Ajker Patrika

বছর শেষ না হতেই ডেঙ্গু রোগী অর্ধলাখ ছাড়াল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বছর শেষ না হতেই ডেঙ্গু রোগী অর্ধলাখ ছাড়াল

চলতি বছরের শুরুতেই প্রকোপ দেখা দেয় এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুর। জুলাই পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকলেও আগস্টের পর থেকে পরিস্থিতি গুরুতর হতে থাকে। প্রথম আট মাসে যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ছয় হাজারের সামান্য বেশি, সেখানে বছর শেষ না হতেই অর্ধলক্ষ ছাড়িয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে গতকাল বুধবার সকাল আটটা পর্যন্ত) নতুন করে ৭৬৭ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতেই ৪৬৪ জন। সব মিলিয়ে এ বছর ডেঙ্গুর শিকার হয়েছে ৫০ হাজার ৭৫৯ জন।

আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই সুস্থ হয়ে ফিরলেও এখন পর্যন্ত মারা গেছে ২১৬ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

অন্যান্য বছর জুলাই-আগস্টে আক্রান্তের পাশাপাশি প্রাণহানি বেশি হলেও এবার তার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। ওই দুই মাসে যেখানে ২০ জন মারা গেছে, সেখানে সেপ্টেম্বরে ৩৪ জন, অক্টোবরে ৮৬ জন এবং চলতি নভেম্বরের ১৬ দিনেই মারা গেছে ৭৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে যেসব রোগী মারা যাচ্ছে, তাদের অধিকাংশই একাধিকবার আক্রান্ত হওয়া। এসব রোগীকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে আনা না গেলে দ্রুত সংকটাপন্ন অবস্থায় চলে যায়। সবচেয়ে বড় সমস্যা আমাদের মধ্যে সচেতনতার এখনো ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। এখনো অধিকাংশ বাসাবাড়ির ছাদে পানি জমা। তবে স্থানীয় সরকারের উচিত মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া।

মূলত দেশে প্রতিবছরই ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে নানা ব্যবস্থা নিতেও দেখা যায়। তবে প্রাণহানি থামানো যায়নি কখনো। ২০১৮ সাল পর্যন্ত সেটি শতকের নিচে থাকলেও পরের বছর সেটি অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ১৭৯ জনে ওঠে।

অতিমারী করোনা সামাল দিতে গিয়ে ২০২০ সালে এডিস মশাবাহিত এ ভাইরাসের প্রতি তেমন গুরুত্ব ছিল না। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে আবারও সামনে আসে ভাইরাসটি। ২০২১ সালে ১০৫ জনের প্রাণ কাড়ে ডেঙ্গু। এ বছর অতীতের সব ইতিহাস ভেঙে ২০০ ছাড়াল।

অন্য দিকে, ২০১৯ সালের রেকর্ড লাখের বেশি আক্রান্তের পর চলতি বছর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অর্ধলক্ষ ছাড়াল।

জ্বর, শরীর ব্যথা, মাথা ব্যথা, চোখে বিশেষত পেছনের দিকে ব্যথা, মাংসপেশি, হাড় এবং অস্থিসন্ধিতে ব্যথা ইত্যাদি হলো ডেঙ্গুর লক্ষণ। তবে জ্বর, মাথা ব্যথা এবং শরীরে ছোপ ছোপ দাগ—এই তিন উপসর্গ ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ। ৯৯ থেকে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠতে পারে। জ্বর টানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেওয়ার পর আবারও আসতে পারে।

সাধারণত ৩-১৪ দিনের মধ্যেই লক্ষণ প্রকাশ পায়। কেউ দ্বিতীয়বার ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হলে লক্ষণসমূহ ভিন্ন রকম হয় এবং তা ৫০০ গুণ বেশি ভয়াবহ ও জটিল আকার ধারণ করে। এটি ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে রূপ নিতে পারে, যা ক্ষেত্রবিশেষে প্রাণঘাতীও হতে পারে। শিশুদের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা জরুরি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত