Ajker Patrika

আমনে পোকার আক্রমণ কৃষকেরা দুশ্চিন্তায়

মিজানুর রহমান নয়ন, কুমারখালী (কুষ্টিয়া)
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২২, ১৫: ৪৫
আমনে পোকার আক্রমণ কৃষকেরা দুশ্চিন্তায়

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে রোপা আমনে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। সার ও সেচের জন্য জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর এবার পোকার আক্রমণের কারণে কৃষকেরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

উপজেলার কৃষকেরা বলছেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর আমন ধান চাষে ৫-৭ হাজার টাকা খরচ বেশি হয়েছে। এবারও ধানগাছ ভালো হয়েছে। এখন গাছে শিষ বের হচ্ছে। তবে শিষে মাজরা, কারেন্ট, গান্ধিসহ নানান পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। কীটনাশক দিয়েও আক্রমণ থামানো যাচ্ছে না। পোকার কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। আক্রমণ থামানো না গেলে লোকসান গুনতে হবে।’

গতকাল শনিবার সকালে উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামের নীলের মাঠের ধানখেতে সরেজমিন দেখা গেছে, ধানগাছে শিষ বের হওয়া শুরু হয়েছে। ধানগাছে বিভিন্ন পোকার আক্রমণ লেগেছে। মাজরা পোকায় কাটা শিষগুলো কৃষকেরা ছিঁড়ে ফেলছেন। পোকার আক্রমণ রোধ করতে মেশিন দিয়ে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন তাঁরা।

এ সময় কথা হয় কৃষক মো. মিলন হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এ বছর তিন বিঘা জমিতে ধানের চাষ করেছি। সার ও ওষুধের দাম বেশি। প্রতি বিঘায় প্রায় ১৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন ধানে মাজরা পোকা লেগেছে। শিষগুলো কেটে দিচ্ছে। ওষুধে কোনো কাজ হচ্ছে না। উপায়ান্তর না পেয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।’

এ বিষয়ে যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল গনি বিশ্বাস বলেন, ‘দ্বিগুণ খরচের মধ্যেও সাড়ে তিন বিঘা জমিতেধানের চাষ করেছি। ধানে পোকা আক্রমণ করেছে। স্থানীয় ডিলারদের সঙ্গে পরামর্শ করে স্প্রে করছি। কিন্তু পোকার আক্রমণ কমছে না।

আক্রমণ ঠেকাতে না পারলে অনেক লোকসান হবে।’নন্দনালপুর ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের কৃষক আবু মোতালেব বলেন, ‘সার-ওষুধের দাম বেশি। চাষাবাদে গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ খরচ বেড়েছে। তুলনামূলকভাবে লাভ হচ্ছে না। খুব চিন্তায় আছি।’

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ হেক্টর বেশি জমি। গত বছর প্রতি বিঘা জমিতে আমন চাষে খরচ হয়েছিল প্রায় ১০ হাজার টাকা। এ বছর তা বেড়ে খরচ হয়েছে ১৬-১৭ হাজার টাকা। বিঘাপ্রতি ১৫-২০ মণ ধান উৎপাদিত হয়। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার মেট্রিক টন।

বাগুলাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য তারেক আজিজ টিক্কা বলেন, ‘পাঁচ বিঘা জমিতে ধানের চাষ করেছি। গতবারের চেয়ে এবার খরচ অনেক বেশি হয়েছে। খরচ তোলাই মুশকিল হবে।’

যদুবয়রা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘কৃষক বাঁচলে বাঁচবে দেশ। কৃষকের ফসল উৎপাদনে এবার খরচ অনেক বেশি হচ্ছে। আমার ইউনিয়নে আমন ধানে বিভিন্ন পোকামাকড় লাগার খবর পেয়েছি। কৃষি কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো হয়েছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস বলেন, সার, কীটনাশক ও তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে রোপা আমন ধান চাষে কৃষকের খরচ বেড়েছে। পোকার আক্রমণ দমন করার উপায় নিয়ে কাল (রোববার) সকালে ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত