Ajker Patrika

খাজনার চেয়ে বাজনাই বেশি

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ৪৭
Thumbnail image

এক প্যাকেট লেস চিপস, আধা কেজি পপকর্ন আর কোকা-কোলার কয়েকটি ছোট ক্যান আমদানিকারকে ব্যক্তিগত উপহার হিসেবেই পণ্যের কনটেইনারে ভরেই পাঠিয়েছিলেন জাপানি রপ্তানিকারক। শুল্ক কর্তৃপক্ষ হিসাব করে দেখেছে, ১৫ কেজি ওজনের এই সব উপহারসামগ্রীর দাম ২ হাজার ২০০ টাকা। ঘোষণাবহির্ভূতভাবে পণ্যগুলো কনটেইনারে পাওয়ার কারণে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয় আট লাখ টাকা।

মজার ব্যাপার হলো, এই উপহারসামগ্রীর কারণে শুল্ক কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখতে হয়েছে ২২টি। এক মাসের বেশি সময় ওপর–নিচের দপ্তরে পাঠিয়ে এ-সংক্রান্ত নথিতে সই করেন ৫৭ জন কর্মকর্তা। ঘোষণার অতিরিক্ত পণ্য রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে নিয়োগ দেওয়া হয় বন্দর ও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ছয় কর্মকর্তাকে। পণ্য বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় পাহারাদারের (স্কট অফিসার) মনোনীত বন্দরের তিন নিরাপত্তাকর্মীকে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম ও রাজর্শ্বী চাকমাকে। এই সব আয়োজন সম্পন্ন করে পণ্য খালাসে আমদানিকারকের সময় লাগে ৪৩ দিন, যা সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে করা সম্ভব ছিল।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস সূত্র জানায়, ঢাকার পুরানা পল্টনের প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুভাসা মেরিন জাপান থেকে প্রায় ২৭ টন ওজনের ডিজেল, জেনারেটর, ওয়েল্ডিং ওয়্যারসহ নানা ওয়েল্ডিং সামগ্রী আমদানির ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটে। এই সব সামগ্রীর সঙ্গে একই কনটেইনারে রপ্তানিকারক চিপস, পপকর্নসহ সামান্য কিছু খাবার পাঠায়, যা শুল্ক কর্তৃপক্ষের বিড়ম্বনায় ফেলে আমদানিকারককে।

আমদানিকারক একেএম সুলতান আহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘আমার এক্সপোর্টার আমাকে ভালোবেসে আধা কেজি পপকর্ন, দেড় কেজি লেস পটেটো চিপস, ছয় কেজি ময়দা এবং সাত কেজি ওজনের কোকাকোলা পাঠিয়েছে খাওয়ার জন্য। এতে চট্টগ্রাম কাস্টমস, বন্দরের ও শিপিং এজেন্ট এর বিলম্ব মাশুলসহ প্রায় আট লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ভাবে হয়রানির শিকার হলে আমরা ব্যবসা করব কীভাবে।’

জানা গেছে, কাস্টমসের এই সব নথিতে স্বাক্ষরকারীদের একজন উপকমিশনার জাকির হোসেন। যোগাযোগ করা হলে তিনি এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য দিতে অপারগতা জানান। চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল অফিসার (প্র.) সুরাইয়া ইসলাম জুঁই স্বীকার করেন, ঘোষণা বহির্ভূত পণ্যের কারণে আমদানিকারক কিছুটা হয়রানির শিকার হয়েছেন।

সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন বলেন, এ পণ্যটি বিল অব এন্ট্রি দাখিল করার পর থেকে কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা কাগজপত্র যাচাইয়ের জন্য ব্যাংকসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেয়। এ কারণে এই পণ্যের চালানটি খালাস করতে অনেক সময় লাগে। পাশাপাশি আমদানিকারককে শিপিং এবং বন্দর চার্জ বাবদ অতিরিক্ত মাশুল গুনতে হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত