Ajker Patrika

গোপালগঞ্জে দখল-দূষণে মৃতপ্রায় খাল, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

শেখ জাবেরুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ
গোপালগঞ্জে দখল-দূষণে মৃতপ্রায় খাল, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

দখল ও দূষণে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে গোপালগঞ্জ পৌরসভার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া আতিয়ার খাল। চার কিলোমিটারের খালটির আশপাশে রয়েছে শতবিঘা ফসলি জমি। কিন্তু দখল, রাস্তা আর বাঁধ নির্মাণের কারণে কয়েক বছর ধরে খালের পানিপ্রবাহ বন্ধ রয়েছে। এতে কয়েক হাজার কৃষক ফসল উৎপাদনে ভোগান্তিতে পড়ছেন। শুধু কৃষকেরা নন, সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধ হয়ে পড়ছে খালের আশপাশের এলাকা। ফলে খালপাড়ের বাসিন্দারাও দুর্ভোগে পড়েন।

জানা গেছে, আতিয়ার খালটি গোপালগঞ্জ পৌরসভার মিয়াবাড়ী এলাকা থেকে শুরু হয়। এটি জেলা কারাগার, ডায়াবেটিক হাসপাতাল, লালমিয়া সিটি কলেজের পাশ দিয়ে, শহরের পাশের লতিফপুর ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে মধুমতী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। খালটি ১৯৮২ সালে তৎকালীন লতিফপুর ইউনিয়নের পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের উদ্যোগে পুনঃখনন করা হয়। একসময় এ খাল দিয়ে বড় বড় নৌকা চলাচল করত। পুনঃখননের পরও এলাকাবাসী নৌকা নিয়ে এই খাল দিয়ে বাজারে ও বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে খালটি খননের উদ্যোগ না নেওয়ায় এবং দখলদারদের থাবায় এটি এখন মৃতপ্রায়। প্রভাবশালীরা খালের দুই পাড়ের জায়গা দখল করে বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন, ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। ফলে পানি পচে দুর্গন্ধ আর মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। খালের অধিকাংশ স্থান শুকিয়ে গেছে।

লতিফপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মধুসূদন পোদ্দার বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে এ খাল দিয়ে নৌকা চালিয়ে বাজারে গেছি। এখন দখল করে বাড়িঘর করে ময়লা ফেলতে ফেলতে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এ খাল দিয়ে আমাদের কোনো উপকার হয় না। জমির ফসল তুলতে পারি না।’

খালপাড়ের বাসিন্দা এনামুল খান বলেন, ‘ছোটবেলায় এই খাল দিয়ে নৌকা চালিয়েছি। সাঁতার কেটেছি। সেই খালের মধ্যে এখন বিল্ডিং হয়ে গেছে। এখন মানুষ খাল ব্যবহার করতে পারে না। কৃষিকাজ করতে পারে না। খাল না থাকলে মানুষ কীভাবে বাঁচবে।’

খালের পাড়ের বাসিন্দা এবাদত হোসেন বলেন, ‘বৃষ্টি নামলেই এলাকা তলিয়ে যায়। খালটা যদি সরকার খনন করে দিত, তা হলে আমরা জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পেতাম। আমাদের মহল্লায় ২০০ পরিবার আছে। সবাই খুব কষ্টে আছি। যাতায়াতে চরম অসুবিধা হয়।’

লতিফপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা চঞ্চল মোল্লা বলেন, ‘আমাদের এই খাল দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী লোকজনের দখলে। বর্তমানে যে পরিস্থিতি, খালের অস্তিত্ব থাকবে কি না তা নিয়েই শঙ্কায় আছি। বিভিন্ন স্থানে বদ্ধ পানিতে মশা-মাছির জন্ম হচ্ছে। প্রশাসন যেন দ্রুত খালটি খননের ব্যবস্থা করে, সে দাবি জানাচ্ছি।’

গোপালগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রেফাত জামিল বলেন, গোপালগঞ্জ শহরের মধুমতী নদীসংলগ্ন আতিয়ার খালটি পরিদর্শন করেছি। খালটি বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে রাস্তা করা হয়েছে। ডায়াবেটিক হাসপাতাল, জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন স্থানে কালভার্টসহ রাস্তা করায় খালের পানির প্রবাহ কমে গেছে। আমরা একটি তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছি, বরাদ্দ পেলে খালটি পুনঃখনন করে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত