Ajker Patrika

কালীতলায় আমদানি পণ্যের জট

বেনাপোল প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৫৮
কালীতলায় আমদানি পণ্যের জট

নানান প্রচেষ্টা সত্ত্বেও গত এক যুগে ভারতের কালীতলা ট্রাক পার্কিং চক্রের কবল থেকে মুক্তি মেলেনি বাংলাদেশি আমদানিকারকদের।

বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের জন্য কলকাতার বনগাঁ পৌরসভা নিয়ন্ত্রণাধীন সাতভাই কালীতলা মিলনপল্লি ট্রাক পার্কিংয়ে বর্তমানে প্রায় ৮ হাজার ট্রাক আটকে আছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

১০ কিলোমিটার দূরত্বে কালীতলা পার্কিং থেকে একটি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে পৌঁছাতে আজও সময় লাগে অন্তত এক মাস। এতে আমদানি খরচ যেমন বাড়ছে, তেমনি পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে।

নতুন বছরে বাণিজ্য সম্প্রসারণে এ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।

গত সোমবার বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় কালীতলা পার্কিংয়ে প্রায় ৮ হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় এক যুগ ধরে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা কালীতলা ট্রাক পার্কিংয়ে অসাধু চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। ফলে আমদানিতে একদিকে খরচ বাড়ছে, অন্যদিকে পণ্যের গুণাগুণ নষ্ট হচ্ছে।

বেনাপোল বন্দর থেকে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক শহর হিসেবে পরিচিত কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় শুরু থেকে এই পথে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। এ পথে যে পণ্য আমদানি হয় তার বড় একটি অংশ রয়েছে শিল্প কলকারখানার কাঁচামাল, তৈরি পোশাক, যন্ত্রাংশ ও শিশুখাদ্য।

তবে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দিন দিন আমদানি চাহিদা বাড়লেও বাণিজ্য সম্প্রসারণে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারত অংশে বনগাঁ পৌরসভার নিয়ন্ত্রণাধীন কালিতলা ট্রাক পার্কিং।

বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাক পণ্য নিয়ে সরাসরি বন্দরে প্রবেশ করতে পারলেও ভারতীয় ট্রাক চালকদের থাকতে হয় কালীতলা পার্কিংয়ে। সেখান থেকে সিরিয়াল করে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করতে সময় লাগে কমপক্ষে এক মাস।

পার্কিংয়ে সিরিয়ালের নামে সিন্ডিকেট সৃষ্টিতে দীর্ঘদিন ট্রাক আটকে থাকায় যেমন আমদানি খরচ বাড়ে তেমনি পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হয়। গত কয়েক বছর ধরে সিন্ডিকেট মুক্ত হতে দফায় দফায় বৈঠক হলেও সুরাহ হয়নি।

ভারতীয় ট্রাকচালক অরিন্দম বলেন, কালীতলা পার্কিংয়ে সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করতে কমপক্ষে এক মাস সময় লেগে যায়। এতে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যবসায়ীরা তেমনি দুর্ভোগ চালকদের।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ‘প্রায় এক যুগ ধরে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা কালিতলা ট্রাক পার্কিংয়ে অসাধু চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় কালীতলা পার্কিংয়ে প্রায় ৮ হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এত লোকসান বহন করে ব্যবসায়ীরা লাভ করবেন কীভাবে। আমদানি কমায় দিন দিন সরকারের রাজস্ব ও কমে আসছে।’

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা কালীতলার চক্রের হাত থেকে মুক্ত হলে আমদানি খরচ কমবে। সিন্ডিকেট থেকে মুক্ত হতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করা হয়েছে। তবে সুফল মেলেনি। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ দরকার।’

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল বলেন, ‘বর্তমানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে ট্রাক প্রবেশের চাহিদা রয়েছে ৭০০ ট্রাক। তবে দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ এর বেশি ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করতে পারে না। কালীতলা পার্কিংয়ে পণ্যজট কমাতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করা হয়েছে। তাঁরা চলমান সমস্যা সমাধানে আশ্বস্ত করেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

সিঙ্গাপুরে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ, আবেদন ফি মাত্র ৭ হাজার টাকা

যুবককে আটক করা নিয়ে বিজিবি ও এলাকাবাসীর পাল্টাপাল্টি দাবি

বরিশাল-৩ আসনে বিএনপির দুই হেভিওয়েট নেতার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

বরখাস্ত সৈনিককে অস্ত্র দিয়েছেন বিএনপি নেতা, অডিও নিয়ে তোলপাড়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত