Ajker Patrika

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণের প্রত্যয়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ৫৭
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণের প্রত্যয়

সারা দেশের মতো খুলনায়ও মহান বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্‌যাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে নগরী ছাড়াও পাইকগাছা, কয়রা, বটিয়াঘাটা ও রূপসাসহ সব উপজেলায় স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ, শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়েও নানা আয়োজনে পালিত হয় দিবসটি।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করা এবং তা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয়ে দিবসটি পালন করা হয়। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় এদিন স্মরণ করা হয় মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া সূর্যসন্তানদের। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

খুলনা: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে খুলনায় নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করা হয়েছে মহান বিজয় দিবস। গতকাল সূর্যোদয়ের সঙ্গে গল্লামারী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় প্রশাসন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং তাঁদের অঙ্গ সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।

এ সময় খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আগামী প্রজন্ম দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।’ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সিটি মেয়র মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনার আলোকে নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমিক ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে এবং আগামী প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কেসিসি’র ক্রীড়া ও সংস্কৃতি স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর এস এম মোজাফফর রশিদী রেজা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মেয়র প্যানেলের সদস্য মো: আমিনুল ইসলাম মুন্না, মো: আলী আকবর টিপু ও মেমোরি সুফিয়ার রহমান শুনু, কাউন্সিলর শেখ আব্দুর রাজ্জাক, মো: সাইফুল ইসলাম, শেখ মোহাম্মদ আলী, শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স, মো: ডালিম হাওলাদার, এমডি মাহফুজুর রহমান লিটন, কাজী তালাত হোসেন কাউট, মো: মনিরুজ্জামান, ইমাম হাসান চৌধুরী ময়না, মো: গোলাম মাওলা শানু, ফকির মো: সাইফুল ইসলাম, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর সাহিদা বেগম, কনিকা সাহা, মাজেদা খাতুন ও রেকসনা কালাম লিলি প্রমুখ।

স্বাগত বক্তৃতা করেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আজমুল হক। অন্যান্যের মধ্যে প্রধান প্রকৌশলী মো: এজাজ মোর্শেদ চৌধুরী, প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবির উল জব্বার, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নাজিবুল আলম, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা এসকেএম তাছাদুজ্জামানসহ কেসিসি’র সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তীর মহেন্দ্র ক্ষণ স্মরণীয় করতে প্রধানমন্ত্রী শপথ বাক্য পাঠ করান বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা থেকে প্রধানমন্ত্রীর শপথ বাক্য একযোগে প্রচারিত হয়েছে। খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে বীর মুক্তিযোদ্ধা, পেশাজীবী সংগঠন, নিয়মিত বাহিনী ও শিক্ষার্থীরা এ শপথ বাক্য পাঠ করেন। এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে জেলা স্টেডিয়ামে ছিল সাজ সাজ রব। জাতীয় পতাকার অনুকরণে অনুষ্ঠানের ব্যাকস্ক্রীণ এবং দর্শক গ্যালারিতে জাতীয় পতাকার রঙের শামিয়ানা শোভা পায়। বর্ণাঢ্য এ আয়োজনে ছিল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা।

পাইকগাছা: পাইকগাছায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মহান বিজয় দিবসে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও শহীদ স্মৃতিসৌধে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা করা হয়।

এরপর বীর শহীদের প্রতি ১ মিনিট নীরবতা পালন ও শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, পাইকগাছা প্রেসক্লাব ও আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা। সাড়ে ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু।

কয়রা: কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ এসএম শফিকুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘ ৯ মাস ব্যাপী যুদ্ধ করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় সুনিশ্চিত করেছিলেন। যে কারণে বিজয় দিবসের গুরুত্ব সমুন্নত রাখতে হবে। তিনি গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস ও বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্‌যাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ হারুন আর রশিদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. রিয়াসাদ আলীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মোস্তফা শফিকুল ইসলাম, মো. হুমায়ুন কবির, সহ সভাপতি সদর উদ্দিন আহমেদ, শেখ মনিরুজ্জামান মনু, যুগ্ম সম্পাদক জিএম নজরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ জিয়াউর রহমান ঝন্টু, নির্বাহী সদস্য মো. শরিফুল আলম, সদস্য শিক্ষক আব্দুল খালেক, ইমতিয়াজ উদ্দিন, মো. আনিসুজ্জামান, মো. সাইদুল ইসলাম, কামাল হোসেন, নিতিশ কুমার সানা, শিক্ষক মিহির কান্তি মন্ডল, যুবলীগ নেতা সম আজগর আলী প্রমুখ।

বটিয়াঘাটা: ব্যাপক উৎসব উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে বটিয়াঘাটায় পালিত হলো মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান। গতকাল সকালে এ উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিজয় দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সদস্য হুইপ পঞ্চানন বিশ্বাস। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল আলম খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মমিনুর রহমানসহ আরও অনেকে।

খুবি: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য অদম্য বাংলায় শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সম্মুখে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।

এরপর উপাচার্যের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা শোভাযাত্রাসহ ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য অদম্য বাংলা চত্বরে পৌঁছান। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে উপাচার্য সর্বপ্রথম মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য অদম্য বাংলায় শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাত হোসনে আরা, বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক, প্রভোস্ট, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

এপিএসের বেতন ১ বছরে বেড়েছে ১৮ বছরের সমান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

পাবনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে এএসআই উধাও, থানায় শ্বশুরের জিডি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত