়েছে। ঘর মেরামতে ব্যস্ত আছেন বাড়ির সবাই। মোশতাক বলেন, ‘সবকিছু ভেঙে গেছে।
এখন যদি সরকার তাদের কিছু সহায়তা দেয়, তাহলে বাঁচতে পারবে।’দেলপাড়ার বাসিন্দা মো জয়নাল বলেন, ‘জন্মের পর থেকে এমন ভয় পায় নাই। যারা ফোন দিয়েছে, কান্না করে দিছি। সবচেয়ে ভয় ছিল জলোচ্ছ্বাস নিয়ে। সবাই জলোচ্ছ্বাসের ভয় দিয়েছে। কিন্তু এখন ভালো আছি।’
ঢাকার বাসিন্দা আলমগীর হোসেন সেন্ট মার্টিনে রিসোর্ট ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, ‘ঝড় যখন হয়েছে শুধু দেখেছি। কিছুই করার ছিল না। ঝড় শেষে দেখি রিসোর্টের দুইটা চাল বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে।’
সেন্ট মার্টিনের প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার কামাল বলেন, ‘ঝড়ে ঘরবাড়ি সব বাতাসের আগায় আগায় ছিল। সাইক্লোন শেল্টার থেকে আমরা ঝড়ের ভয়াবহতা দেখেছি।’ তিনি আরও বলেন, গরিব মানুষের ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। তাদের কাঠ ও বাঁশের ঘর। সেগুলো সব ভেঙে গেছে। প্রায় ৭০০ পরিবারের ঘরবাড়ি শেষ হয়ে গেছে।
দ্বীপের বেশির ভাগ বাসিন্দা গরিব। পর্যটন মৌসুমে অর্থনীতি একটু চাঙা হয় পর্যটকদের আনাগোনায়। বাকি সময়টা মাছ ধরেই সংসার চালান বেশির ভাগ মানুষ। ঘোষণা অনুযায়ী, ২০ মে থেকে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ হবে। এই বিপদের দিনে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞাটা যদি ১০ দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে মানুষের কিছুটা উপকার হয় বলে জানিয়েছে দ্বীপবাসী।
দ্বীপের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ৭০০ জনের ত্রাণ আনা হয়েছে। বাকি ৩০০ জনের ত্রাণ আজ আনা হবে। ত্রাণের মধ্যে চাল, ডাল, তেল ও শুকনা খাবার রয়েছে। প্রাথমিকভাবে কিছু দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো তাঁর হেফাজতে আছে। মঙ্গলবার (আজ) কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী ও ইউনিয়ন পরিষদ ভাগ হয়ে ত্রাণ বিতরণ করবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, সেন্ট মার্টিনের জন্য ঢাকায় বিশেষ বরাদ্দ চাওয়া হবে। কাউকে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে হবে না। আজ থেকেই পুনর্বাসন শুরু হবে।
আরও পড়ুন:
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫