জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
পুঁজিহীন মেধাবীদের ঋণের পরিবর্তে তহবিল জোগান দিয়ে উদ্যোক্তাশ্রেণি তৈরির স্বপ্নে গচ্চা গেছে হাজার কোটি টাকা। তহবিল থেকে আট বছরের জন্য দেওয়া অর্থের সিংহভাগই ২০ বছর পার হলেও অনাদায়ি। অর্থ নেওয়া অনেক উদ্যোক্তার খোঁজ নেই। অস্তিত্ব নেই অনেক প্রতিষ্ঠানের। উদ্যোক্তা তৈরিতে উৎসাহ জোগাতে সরকারের এই তহবিলের টাকা ভুয়া নথি, খাসজমি দেখিয়ে, জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বিপুল উৎসাহে।
ইক্যুইটি অ্যান্ড অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ফান্ড (ইইএফ) নামের এই তহবিলের বিতরণ করা ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকার মধ্যে ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকাই ফেরত আসেনি। সরকারি তহবিলের এমন নয়ছয়ের চিত্র উঠে এসেছে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (সিএজি) এক প্রতিবেদনে।
অভিযোগ রয়েছে, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে এই তহবিল তছরুপ হয়েছে। আইনে না থাকায় ইইএফ তহবিলের টাকা আদায়ে মামলা করারও সুযোগ পাচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা আইসিবি। অবশ্য পরে অর্থ উদ্ধারে আইনি সুযোগ রেখে তহবিলের নাম পরিবর্তন করে অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ সাপোর্ট ফান্ড (ইএসএফ) গঠন করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে ২০০১ সালে ইইএফ গঠন করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল উদ্যোক্তাদের ঋণের পরিবর্তে মূলধন দেওয়া। প্রকল্পে সরকারের মালিকানা রাখা হয় ৪৯ শতাংশ; বাকি ৫১ শতাংশ মালিকানা উদ্যোক্তাদের। ২০০৯ সাল পর্যন্ত এটি পরিচালনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক, তারপর যায় আইসিবির হাতে। পরে ২০১৮ সালের আগস্টে বিনা সুদের এই তহবিলকে ২ শতাংশ সুদের দীর্ঘমেয়াদি ঋণে রূপান্তর করে ইএসএফ নামকরণ করা হয়। এখানে অর্থ উদ্ধারে আইনি সুযোগ রাখা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে ১ হাজার ৪৫টি প্রকল্পে ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়। বিধি অনুযায়ী বিতরণ করা অর্থ আট বছর পর সরকারি কোষাগারে ফেরত যাওয়ার কথা। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৪৯৩ কোটি টাকা আদায় হয়েছে, বাকি ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা ফেরত আসেনি।
আইসিবির ইইএফের দায়িত্বরত মহাব্যবস্থাপক মো. তালেব হোসেন বলেন, কোনো সুদ ছাড়াই তহবিল থেকে উদ্যোক্তাদের অর্থসহায়তা দেওয়া হতো। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে ২ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। অর্থ আদায়ে রয়েছে ধীরগতি। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ অর্থ ফেরানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সিএজির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থ নেওয়া উদ্যোক্তাদের অনেককেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ কেউ ইচ্ছে করে যোগাযোগ করছেন না। অনেক প্রকল্পের আয়-ব্যয়ের তথ্যও নেই। বারবার নোটিশ দিলেও সাড়া নেই উদ্যোক্তাদের। প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ বাস্তবায়ন না করেই গ্রাহকের অনুকূলে অর্থ ছাড় করা হয়। কোম্পানির নামে জমি রেজিস্ট্রেশন ও ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। প্রকল্পের সম্ভাব্যতাও যাচাই করা হয়নি। এমনকি আমদানি করা যন্ত্রপাতির প্রকৃত দাম ও মান নিরূপণ করা হয়নি। জমির মান যাচাই না করে ভুয়া নথির বিপরীতে ঋণ দেওয়া হয়। এই তহবিলের টাকা নিয়ে অন্য প্রকল্পে ব্যবহারের প্রমাণও মিলেছে। এ ছাড়া প্রকল্পের নামে ব্যাংকে ঋণ থাকা সত্ত্বেও সেই সম্পদের বিপরীতে অর্থ ছাড় করা হয়েছে। যার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইসিবির প্রকল্প মূল্যায়নকারী কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ ইউনিটের পরিচালক মো. হানিফ মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এখন নীতিগত সাপোর্ট দিই। এর পরিচালনার দায়িত্ব আইসিবির। তহবিলে অর্থ বিতরণে যথাযথ নিয়ম মেনে চলা হয়। তবে কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, উদ্যোক্তা সৃষ্টিই ছিল এই তহবিলের অন্যতম লক্ষ্য। এ জন্য ঋণ না দিয়ে তহবিল সহায়তা দেওয়া হয়েছে। অর্থ তছরুপ হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিএজির পরিদর্শনে উঠে এসেছে। অনিয়মের বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, সেগুলোর অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে। অনিয়ম প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিএজির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইসিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আলতাফ ফিশিং লিমিটেডের অনুকূলে ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়। কিন্তু পরিদর্শনে দেখা যায়, প্রকল্পটির বিপরীতে যে জমি দেখানো হয়েছে, তা খাসজমি। এ হোসেন হ্যাচারি অ্যান্ড পোলট্রি কমপ্লেক্স, সালমান ফিশারিজ, কোয়ালিটি অ্যাকুয়াকালচার, বলেশ্বর হ্যাচারি অ্যান্ড ফিশারিজ ও আল সরদারনী ফুড নামের কোম্পানি থাকলেও তারা উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেনি। ইনসার্ট সফটওয়্যার অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেড, আইজেন সফটওয়্যার লিমিটেড ও রিসোর্সেস টেকনোলজি নামের কোম্পানির অনুকূলে বিনিয়োগ করা হলেও এগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি পরিদর্শক দল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইইএফ নীতিমালা উপেক্ষা করে দ্রুত ঋণ ছাড় করাসহ নানা অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে তদন্ত দল। টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন অর্ধেকের বেশি বিনিয়োগকারী। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিক দেশ ছেড়েছেন, আবার কিছু রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধি প্রভাব বিস্তার করে তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে সেই অর্থ আর ফেরত দিচ্ছেন না।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ময়মনসিংহের সিনহা গ্রিনারি অ্যাগ্রো লিমিটেড ঋণখেলাপির তথ্য গোপন করে মনগড়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা তহবিল সহায়তা পায়। সিরাজগঞ্জের স্টার মিল্ক প্রোডাক্টের সক্ষমতা যাচাই না করেই ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। আইটি খাতের ইনফরমেশন টেকনোলজি মেট্রিকস, ক্রিস্টাল ইনফরমেশন, আলফা সফট সিস্টেমস এবং মেসার্স ইলেকট্রনিক ডিজিটাল সিস্টেমস ছিল নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান। কোনো ধরনের জামানত ছাড়াই অস্তিত্বহীন এসব প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, খাস বা ভুয়া জমির বিপরীতে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়। অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ ছাড়ের কোনো সুযোগ নেই। কেননা বিভিন্ন পর্যায়ে যাচাই শেষে প্রকল্পের টাকা ছাড় হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে প্রকল্প সফল না হওয়ায় যথাসময়ে টাকা ফেরত আসেনি। তবে আইটিভিত্তিক কিছু প্রকল্পের যে ঠিকানায় ঋণ দেওয়া হয়েছিল, পরে সেখান থেকে চলে যাওয়ায় তাদের পাওয়া যায়নি। অডিটের আপত্তিগুলো যাচাই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ ইউনিটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ তহবিল থেকে বিতরণ করা অর্থ আইন অনুযায়ী ঋণ ছিল না। এ জন্য কোনো উদ্যোক্তাকে চাপ দেওয়া যায় না। অর্থ আদায়ে মামলা করারও সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের এই তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে নির্ধারিত সময় শেষেও ফেরত না দেওয়ার ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পুঁজিহীন মেধাবীদের ঋণের পরিবর্তে তহবিল জোগান দিয়ে উদ্যোক্তাশ্রেণি তৈরির স্বপ্নে গচ্চা গেছে হাজার কোটি টাকা। তহবিল থেকে আট বছরের জন্য দেওয়া অর্থের সিংহভাগই ২০ বছর পার হলেও অনাদায়ি। অর্থ নেওয়া অনেক উদ্যোক্তার খোঁজ নেই। অস্তিত্ব নেই অনেক প্রতিষ্ঠানের। উদ্যোক্তা তৈরিতে উৎসাহ জোগাতে সরকারের এই তহবিলের টাকা ভুয়া নথি, খাসজমি দেখিয়ে, জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বিপুল উৎসাহে।
ইক্যুইটি অ্যান্ড অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ফান্ড (ইইএফ) নামের এই তহবিলের বিতরণ করা ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকার মধ্যে ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকাই ফেরত আসেনি। সরকারি তহবিলের এমন নয়ছয়ের চিত্র উঠে এসেছে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (সিএজি) এক প্রতিবেদনে।
অভিযোগ রয়েছে, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে এই তহবিল তছরুপ হয়েছে। আইনে না থাকায় ইইএফ তহবিলের টাকা আদায়ে মামলা করারও সুযোগ পাচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা আইসিবি। অবশ্য পরে অর্থ উদ্ধারে আইনি সুযোগ রেখে তহবিলের নাম পরিবর্তন করে অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ সাপোর্ট ফান্ড (ইএসএফ) গঠন করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে ২০০১ সালে ইইএফ গঠন করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল উদ্যোক্তাদের ঋণের পরিবর্তে মূলধন দেওয়া। প্রকল্পে সরকারের মালিকানা রাখা হয় ৪৯ শতাংশ; বাকি ৫১ শতাংশ মালিকানা উদ্যোক্তাদের। ২০০৯ সাল পর্যন্ত এটি পরিচালনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক, তারপর যায় আইসিবির হাতে। পরে ২০১৮ সালের আগস্টে বিনা সুদের এই তহবিলকে ২ শতাংশ সুদের দীর্ঘমেয়াদি ঋণে রূপান্তর করে ইএসএফ নামকরণ করা হয়। এখানে অর্থ উদ্ধারে আইনি সুযোগ রাখা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে ১ হাজার ৪৫টি প্রকল্পে ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়। বিধি অনুযায়ী বিতরণ করা অর্থ আট বছর পর সরকারি কোষাগারে ফেরত যাওয়ার কথা। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৪৯৩ কোটি টাকা আদায় হয়েছে, বাকি ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা ফেরত আসেনি।
আইসিবির ইইএফের দায়িত্বরত মহাব্যবস্থাপক মো. তালেব হোসেন বলেন, কোনো সুদ ছাড়াই তহবিল থেকে উদ্যোক্তাদের অর্থসহায়তা দেওয়া হতো। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে ২ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। অর্থ আদায়ে রয়েছে ধীরগতি। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ অর্থ ফেরানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সিএজির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থ নেওয়া উদ্যোক্তাদের অনেককেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ কেউ ইচ্ছে করে যোগাযোগ করছেন না। অনেক প্রকল্পের আয়-ব্যয়ের তথ্যও নেই। বারবার নোটিশ দিলেও সাড়া নেই উদ্যোক্তাদের। প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ বাস্তবায়ন না করেই গ্রাহকের অনুকূলে অর্থ ছাড় করা হয়। কোম্পানির নামে জমি রেজিস্ট্রেশন ও ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। প্রকল্পের সম্ভাব্যতাও যাচাই করা হয়নি। এমনকি আমদানি করা যন্ত্রপাতির প্রকৃত দাম ও মান নিরূপণ করা হয়নি। জমির মান যাচাই না করে ভুয়া নথির বিপরীতে ঋণ দেওয়া হয়। এই তহবিলের টাকা নিয়ে অন্য প্রকল্পে ব্যবহারের প্রমাণও মিলেছে। এ ছাড়া প্রকল্পের নামে ব্যাংকে ঋণ থাকা সত্ত্বেও সেই সম্পদের বিপরীতে অর্থ ছাড় করা হয়েছে। যার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইসিবির প্রকল্প মূল্যায়নকারী কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ ইউনিটের পরিচালক মো. হানিফ মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এখন নীতিগত সাপোর্ট দিই। এর পরিচালনার দায়িত্ব আইসিবির। তহবিলে অর্থ বিতরণে যথাযথ নিয়ম মেনে চলা হয়। তবে কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, উদ্যোক্তা সৃষ্টিই ছিল এই তহবিলের অন্যতম লক্ষ্য। এ জন্য ঋণ না দিয়ে তহবিল সহায়তা দেওয়া হয়েছে। অর্থ তছরুপ হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিএজির পরিদর্শনে উঠে এসেছে। অনিয়মের বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, সেগুলোর অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে। অনিয়ম প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিএজির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইসিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আলতাফ ফিশিং লিমিটেডের অনুকূলে ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়। কিন্তু পরিদর্শনে দেখা যায়, প্রকল্পটির বিপরীতে যে জমি দেখানো হয়েছে, তা খাসজমি। এ হোসেন হ্যাচারি অ্যান্ড পোলট্রি কমপ্লেক্স, সালমান ফিশারিজ, কোয়ালিটি অ্যাকুয়াকালচার, বলেশ্বর হ্যাচারি অ্যান্ড ফিশারিজ ও আল সরদারনী ফুড নামের কোম্পানি থাকলেও তারা উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেনি। ইনসার্ট সফটওয়্যার অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেড, আইজেন সফটওয়্যার লিমিটেড ও রিসোর্সেস টেকনোলজি নামের কোম্পানির অনুকূলে বিনিয়োগ করা হলেও এগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি পরিদর্শক দল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইইএফ নীতিমালা উপেক্ষা করে দ্রুত ঋণ ছাড় করাসহ নানা অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে তদন্ত দল। টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন অর্ধেকের বেশি বিনিয়োগকারী। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিক দেশ ছেড়েছেন, আবার কিছু রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধি প্রভাব বিস্তার করে তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে সেই অর্থ আর ফেরত দিচ্ছেন না।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ময়মনসিংহের সিনহা গ্রিনারি অ্যাগ্রো লিমিটেড ঋণখেলাপির তথ্য গোপন করে মনগড়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা তহবিল সহায়তা পায়। সিরাজগঞ্জের স্টার মিল্ক প্রোডাক্টের সক্ষমতা যাচাই না করেই ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। আইটি খাতের ইনফরমেশন টেকনোলজি মেট্রিকস, ক্রিস্টাল ইনফরমেশন, আলফা সফট সিস্টেমস এবং মেসার্স ইলেকট্রনিক ডিজিটাল সিস্টেমস ছিল নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান। কোনো ধরনের জামানত ছাড়াই অস্তিত্বহীন এসব প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, খাস বা ভুয়া জমির বিপরীতে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়। অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ ছাড়ের কোনো সুযোগ নেই। কেননা বিভিন্ন পর্যায়ে যাচাই শেষে প্রকল্পের টাকা ছাড় হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে প্রকল্প সফল না হওয়ায় যথাসময়ে টাকা ফেরত আসেনি। তবে আইটিভিত্তিক কিছু প্রকল্পের যে ঠিকানায় ঋণ দেওয়া হয়েছিল, পরে সেখান থেকে চলে যাওয়ায় তাদের পাওয়া যায়নি। অডিটের আপত্তিগুলো যাচাই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ ইউনিটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ তহবিল থেকে বিতরণ করা অর্থ আইন অনুযায়ী ঋণ ছিল না। এ জন্য কোনো উদ্যোক্তাকে চাপ দেওয়া যায় না। অর্থ আদায়ে মামলা করারও সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের এই তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে নির্ধারিত সময় শেষেও ফেরত না দেওয়ার ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
পুঁজিহীন মেধাবীদের ঋণের পরিবর্তে তহবিল জোগান দিয়ে উদ্যোক্তাশ্রেণি তৈরির স্বপ্নে গচ্চা গেছে হাজার কোটি টাকা। তহবিল থেকে আট বছরের জন্য দেওয়া অর্থের সিংহভাগই ২০ বছর পার হলেও অনাদায়ি। অর্থ নেওয়া অনেক উদ্যোক্তার খোঁজ নেই। অস্তিত্ব নেই অনেক প্রতিষ্ঠানের। উদ্যোক্তা তৈরিতে উৎসাহ জোগাতে সরকারের এই তহবিলের টাকা ভুয়া নথি, খাসজমি দেখিয়ে, জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বিপুল উৎসাহে।
ইক্যুইটি অ্যান্ড অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ফান্ড (ইইএফ) নামের এই তহবিলের বিতরণ করা ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকার মধ্যে ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকাই ফেরত আসেনি। সরকারি তহবিলের এমন নয়ছয়ের চিত্র উঠে এসেছে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (সিএজি) এক প্রতিবেদনে।
অভিযোগ রয়েছে, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে এই তহবিল তছরুপ হয়েছে। আইনে না থাকায় ইইএফ তহবিলের টাকা আদায়ে মামলা করারও সুযোগ পাচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা আইসিবি। অবশ্য পরে অর্থ উদ্ধারে আইনি সুযোগ রেখে তহবিলের নাম পরিবর্তন করে অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ সাপোর্ট ফান্ড (ইএসএফ) গঠন করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে ২০০১ সালে ইইএফ গঠন করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল উদ্যোক্তাদের ঋণের পরিবর্তে মূলধন দেওয়া। প্রকল্পে সরকারের মালিকানা রাখা হয় ৪৯ শতাংশ; বাকি ৫১ শতাংশ মালিকানা উদ্যোক্তাদের। ২০০৯ সাল পর্যন্ত এটি পরিচালনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক, তারপর যায় আইসিবির হাতে। পরে ২০১৮ সালের আগস্টে বিনা সুদের এই তহবিলকে ২ শতাংশ সুদের দীর্ঘমেয়াদি ঋণে রূপান্তর করে ইএসএফ নামকরণ করা হয়। এখানে অর্থ উদ্ধারে আইনি সুযোগ রাখা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে ১ হাজার ৪৫টি প্রকল্পে ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়। বিধি অনুযায়ী বিতরণ করা অর্থ আট বছর পর সরকারি কোষাগারে ফেরত যাওয়ার কথা। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৪৯৩ কোটি টাকা আদায় হয়েছে, বাকি ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা ফেরত আসেনি।
আইসিবির ইইএফের দায়িত্বরত মহাব্যবস্থাপক মো. তালেব হোসেন বলেন, কোনো সুদ ছাড়াই তহবিল থেকে উদ্যোক্তাদের অর্থসহায়তা দেওয়া হতো। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে ২ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। অর্থ আদায়ে রয়েছে ধীরগতি। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ অর্থ ফেরানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সিএজির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থ নেওয়া উদ্যোক্তাদের অনেককেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ কেউ ইচ্ছে করে যোগাযোগ করছেন না। অনেক প্রকল্পের আয়-ব্যয়ের তথ্যও নেই। বারবার নোটিশ দিলেও সাড়া নেই উদ্যোক্তাদের। প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ বাস্তবায়ন না করেই গ্রাহকের অনুকূলে অর্থ ছাড় করা হয়। কোম্পানির নামে জমি রেজিস্ট্রেশন ও ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। প্রকল্পের সম্ভাব্যতাও যাচাই করা হয়নি। এমনকি আমদানি করা যন্ত্রপাতির প্রকৃত দাম ও মান নিরূপণ করা হয়নি। জমির মান যাচাই না করে ভুয়া নথির বিপরীতে ঋণ দেওয়া হয়। এই তহবিলের টাকা নিয়ে অন্য প্রকল্পে ব্যবহারের প্রমাণও মিলেছে। এ ছাড়া প্রকল্পের নামে ব্যাংকে ঋণ থাকা সত্ত্বেও সেই সম্পদের বিপরীতে অর্থ ছাড় করা হয়েছে। যার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইসিবির প্রকল্প মূল্যায়নকারী কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ ইউনিটের পরিচালক মো. হানিফ মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এখন নীতিগত সাপোর্ট দিই। এর পরিচালনার দায়িত্ব আইসিবির। তহবিলে অর্থ বিতরণে যথাযথ নিয়ম মেনে চলা হয়। তবে কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, উদ্যোক্তা সৃষ্টিই ছিল এই তহবিলের অন্যতম লক্ষ্য। এ জন্য ঋণ না দিয়ে তহবিল সহায়তা দেওয়া হয়েছে। অর্থ তছরুপ হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিএজির পরিদর্শনে উঠে এসেছে। অনিয়মের বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, সেগুলোর অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে। অনিয়ম প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিএজির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইসিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আলতাফ ফিশিং লিমিটেডের অনুকূলে ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়। কিন্তু পরিদর্শনে দেখা যায়, প্রকল্পটির বিপরীতে যে জমি দেখানো হয়েছে, তা খাসজমি। এ হোসেন হ্যাচারি অ্যান্ড পোলট্রি কমপ্লেক্স, সালমান ফিশারিজ, কোয়ালিটি অ্যাকুয়াকালচার, বলেশ্বর হ্যাচারি অ্যান্ড ফিশারিজ ও আল সরদারনী ফুড নামের কোম্পানি থাকলেও তারা উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেনি। ইনসার্ট সফটওয়্যার অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেড, আইজেন সফটওয়্যার লিমিটেড ও রিসোর্সেস টেকনোলজি নামের কোম্পানির অনুকূলে বিনিয়োগ করা হলেও এগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি পরিদর্শক দল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইইএফ নীতিমালা উপেক্ষা করে দ্রুত ঋণ ছাড় করাসহ নানা অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে তদন্ত দল। টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন অর্ধেকের বেশি বিনিয়োগকারী। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিক দেশ ছেড়েছেন, আবার কিছু রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধি প্রভাব বিস্তার করে তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে সেই অর্থ আর ফেরত দিচ্ছেন না।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ময়মনসিংহের সিনহা গ্রিনারি অ্যাগ্রো লিমিটেড ঋণখেলাপির তথ্য গোপন করে মনগড়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা তহবিল সহায়তা পায়। সিরাজগঞ্জের স্টার মিল্ক প্রোডাক্টের সক্ষমতা যাচাই না করেই ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। আইটি খাতের ইনফরমেশন টেকনোলজি মেট্রিকস, ক্রিস্টাল ইনফরমেশন, আলফা সফট সিস্টেমস এবং মেসার্স ইলেকট্রনিক ডিজিটাল সিস্টেমস ছিল নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান। কোনো ধরনের জামানত ছাড়াই অস্তিত্বহীন এসব প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, খাস বা ভুয়া জমির বিপরীতে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়। অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ ছাড়ের কোনো সুযোগ নেই। কেননা বিভিন্ন পর্যায়ে যাচাই শেষে প্রকল্পের টাকা ছাড় হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে প্রকল্প সফল না হওয়ায় যথাসময়ে টাকা ফেরত আসেনি। তবে আইটিভিত্তিক কিছু প্রকল্পের যে ঠিকানায় ঋণ দেওয়া হয়েছিল, পরে সেখান থেকে চলে যাওয়ায় তাদের পাওয়া যায়নি। অডিটের আপত্তিগুলো যাচাই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ ইউনিটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ তহবিল থেকে বিতরণ করা অর্থ আইন অনুযায়ী ঋণ ছিল না। এ জন্য কোনো উদ্যোক্তাকে চাপ দেওয়া যায় না। অর্থ আদায়ে মামলা করারও সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের এই তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে নির্ধারিত সময় শেষেও ফেরত না দেওয়ার ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পুঁজিহীন মেধাবীদের ঋণের পরিবর্তে তহবিল জোগান দিয়ে উদ্যোক্তাশ্রেণি তৈরির স্বপ্নে গচ্চা গেছে হাজার কোটি টাকা। তহবিল থেকে আট বছরের জন্য দেওয়া অর্থের সিংহভাগই ২০ বছর পার হলেও অনাদায়ি। অর্থ নেওয়া অনেক উদ্যোক্তার খোঁজ নেই। অস্তিত্ব নেই অনেক প্রতিষ্ঠানের। উদ্যোক্তা তৈরিতে উৎসাহ জোগাতে সরকারের এই তহবিলের টাকা ভুয়া নথি, খাসজমি দেখিয়ে, জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বিপুল উৎসাহে।
ইক্যুইটি অ্যান্ড অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ফান্ড (ইইএফ) নামের এই তহবিলের বিতরণ করা ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকার মধ্যে ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকাই ফেরত আসেনি। সরকারি তহবিলের এমন নয়ছয়ের চিত্র উঠে এসেছে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (সিএজি) এক প্রতিবেদনে।
অভিযোগ রয়েছে, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে এই তহবিল তছরুপ হয়েছে। আইনে না থাকায় ইইএফ তহবিলের টাকা আদায়ে মামলা করারও সুযোগ পাচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা আইসিবি। অবশ্য পরে অর্থ উদ্ধারে আইনি সুযোগ রেখে তহবিলের নাম পরিবর্তন করে অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ সাপোর্ট ফান্ড (ইএসএফ) গঠন করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে ২০০১ সালে ইইএফ গঠন করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল উদ্যোক্তাদের ঋণের পরিবর্তে মূলধন দেওয়া। প্রকল্পে সরকারের মালিকানা রাখা হয় ৪৯ শতাংশ; বাকি ৫১ শতাংশ মালিকানা উদ্যোক্তাদের। ২০০৯ সাল পর্যন্ত এটি পরিচালনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক, তারপর যায় আইসিবির হাতে। পরে ২০১৮ সালের আগস্টে বিনা সুদের এই তহবিলকে ২ শতাংশ সুদের দীর্ঘমেয়াদি ঋণে রূপান্তর করে ইএসএফ নামকরণ করা হয়। এখানে অর্থ উদ্ধারে আইনি সুযোগ রাখা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে ১ হাজার ৪৫টি প্রকল্পে ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়। বিধি অনুযায়ী বিতরণ করা অর্থ আট বছর পর সরকারি কোষাগারে ফেরত যাওয়ার কথা। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৪৯৩ কোটি টাকা আদায় হয়েছে, বাকি ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা ফেরত আসেনি।
আইসিবির ইইএফের দায়িত্বরত মহাব্যবস্থাপক মো. তালেব হোসেন বলেন, কোনো সুদ ছাড়াই তহবিল থেকে উদ্যোক্তাদের অর্থসহায়তা দেওয়া হতো। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে ২ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। অর্থ আদায়ে রয়েছে ধীরগতি। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ অর্থ ফেরানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সিএজির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থ নেওয়া উদ্যোক্তাদের অনেককেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ কেউ ইচ্ছে করে যোগাযোগ করছেন না। অনেক প্রকল্পের আয়-ব্যয়ের তথ্যও নেই। বারবার নোটিশ দিলেও সাড়া নেই উদ্যোক্তাদের। প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ বাস্তবায়ন না করেই গ্রাহকের অনুকূলে অর্থ ছাড় করা হয়। কোম্পানির নামে জমি রেজিস্ট্রেশন ও ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। প্রকল্পের সম্ভাব্যতাও যাচাই করা হয়নি। এমনকি আমদানি করা যন্ত্রপাতির প্রকৃত দাম ও মান নিরূপণ করা হয়নি। জমির মান যাচাই না করে ভুয়া নথির বিপরীতে ঋণ দেওয়া হয়। এই তহবিলের টাকা নিয়ে অন্য প্রকল্পে ব্যবহারের প্রমাণও মিলেছে। এ ছাড়া প্রকল্পের নামে ব্যাংকে ঋণ থাকা সত্ত্বেও সেই সম্পদের বিপরীতে অর্থ ছাড় করা হয়েছে। যার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইসিবির প্রকল্প মূল্যায়নকারী কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ ইউনিটের পরিচালক মো. হানিফ মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এখন নীতিগত সাপোর্ট দিই। এর পরিচালনার দায়িত্ব আইসিবির। তহবিলে অর্থ বিতরণে যথাযথ নিয়ম মেনে চলা হয়। তবে কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, উদ্যোক্তা সৃষ্টিই ছিল এই তহবিলের অন্যতম লক্ষ্য। এ জন্য ঋণ না দিয়ে তহবিল সহায়তা দেওয়া হয়েছে। অর্থ তছরুপ হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিএজির পরিদর্শনে উঠে এসেছে। অনিয়মের বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, সেগুলোর অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে। অনিয়ম প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিএজির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইসিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আলতাফ ফিশিং লিমিটেডের অনুকূলে ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়। কিন্তু পরিদর্শনে দেখা যায়, প্রকল্পটির বিপরীতে যে জমি দেখানো হয়েছে, তা খাসজমি। এ হোসেন হ্যাচারি অ্যান্ড পোলট্রি কমপ্লেক্স, সালমান ফিশারিজ, কোয়ালিটি অ্যাকুয়াকালচার, বলেশ্বর হ্যাচারি অ্যান্ড ফিশারিজ ও আল সরদারনী ফুড নামের কোম্পানি থাকলেও তারা উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেনি। ইনসার্ট সফটওয়্যার অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেড, আইজেন সফটওয়্যার লিমিটেড ও রিসোর্সেস টেকনোলজি নামের কোম্পানির অনুকূলে বিনিয়োগ করা হলেও এগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি পরিদর্শক দল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইইএফ নীতিমালা উপেক্ষা করে দ্রুত ঋণ ছাড় করাসহ নানা অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে তদন্ত দল। টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন অর্ধেকের বেশি বিনিয়োগকারী। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিক দেশ ছেড়েছেন, আবার কিছু রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধি প্রভাব বিস্তার করে তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে সেই অর্থ আর ফেরত দিচ্ছেন না।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ময়মনসিংহের সিনহা গ্রিনারি অ্যাগ্রো লিমিটেড ঋণখেলাপির তথ্য গোপন করে মনগড়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা তহবিল সহায়তা পায়। সিরাজগঞ্জের স্টার মিল্ক প্রোডাক্টের সক্ষমতা যাচাই না করেই ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। আইটি খাতের ইনফরমেশন টেকনোলজি মেট্রিকস, ক্রিস্টাল ইনফরমেশন, আলফা সফট সিস্টেমস এবং মেসার্স ইলেকট্রনিক ডিজিটাল সিস্টেমস ছিল নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান। কোনো ধরনের জামানত ছাড়াই অস্তিত্বহীন এসব প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, খাস বা ভুয়া জমির বিপরীতে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়। অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ ছাড়ের কোনো সুযোগ নেই। কেননা বিভিন্ন পর্যায়ে যাচাই শেষে প্রকল্পের টাকা ছাড় হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে প্রকল্প সফল না হওয়ায় যথাসময়ে টাকা ফেরত আসেনি। তবে আইটিভিত্তিক কিছু প্রকল্পের যে ঠিকানায় ঋণ দেওয়া হয়েছিল, পরে সেখান থেকে চলে যাওয়ায় তাদের পাওয়া যায়নি। অডিটের আপত্তিগুলো যাচাই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ ইউনিটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ তহবিল থেকে বিতরণ করা অর্থ আইন অনুযায়ী ঋণ ছিল না। এ জন্য কোনো উদ্যোক্তাকে চাপ দেওয়া যায় না। অর্থ আদায়ে মামলা করারও সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের এই তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে নির্ধারিত সময় শেষেও ফেরত না দেওয়ার ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
পুঁজিহীন মেধাবীদের ঋণের পরিবর্তে তহবিল জোগান দিয়ে উদ্যোক্তাশ্রেণি তৈরির স্বপ্নে গচ্চা গেছে হাজার কোটি টাকা। তহবিল থেকে আট বছরের জন্য দেওয়া অর্থের সিংহভাগই ২০ বছর পার হলেও অনাদায়ি। অর্থ নেওয়া অনেক উদ্যোক্তার খোঁজ নেই। অস্তিত্ব নেই অনেক প্রতিষ্ঠানের
১৫ মার্চ ২০২৩‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
পুঁজিহীন মেধাবীদের ঋণের পরিবর্তে তহবিল জোগান দিয়ে উদ্যোক্তাশ্রেণি তৈরির স্বপ্নে গচ্চা গেছে হাজার কোটি টাকা। তহবিল থেকে আট বছরের জন্য দেওয়া অর্থের সিংহভাগই ২০ বছর পার হলেও অনাদায়ি। অর্থ নেওয়া অনেক উদ্যোক্তার খোঁজ নেই। অস্তিত্ব নেই অনেক প্রতিষ্ঠানের
১৫ মার্চ ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
পুঁজিহীন মেধাবীদের ঋণের পরিবর্তে তহবিল জোগান দিয়ে উদ্যোক্তাশ্রেণি তৈরির স্বপ্নে গচ্চা গেছে হাজার কোটি টাকা। তহবিল থেকে আট বছরের জন্য দেওয়া অর্থের সিংহভাগই ২০ বছর পার হলেও অনাদায়ি। অর্থ নেওয়া অনেক উদ্যোক্তার খোঁজ নেই। অস্তিত্ব নেই অনেক প্রতিষ্ঠানের
১৫ মার্চ ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
পুঁজিহীন মেধাবীদের ঋণের পরিবর্তে তহবিল জোগান দিয়ে উদ্যোক্তাশ্রেণি তৈরির স্বপ্নে গচ্চা গেছে হাজার কোটি টাকা। তহবিল থেকে আট বছরের জন্য দেওয়া অর্থের সিংহভাগই ২০ বছর পার হলেও অনাদায়ি। অর্থ নেওয়া অনেক উদ্যোক্তার খোঁজ নেই। অস্তিত্ব নেই অনেক প্রতিষ্ঠানের
১৫ মার্চ ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫