Ajker Patrika

রাজশাহী-৩: অন্যরা নীরব, বিদ্রোহীতে সরব আ.লীগ

রিমন রহমান, রাজশাহী
রাজশাহী-৩: অন্যরা নীরব, বিদ্রোহীতে সরব আ.লীগ

সীমানা পুনর্নির্ধারণের মধ্য দিয়ে ২০০৮ সালে পবা আর মোহনপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত হয় রাজশাহী-৩ সংসদীয় আসন। বর্তমান সংসদ সদস্য (এমপি) জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়নে তিনি প্রথমবার এমপি হন। তবে তখন থেকেই আসনটিতে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আসছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। এবারও তাঁর মনোনয়ন চাওয়ার তোড়জোড়ের মধ্যে জমে উঠেছে দলটির ভোটের মাঠ।

তবে নির্বাচন ঘিরে অন্য দলগুলোর তৎপরতা এখনো জোরালো নয়। নিবন্ধন হারালেও এ আসনে আধিপত্য ধরে রাখতে প্রার্থী দিতে চায় জামায়াতে ইসলাম। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাকিয়ে আছেন কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের দিকে। এখন পর্যন্ত এ আসনের নির্বাচনে অংশ না নেওয়া জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতাদের তৎপরতাও চোখে পড়ছে না।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি হন মেরাজ উদ্দিন মোল্লা। তবে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিন। তাঁর বিপরীতে ‘বিদ্রোহী’ হয়ে নির্বাচন করে মেরাজ উদ্দিন হেরে যান। এরপর ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনেও দলের মনোনয়নে এমপি হন আয়েন। ভোটাররা বলছেন, এবারও আয়েনকে বিদ্রোহী প্রার্থী সামলাতে হতে পারে। আসাদুজ্জামান আসাদ শহরের ভোটার হলেও তৃণমূলে বেশ জনপ্রিয়।

এদিকে নির্বাচনকেন্দ্রিক বিভিন্ন তৎপরতার মধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে সম্ভাব্য প্রার্থী আয়েন ও আসাদের দ্বন্দ্ব। আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে ৬ মে আসাদের সঙ্গে নেতা-কর্মীরা এক সভা করেন। তা জানতে পেরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইয়াসিন আলী কাটাখালীতে যান। সিটি নির্বাচনের আগে অন্য কোনো নেতার হয়ে কর্মসূচি পালন করা যাবে না জানিয়ে কর্মীদের সতর্ক করেন। এরপর ১৪ মে ওয়ার্ড কমিটিগুলো বিলুপ্ত করে দেয় পৌর আওয়ামী লীগ।

এর প্রতিবাদে ১৬ মে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের পদ হারানো নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, আসাদের সঙ্গে সভা করার বিষয়টি এমপি আয়েনের পছন্দ হয়নি। তাঁর নির্দেশেই মেয়াদোত্তীর্ণের অজুহাত দেখিয়ে কমিটিগুলো বিলুপ্ত করা হয়েছে।

তবে আয়েন উদ্দিন এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আসাদ কোনো ফ্যাক্টরই না। তাঁর সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি বাতিল করেছে পৌর কমিটি। এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’

আর আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, দুই উপজেলার ত্যাগী নেতাদের কোণঠাসা করে দিয়েছেন বর্তমান এমপি। তাঁরা নানাভাবে হয়রানি, নির্যাতন, মামলা-হামলার শিকার। তাই সবাই পরিবর্তন চান। তাঁদের পক্ষে এবার তিনি নেত্রীর কাছে মনোনয়ন চাইবেন।

এ আসনে আসাদ ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন নেসা তালুকদারের ছেলে যুবলীগ নেতা মাহমুদ হাসান ফয়সল মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।

কাগজে-কলমে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে প্রার্থী হতে পারেন শফিকুল হক মিলন। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। দলীয় সূত্রগুলো বলছে, জেলা বিএনপির নেতা মতিউর রহমান মন্টুও মনোনয়নপ্রত্যাশী।

ভোটব্যাংক বিবেচনায় স্বতন্ত্রভাবে হলেও প্রার্থী দিতে চায় জামায়াতে ইসলাম। পবার কাটাখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও মহানগর জামায়াতের শ‌ুরা সদস্য মাজিদুর রহমানকে প্রার্থী ঠিক করেছে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন হারানো দলটি। ফেসবুকে মাজিদুর এমপি প্রার্থী হিসেবে প্রচারও চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, তাঁর নির্বাচন করার ব্যাপারে এক মাস আগে দলীয় ফোরামে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। কিন্তু পুলিশ এলাকায় কোনো কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না।

জাতীয় পার্টি থেকে ২০১৮ সালের নির্বাচনে শাহাবুদ্দিন বাচ্চুকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অংশ নেননি মহানগর জাপার তৎকালীন সভাপতি। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকছেন। এবারের নির্বাচন ঘিরেও তাঁর তৎপরতা নেই। একই অবস্থা বিরাজ করছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ ও সাম্যবাদী দলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত