Ajker Patrika

বিনম্র শ্রদ্ধা শহীদদের প্রতি

আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪: ৫৬
বিনম্র শ্রদ্ধা শহীদদের প্রতি

‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি?’ একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এদিনে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে রাজপথ রঞ্জিত হয় ছাত্রদের রক্তে। গৌরবোজ্জ্বল মাতৃভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পূর্ণ হয়েছে গতকাল। সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের উপজেলাগুলোতে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধার সঙ্গে শহীদদের স্মরণ করা হয়।

বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে:

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। গতকাল সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেসুনামগঞ্জ: একুশের প্রথম প্রহরে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ছিল মানুষের ভিড়। রাত ১২টা ১ মিনিটে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।

এ সময় জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও মুক্তিযোদ্ধাদের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

জেলা আওয়ামী লীগ পৃথকভাবে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির ইমনের নেতৃত্বে মিছিলসহ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুটের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে।

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ): উপজেলা পরিষদ, প্রশাসনসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সকাল সাড়ে ৭টায় পৌরশহরের কেন্দ্রে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

প্রথমে উপজেলা পরিষদ, এরপর উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, পৌরসভা, জগন্নাথপুর থানা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, জগন্নাথপুর প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করে। পরে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান।

জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ): যথাযোগ্য মর্যাদায় ও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জামালগঞ্জে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একুশের প্রথম প্রহরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাত ১২টা ১ মিনিটে ফুলের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।

প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন ও পুষ্পমাল্য অর্পণ করে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, জামালগঞ্জ থানা, উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও জামালগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ সময় ভাষাশহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং একুশের চেতনা বাস্তবায়নের শপথ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

পরে সকাল ১০টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বীণা রানী তালুকদার, ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম জিলানী আফিন্দি রাজু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ আব্দুন নাসের ও বীর মুক্তিযোদ্ধারাসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান।

শিশুর গালে এঁকে দেওয়া হয় জাতীয় পতাকা ও বর্ণ। গতকাল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে হবিগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেহবিগঞ্জ: শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে ভাষাশহীদদের স্মরণ করে হবিগঞ্জবাসী। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধায় ফুলে ফুলে ভরে ওঠে হবিগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির। পরে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহানসহ প্রশাসনের নেতারা। একে একে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে জেলা পুলিশ, হবিগঞ্জ পৌরসভা, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে, জেলা প্রেসক্লাব, জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, জেলা শিক্ষা কার্যালয়ে, জেলা ফায়ার সার্ভিস, জেলা আনসারসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

পরে জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। সকালেও শ্রদ্ধা জানাতে সাধারণ মানুষের ভিড় ছিল শহীদ মিনারে।

এদিকে জাতীয় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভাসহ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করে জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও জেলা আওয়ামী লীগ।

শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ): উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনুষ্ঠানিকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটি শুরু হয়। ধারাবাহিকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা, উপজেলা প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা।

পরে সকালে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও চিত্রাঙ্কন অনুষ্ঠিত হয়।

এ ছাড়া সকাল ১০টায় কলেজে শিক্ষক মিলনায়তনে ‘একুশে ফেব্রুয়ারি জেগে উঠে বাঙালি জাতিসত্তার চেতনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রভাষক তহুরা বেগম, প্রভাষক মুহাম্মদ মহিউদ্দিন, প্রভাষক মো. রফিকুল ইসলাম, প্রভাষক মো. আরিফুর রহমান, প্রভাষক মো. হোসেন প্রমুখ।

সভায় তাঁরা বলেন, ‘ভাষাশহীদের ত্যাগের কারণেই আজকে আমরা মন খুলে বাংলা বলছি ও লিখছি। বিশ্বের ইতিহাসের বুকে মাতৃভাষার জন্য বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলাম আমরা এই বাঙালিরাই। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়।’

পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ক্ষুদ্র পরিসরে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করে রবীন্দ্র চর্চার সংগঠন রবিরশ্মি মৌলভীবাজার। গতকাল মৌলভীবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেমৌলভীবাজার: মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে ঢল নামে সর্বস্তরের মানুষের। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই এসেছিলেন ভাষাশহীদদের আত্মাহুতির সাত দশক পূর্তিতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।

একুশের প্রথম প্রহরে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান ও জেলা প্রশাসন।

পরে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সাংসদ নেছার আহমদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান। পরে একে একে জেলা পুলিশ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও জেলা প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।

সোমবার সকাল থেকে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন প্রভাতফেরিতে অংশ নেয়। পরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এ ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এদিন জেলা প্রশাসনের আয়োজনে দিনব্যাপী নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করা হয়। জেলা শিশু একাডেমি ও শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা, শুদ্ধভাবে বর্ণমালা উচ্চারণ প্রতিযোগিতা, ছড়া পাঠ, দেশাত্মবোধক গান ও কবিতা আবৃত্তি অনুষ্ঠিত হয়।

বিকেলে ১৯৫২ সালের ভাষাসৈনিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ভাষাসৈনিক আব্দুল মালিক জীবিত, বাকি তিনজন মৃত্যুবরণ করায় তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার): উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়। একুশের প্রথম প্রহরে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা। এ সময় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ।

সোমবার সকাল ৭টায় উপজেলা মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে প্রভাতফেরি বের হয়। এ প্রভাতফেরি শেষ হয় উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সকাল সাড়ে ৮টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ভাষা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে এক আলোচনা সভা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান।

পরে আলোচনায় অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, সাবেক পৌর কাউন্সিলর মো. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জরুরি অবতরণও করা যাবে না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

বাসস, ঢাকা  
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।

আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।

এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।

পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।

মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জরুরি অবতরণও করা যাবে না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

  • এবার ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
  • গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলে পল্লিগুলোতে ব্যস্ততা।
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’

জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’

নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’

সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।

কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।

একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জরুরি অবতরণও করা যাবে না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

  • ক্রয়াদেশের চালান নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা
  • সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
  • আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডেকেছে জরুরি বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০২: ৪৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।

ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।

গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।

বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।

জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।

স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জরুরি অবতরণও করা যাবে না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।

গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?

১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।

ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জরুরি অবতরণও করা যাবে না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত