Ajker Patrika

ইলিশের নামে সার্ডিন বিক্রি

ইমতিয়াজ আহমেদ, শিবচর
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২১, ১১: ৩৮
ইলিশের নামে সার্ডিন বিক্রি

রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের অন্যতম নৌপথের বাংলাবাজার ও শিমুলিয়া ঘাটে রয়েছে অসংখ্য হোটেল। এ সব হোটেলে দীর্ঘদিনের 'পুঁজি' হিসেবে রয়েছে 'পদ্মার ইলিশ'। টুকরো টুকরো করে কেটে চমৎকারভাবে সাজিয়ে রাখা হয় দোকানের সামনে। ভোক্তার চাহিদামতো তাৎক্ষণিক ভেজেও দেওয়া হয়। তবে খাওয়ার আগে বোঝার উপায় থাকে না যে ইলিশের নামে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে সার্ডিন।

জানা যায়, ধোঁয়া ওঠা গরম ভাতের সঙ্গে ইলিশ ভাঁজা আর ইলিশের তেল ও শুকনা মরিচের স্বাদের সঙ্গে এই নৌপথের যাত্রীদের দীর্ঘদিনের পরিচিতি রয়েছে। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে আসাধু ব্যবসায়ীদের ফাঁদে পড়ছেন যাত্রীরা। ইলিশের নামে সার্ডিন মাছ খাওয়াচ্ছেন তাঁরা। তবে দাম রাখছেন ইলিশের মতোই। দামাদামি করে কিছুটা কমানো গেলেও ইলিশ মনে করেই খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। তবে মুখে দেওয়ার পর ইলিশের স্বাদ না পেয়ে ধরতে পাড়ছেন বিষয়টি। আবার অনেকে চুপচাপ খেয়ে চলে যাচ্ছেন।

এদিকে হোটেল ব্যবসায়ীদের দাবি, তাঁরা ইলিশও বিক্রি করেন। যাঁরা প্রকৃত ইলিশ খেতে চান, তাঁদের ইলিশ মাছই দেওয়া হয়। ইলিশের চেয়ে সার্ডিন মাছের দাম একটু কম। ইদানিং লোকজন এই মাছ চিনতে পারছেন। তাই ঠকানোর প্রশ্নই আসে না।

হোটেলে খাওয়ার সময় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ করলে তাঁরা জানান, ঘাটের হোটেলে সাজিয়ে রাখা মাছগুলো দেখতে ইলিশের মতো হলেও তা ইলিশ নয়। মুখে দেওয়ার পর বিষয়টি বোঝা যায়। এর আগে সহজে চেনা যায় না। ইলিশ ভেবে হরহামেশা এই মাছ খাচ্ছে মানুষ। দামের ক্ষেত্রে ঠকানো হচ্ছে। স্থানীয়রা এসব মাছকে চন্দনা বলে থাকে। যাঁরা চিনতে পারেন না, তাঁদের অনেকেই অসাধু হোটেল মালিক দ্বারা প্রতারিত হন। পিচ করে কাটা মাছ দেখে চেনা যায় না। খাওয়ার সময় ইলিশের কোনো স্বাদ পাওয়া যায় না।

ঘাটের হোটেল মালিকদের সঙ্গে আলপ করে জানা গেছে, বর্তমানে হোটেলগুলোতে ‘চাঁটগাঁর ইলিশ’ নামে দামে সস্তা ইলিশ সদৃশ সার্ডিন মাছ বেশি পাওয়া যায়। তবে ইলিশের মতো ততটা স্বাদ নয় এই মাছ। ৭০-৮০ টাকা করে পিচ বিক্রি হয়।

মো. হৃদয় নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘ঢাকা-যাওয়া আসার পথে ঘাটে ভাত খেলে ইলিশ মাছ দিয়েই খাওয়া হয়। ইলিশের মতো দেখতে মাছগুলো চিনতে কষ্ট হয়। খাওয়ার সময় বোঝা যায় যে এগুলো ইলিশ নয়। তবে ইলিশ মাছও আছে।’

ঘাটের এক হোটেল মালিক বলেন, ‘ভোর থেকে রাত পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে। হোটেলে ভাত ও খিচুরির সঙ্গে ইলিশ মাছ বেশি বিক্রি হয়। হোটেলে আস্ত ইলিশও রাখা হয়। একাধিক ব্যক্তি একত্রে এলে তাঁরা কিনতে পারেন। ক্রেতাদের সামনেই মাছ কেটে ভেজে দেওয়া হয়। কয়েক যুগ ধরে এভাবেই চলছে ঘাট এলাকার হোটেল ব্যবসা। তবে ইদানিং নকল ইলিশের কারণে সুনাম নষ্ট হচ্ছে।'

বিআইডব্লিউটিএ’র বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক পরিদর্শক আক্তার হোসেন বলেন, ‘লঞ্চ ঘাটের হোটেলে হোটেলে ইলিশ বিক্রি করতে দেখা যায়। এর মধ্যে নকল ইলিশের ছড়াছড়ি বলে অভিযোগ রয়েছে। লঞ্চযাত্রীরা বেশি দামে ইলিশ ভেবে সার্ডিন খেয়ে প্রতারিত হচ্ছেন।'

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত