Ajker Patrika

খড়সংকট, প্রতি কেজি ২৫ টাকা

মো. জাকিরুল ইসলাম, হালুয়াঘাট
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ২৮
খড়সংকট, প্রতি কেজি ২৫ টাকা

হালুয়াঘাটে গরুর অন্যতম খাদ্য খড়ের সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খামারিরা। গ্রামে কিংবা উপজেলাকেন্দ্রিক বাজারে খড় বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। প্রতি কেজির দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা। এভাবে খড় কিনতে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা খরচ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন খামার মালিকেরা। এ বছর টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চরণভূমি। সেই সঙ্গে বোরো ধানের খড় শুকাতে না পারায় খড় বেশি পরিমাণে পচে যাওয়ায় খড়ের এই সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় গবাদিপশুর খামার রয়েছে ১১৪টি। এ সব খামারে গবাদিপশুর সংখ্যা এক লাখ ৪৪ হাজার। এ ছাড়া পারিবারিকভাবে অনেকেই নিজ বাড়িতে পালন করছেন গবাদিপশু। এসব পশুকে চার মাস বোরো ধানের খড় ও আট মাস আমন ধানের খড় খাওয়ানো হয়। এবার বোরোর মৌসুমের শুরু থেকে বৃষ্টি হওয়ায় বোরো ধানের খড় কৃষকেরা শুকাতে পারেননি। ফলে পচে গেছে বিপুল পরিমাণ খড়। এতে উপজেলায় খড়ের সংকট দেখা দিয়েছে।

ধারা বাজারে খড় কিনতে আসা গরুর খামারি নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘এবার বোরোর খড় শুকানোর সুযোগ পাইনি। বৃষ্টির পানিতে সব খড় নষ্ট হয়ে গেছে। যেটুকু সংগ্রহ করতে পেরেছিলাম তাও শেষ। আমন ধান ঘরে না ওঠা পর্যন্ত খড় কেনা ছাড়া উপায় নেই। গরু নিয়ে খুব বিপদে আছি। প্রতিদিন বাজার থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে খড় কিনতে হচ্ছে।’

এদিকে গেল বোরা মৌসুমের শেষ দিকে আকস্মিক বন্যার কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অনেক জায়গায় গো-খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলার ধুরাইল, ধারা, নাগলা, শাকুয়াই, বিলডোরা ও হালুয়াঘাট সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, অস্থায়ী খড়ের বাজার বসানো হয়েছে। এসব বাজারে প্রতি কেজি আমন ধানের খড় ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া গ্রামে কৃষকদের মুজুদকৃত খড়ও বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে।

উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের তথ্যমতে, এ বছর উপজেলায় মোট ২৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় আগাম ধান কাটা শুরু হলেও নভেম্বরের শেষের দিকে পুরোপুরি ধান কাটা শুরু হবে। ফলে কৃষকদের নতুন খড়ের জন্য এখনো প্রায় দেড় মাস অপেক্ষা করতে হবে।

ধুরাইল ইউনিয়নের গোরকপুর গ্রামে খড় কিনতে আসা খামারি সাব্বির মাহমুদ বলেন, ‘কিছু জমি নিজে চাষ করছিলাম। সেই খড় খাওয়ানো শেষ হয়ে গেছে। এখন প্রতিদিন বাজার থাকি ২৫ টাকা কেজি দরে, না হয় এলাকায় এলাকায় গিয়ে মাচা কিনে আনতে অয়।’

খড় বিক্রেতা আ. হাকিম বলেন, ‘৪০ শতাংশ জমি বোরো আবাদ করছিলাম। আইজ সেই জমির থেকে পাওয়া খড় ১২ হাজার ট্যাহায় বেঁচলাম। বৃষ্টিতে নষ্ট না অইলে ২০ হাজার ট্যাহা বেঁচুন যাইতো।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শহিদুল আলম বলেন, ‘নিম্নাঞ্চলের অনেক কৃষক এবার আকস্মিক বন্যার কারণে বোরোর খড় শুকাতে পারেননি। সংরক্ষণ করা খড়ও শেষ। এ কারণে কিছু কিছু জায়গায় খড়ের সংকট দেখা দিতে পারে। তবে আমরা কৃষকদের খড়ের বিকল্প হিসেবে কচুরিপানা ও উন্নত জাতের ঘাস খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত