Ajker Patrika

সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর

সম্পাদকীয়
Thumbnail image

সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন লেখক ও রাজনীতিবিদ। তাঁর জন্ম ১৯০১ সালের ৪ অক্টোবর। তিনি জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের সুধীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুত্র এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতি।

সৌম্যেন্দ্র মিত্র ইনস্টিটিউশন থেকে ম্যাট্রিক এবং প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্সসহ বিএ পাস করেন। জীবনের প্রথম ভাগে গান্ধীজির প্রভাব দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি পারিবারিক বাধা অতিক্রম করে কমিউনিস্ট রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে তিনিই প্রথম পৈতা নিতে অস্বীকার করেন। বাড়িতে বোমা তৈরির কারখানা করেন। সারা রাত সঙ্গীদের সঙ্গে বোমা বেঁধেছেন, আবার দিনের বেলা রবীন্দ্রনাথের গানের মহড়ায়ও অংশ নিয়েছেন। তাঁর কারণে দলের সাহায্যার্থে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রথম প্রকাশ্য মঞ্চে ‘ভদ্র পরিবারে’র এক মেয়ে নৃত্যে অংশ নিয়েছিলেন।

তিনি নিখিল ভারত ছাত্র সম্মেলনে যোগদান এবং বইপত্র পাঠ করে কমিউনিস্ট মতবাদের প্রতি আকৃষ্ট হন। ‘শ্রমিক কৃষক দল’ (ডব্লিউপিপি)-এর মুখপত্র ‘লাঙল’ পত্রিকায় লেখালেখির সূত্রে মুজাফ্ফর আহমেদ ও কাজী নজরুল ইসলামের সংস্পর্শে আসেন সৌম্যেন্দ্রনাথ।

১৯২৭ সালে তিনি ‘দি রেভল্যুশনারি কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া’ গঠন করেন। এ পার্টির ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক ফ্রন্টে তিনি কাজ করেন। তাঁর উদ্যোগে চটকল, পোর্ট, ডক, ব্যাংক, বার্মা শেল, বাটা প্রভৃতি শিল্পক্ষেত্রে ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তোলেন।

একসময় পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমান পার্টির নির্দেশে। তখন জার্মানিতে থাকাকালীন তিনি প্রকাশ্যে নাৎসিবাদের বিরুদ্ধে প্রচারে অংশ নেন। এ সময়ই তিনি ‘ফ্যাসিজম’ বইটি লেখেন। বাংলায় লিখিত ও প্রকাশিত প্রথম ফ্যাসিবাদবিরোধী বই এটি। সেখান থেকে মস্কোয় গিয়ে ষষ্ঠ কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনালের অধিবেশনে যোগ দেন।

সোভিয়েত রাশিয়ায় তাঁর নিজের অভিজ্ঞতায় স্তালিনের কর্তৃত্ববাদী শাসনের রূপ দেখে এর সমালোচনা করেন। তিনি ভারতে ফিরে আসার পর ব্রিটিশ সরকার দ্বারা কয়েকবার গ্রেপ্তার হয়ে এক দশকের বেশি সময় জেলে ছিলেন।

তিনিই প্রথম কমিউনিস্ট ইশতেহারের বাংলা অনুবাদক। ‘কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল’ গানটির প্রথম বাংলা রূপান্তরও তিনি করেন।

১৯৭৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত