Ajker Patrika

একমাত্র পা-টিও ভেঙে পড়ালেখা বন্ধের পথে

মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি
একমাত্র পা-টিও ভেঙে পড়ালেখা বন্ধের পথে

চার হাত-পায়ের তিনটিই পুরোপুরি অকেজো। একটি পা দিয়ে কিছুটা লিখতে পারলেও সেই পা-টিও এখন ভাঙা। তাই শিক্ষাজীবন টানাপড়েনে স্কুলগামী কিশোরীর। বলছিলাম নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার সিদ্দিকার কথা। ওই স্কুলছাত্রী হলো মনোহরদী উপজেলার নারান্দী আলাউদ্দীন নূরানী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী  সিদ্দীকা।

জন্ম থেকেই চার হাত-পায়ের সবগুলোই শুকনো ও অপূর্ণ সিদ্দিকার। এর মধ্যে একমাত্র ডান পা-টিই কিছুটা কাজের ছিল। সেই পায়ের ওপর নির্ভর করেই লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিল সে।

বাবা কামরুজ্জামান হুইলচেয়ার ঠেলে বিদ্যালয়ে আনা-নেওয়া করতেন প্রতিদিন। শ্রেণিকক্ষের মেঝেতে মাদুর বিছিয়ে ক্লাসে অংশ নিত সে। পায়ে লিখে পড়াশোনা করত সিদ্দিকা। লেখাপড়ার প্রতি অদম্য আগ্রহ থেকেই এই কষ্ট স্বীকার সিদ্দিকার। বাবাও হাসিমুখে সয়ে যাচ্ছিলেন সন্তানকে বিদ্যালয়ে আনা-নেওয়ার কষ্ট। তবে বর্তমানে সিদ্দিকার সেই পা-টিও ভাঙা। এ যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। ফলে ঘরবন্দী সিদ্দিকা। অর্থাভাবে তার চিকিৎসাও ব্যাহত হচ্ছে। এখন মেয়ের কী হবে, সেই ভেবে দিশেহারা বাবা কামরুজ্জামান।

সিদ্দিকা জানায়, সম্প্রতি ক্লাসের এক সহপাঠী দুর্ঘটনাক্রমে তার সেই পায়ের ওপর পড়লে হাড়ে চিড় ধরে যায়। সেই থেকে লেখাপড়া বন্ধ তার। পা ভালো থাকতে বাড়িতে বসেই লেখাপড়া চলত সিদ্দিকার; কিন্তু উপায় না থাকায় এখন কেবল শ্রেণিকক্ষের স্মৃতিগুলো রোমন্থন করতে হচ্ছে তাকে।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বাবা কামরুজ্জামান জানান, সিদ্দিকার পায়ের পাতার হাড় ফেটে গেছে। স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে এখন ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নিতে হবে তাকে। তবে এর ব্যয়ভার বহন করা বেশ কষ্টসাধ্য তাঁর পক্ষে। এ জন্য মেয়ের চিকিৎসায় সমাজের সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে সিদ্দিকার পরিবার।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক জানিয়েছেন, ঠিকমতো চিকিৎসা না করালে সিদ্দিকার একমাত্র পা-টিও অকেজো হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি থেমে যেতে পারে তার স্বপ্নের শিক্ষাজীবন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত