Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল ‘তুফান টু’ বানানোর

আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল ‘তুফান টু’ বানানোর

শাকিব খান অভিনীত ‘তুফান’ সিনেমা যে হিট হবে, সেটা আন্দাজ করা গিয়েছিল আগেই। সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে এবার ঈদে। মুক্তির পর ঠিকই এসেছে প্রত্যাশিত সাফল্য। তুফান সিনেমার হল পরিস্থিতি, দর্শক প্রতিক্রিয়াসহ নানা প্রসঙ্গে পরিচালক রায়হান রাফীর সঙ্গে কথা বলেছেন এম এস রানা

তুফান মুক্তির তিন দিনের মাথায় রেকর্ডসংখ্যক প্রদর্শনী বেড়েছে। কেমন লাগছে?
খুব ভালো। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।

অনেক হলেই তুফানের টিকিট না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন দর্শক। মধুমিতায় টিকিট না পেয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে, আবার কোনো কোনো হলে সর্বোচ্চসংখ্যক শো চালু হয়েছে। আপনার কাছে আর কী হল রিপোর্ট রয়েছে?
স্টার সিনেপ্লেক্সে এর আগে আমার পরাণ সিনেমার শো ছিল ৩২টি, এটাই এখন পর্যন্ত এক দিনের সর্বোচ্চসংখ্যক শো ছিল। এবার তুফান সিনেমার শো আজকে (গতকাল) ৪৯টি হয়ে গেছে, কিছুক্ষণের মধ্যে সেটা ৫০ হয়ে যাবে। ৫০টি শো দিয়েও কুলানো যাচ্ছে না। অনেকেই টিকিট পাচ্ছেন না। যমুনা ব্লকবাস্টারসে আজ থেকে ১৪টি শো চলবে, লায়নে চলছে ১৩টি শো। মধুমিতার তিনটি শোই হাউসফুল। যশোরের মণিহার থেকে শুরু করে সাভার সেনা অডিটরিয়ামসহ সারা দেশেই ভালো যাচ্ছে। আমি এখন যমুনাতে আছি, এখানেও সব শো হাউসফুল যাচ্ছে।

তুফানের মিডনাইট শো চালু করার কথা শুনলাম?
দর্শকের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ঢাকার বাইরের ছায়াবাণীসহ আরও কয়েকটি হল মিডনাইট শো চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ রাত ১২টা থেকে ভোর ৩টা পর্যন্ত একটা শো চালাবে তারা। ওগুলোও হাউসফুল যাচ্ছে। আমার জানা মতে, নিকট অতীতে বাংলাদেশের কোনো সিনেমার মিডনাইট শো চলেনি। এটা ভারতে হয়, যে সমস্ত সিনেমার প্রচুর ক্রেজ তৈরি হয়, দর্শকের চাহিদা পূরণ করতে মিডনাইট শো চালু করা হয়।

দর্শক প্রতিক্রিয়া কেমন পাচ্ছেন?
আমার সিনেমা আগেও হিট হয়েছে। তবে এবারের মতো প্রতিক্রিয়া আগে পাইনি। দর্শকেরা হল থেকে বেরিয়ে অ্যাগ্রেসিভ ওয়েতে প্রশংসা করছেন। নরমালি কী হয়, ভালো হয়েছে, ভালো লাগল, সুপার—এমন সব কথা বলে প্রতিক্রিয়া জানায়। এবার কিন্তু দর্শকের উচ্ছ্বাসটা একেবারেই ভিন্ন।

তাহলে কি এই সিনেমায় আপনার প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ হয়েছে বলে মনে করেন?
আমি আগেও বলেছি, আমি একটা ‘পরাণ’ বানাতে চাইনি, আমি একটা ‘সুড়ঙ্গ’ বানাতে চাইনি। আমি এমন একটা সিনেমা বানাতে চেয়েছি, যে ধরনের সিনেমা দেখে আমাদের আফসোস হতো, ইশ্‌, এমন সিনেমা যদি আমাদের দেশে হতো! আমাদের দেশে যদি পুষ্পার মতো, কেজিএফের মতো সিনেমা হতো! সেই জায়গা থেকেই আমি চেষ্টা করেছি, তুফান বানিয়েছি। মনে হচ্ছে, আমি সফল।

তুফান মুক্তির আগে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন এটা ভারতীয় সিনেমা কি না। কারণ, এই সিনেমার শুটিং হয়েছে ভারতে। এমনকি এসভিএফকেও সহপ্রযোজক হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
দেখুন, প্রাথমিক পর্যায়ের অনেক সিদ্ধান্তই তো বদলে যায়। তবে তুফান একেবারেই ভারতীয় সিনেমা না। এটা সম্পূর্ণ বাংলাদেশের সিনেমা। এর প্রযোজক আলফা আই, পরিচালক আমি, এর ডিওপি, আর্ট ডিরেক্টর, প্রোডাকশন ডিজাইনার, সেট ডিজাইনার, কস্টিউম ডিজাইনার, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, সাউন্ড, গান—সবই বাংলাদেশের। অ্যাকশন দৃশ্যসহ কিছু টেকনিক্যাল প্রয়োজনেই শুটিং করতে হয়েছে ভারতে।

কোরবানির ঈদে আপনার সিনেমা মুক্তির হ্যাটট্রিক হলো এবার। আপনার অনুভূতি কেমন?
আমি আগে থেকেই চাচ্ছিলাম হ্যাটট্রিকটা যেন একটা বড় কিছু দিয়ে হয়। আল্লাহর রহমতে সেটা হয়েছে। আমি খুশি, আমার চাওয়া পূরণ হয়েছে বলে। ইনশা আল্লাহ তুফান ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বড় হিট হবে।

পরিচালক হিসেবে আপনার দৃষ্টিতে অভিনয়ে কারও কোনো কমতি ছিল কি না, কিংবা কে বেশি ভালো করলেন?
কারও মাঝেই কোনো কমতি ছিল না। প্রত্যেকেই তাঁর সেরাটা দিয়েছেন। আর সে কারণেই আমরা একটা ভালো সিনেমা বানাতে পেরেছি।

গত মঙ্গলবার রাতে সপরিবারে তুফান সিনেমা দেখেছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি তুফান সিনেমার প্রশংসা করেছেন। তাঁর এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
এটা তো আমাদের বাংলা সিনেমার জন্য খুবই ইতিবাচক। তিনি স্মার্ট একজন মানুষ। বাংলা সিনেমাকে খুবই ভালোবাসেন। দেশের একজন প্রতিমন্ত্রীর এমন প্রশংসা আমাদের আরও অনুপ্রাণিত করবে ভালো সিনেমা বানাতে।

‘তুফান’ সিনেমায় শাকিব খান। ছবি: সংগৃহীত‘তুফান টু’ বানাবেন বলে শুনলাম?
আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল তুফান টু বানানোর। তবে ঘোষণা দিইনি। আমরা দর্শকের প্রতিক্রিয়াটা আগে জানতে চেয়েছি। অসংখ্য দর্শক সিনেমা দেখে জানতে চাইছেন, তুফান টু কবে আসবে। আসলে গল্পটাও এমন এক জায়গায় গিয়ে শেষ হয়েছে, যেখানে দর্শকের আগ্রহ আরও বেড়েছে। এই আকর্ষণটা খুব জরুরি।

তার মানে তুফান টু-এর গল্প বা চিত্রনাট্য আগে থেকেই তৈরি আছে?
আমাদের স্ক্রিপ্ট রেডি করা। গল্পটাকেও ওভাবেই সাজানো হয়েছে। আমরা আসলে ওয়ার্ল্ড ক্লাস একটা সিনেমা বানাতে চেয়েছি। তাই পরিকল্পনাগুলো আগে থেকেই গুছিয়ে রেখেছি।

তুফান টু-এর গল্প বা শিল্পী কারা থাকছেন?
গল্পটা এখন না বলি। তবে তুফান সিনেমার মূল অভিনয়শিল্পীরা থাকবেন, গল্পের প্রয়োজনে হয়তো কিছু নতুন শিল্পী আসবেন, আবার কেউ কেউ বাদ পড়বেন। তবে পুরো ঘোষণাটা আমরা সময় হলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত