স্বপ্না রেজা

এটা আর অস্বীকার করবার উপায় নেই, সোশ্যাল মিডিয়া তথা ফেসবুকে দৃষ্টি ফেললে বোঝা যায় যে সমাজের লোকজন এখন কী নিয়ে বেশি ভাবছে কিংবা বেশি চিন্তিত। একটা আলোচনার ইস্যু জন্ম নিয়েছে সম্প্রতি জাস্টিন ট্রুডো ও তাঁর স্ত্রীর আলাদা হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে। ট্রুডো ক্ষমতাবান, সুদর্শন, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর জীবনযাপন সুখের ছিল বলে ধারণা প্রচলিত ছিল। এমন এক দম্পতির আচমকা সম্পর্কের টানাপোড়েন যেন অবিশ্বাস্য ঘটনায় দাঁড়িয়ে গেল। অনেক জল্পনা-কল্পনার কারণ হলো। সেই সঙ্গে জনমনে রাজ্যের বিস্ময় আছড়ে পড়ল। বিল গেটস বিশ্বের বিত্তবান ব্যক্তি, অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি প্রচণ্ড ভালোবাসতেন অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফাকে, অথচ তাঁদেরও দাম্পত্য সম্পর্ক টেকেনি। অর্থ, বিত্ত, প্রভাব, ক্ষমতা এবং ভালোবাসার থাকার পরও সম্পর্ক টেকে না। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, নারী বা পুরুষের এই সামাজিক সম্পর্ক আসলে কীসে আটকায়? তবে পুরুষের চাইতে প্রশ্নের তীরটা নারী জাতির প্রতিই বেশি। সামাজিক সম্পর্ক টেকানোর দায়টা নারীরই যেন। যা হোক, সোশ্যাল মিডিয়া যেন ভ্রাম্যমাণ গবেষণাগার। ফেসবুকাররা যে যা পারলেন, নিজের মতো করে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দিয়ে গেলেন। এখানে যে বিষয়টি লক্ষণীয় ছিল তা হলো, প্রচলিত সামাজিক মূল্যবোধ, দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতা অনুসারেই এসব ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে।
নারী তার মেধা, সক্ষমতা ও যোগ্যতাবলে পুরুষের পাশাপাশি অবস্থান নিলেও এই সমাজ এখনো পুরুষশাসিত। কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিতেই নয়, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক নীতিনির্ধারণীতেও নারীকে পুরুষের তুলনায় দুর্বল অবস্থানে রাখা হয়েছে। খুব কৌশলে নারীকে পুরুষের অধীনস্থ করে রাখা হয়েছে। ফলে অধিকার, ন্যায্যতাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারী এখনো বঞ্চনার শিকার, নির্যাতনের শিকার। অহরহ নারী নির্যাতনের ঘটনা অনেক ধরনের বৈষম্য, নারীর প্রতি মর্যাদাহীন গল্পের জন্ম দেয় এবং তা প্রতিনিয়ত। তেমন একটা অবস্থায় নারী ও পুরুষের সামাজিক সম্পর্ক না টেকার বেলায় দোষারোপের ওজনটা নারীর দিকেই বেশি যাবে, সেটাই স্বাভাবিক। সামাজিক বিধিটা এমনভাবেই দণ্ডায়মান। আর তারই ফলে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উত্থাপিত হয় নারীর দিকে বন্দুকের নল তাক করে। যা হোক, সম্পর্কের বেলায় নারী বা পুরুষ কীসে আটকায় বলতে যে যুক্তি ও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে, তা নারী বা পুরুষ কারওর জন্যই মর্যাদাকর নয়, মর্যাদা রক্ষা করে না।
রীতিমতো অসম্মানজনক। পুরুষের টাকা থাকলে কিংবা পুরুষ সুদর্শন হলে কিংবা ক্ষমতাবান হলেই যে নারী তার প্রতি দুর্বল থাকবে, থেকে যাবে—এমন ধারণা পোষণ যথার্থ বা সঠিক নয় এবং সেটা বর্তমান যুগে তো নয়ই। এখানে নারীর মূল্যবোধ, বিবেককে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হয়েছে। এক কথায়, নারী টাকা-পয়সায়, বিত্তে, রূপে এবং ক্ষমতার প্রতি যে দুর্বল, সেটাকেই বোঝানো হয়েছে, যেটা মোটেও কাম্য নয়, যুক্তিসংগত নয়। এটা একধরনের ধৃষ্টতাপূর্ণ অভিমত নিঃসন্দেহে। একই কথা প্রযোজ্য পুরুষের বেলায়ও। দেখা যায়, শিক্ষিত, সুন্দরী ও সম্পদশালী স্ত্রী ঘরে থাকলেও অনেক পুরুষের বহুগামিতা বা নারীপ্রীতি রয়েছে। অন্য নারীর প্রতি তার বেপরোয়া আসক্তি দেখা যায়। সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষার অভাবের পাশাপাশি ব্যক্তির শারীরিক কোনো ত্রুটি এর কারণ হতে পারে। আবার রূপ, গুণ ও অর্থের প্রতি কোনো কোনো নারী বা পুরুষ যে দুর্বল হয় না, তাও কিন্তু নয়। অস্বাভাবিক চাহিদা, লোভ ব্যক্তিকে বিভ্রান্ত করে, বিপথে ঠেলে দেয়।
সম্পর্ক কী—এমন প্রশ্নের নানান জবাব হতে পারে এবং সেটা ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গি, বিশ্বাস ও দর্শনের ওপর ভিত্তি করে। প্রত্যেক ব্যক্তিই স্বতন্ত্র। অর্থাৎ, ভিন্নতা ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে থেকে যায়। বিশেষ করে মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে। ব্যক্তির পরিবেশ বিষয়টিকে প্রভাবিত করে। ফলে সম্পর্ক বিষয়ে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির তফাত থেকে যায়। তবে সাধারণভাবে সম্পর্ককে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির তেমন গভীর যোগাযোগ বোঝায়, যা সম্পূর্ণভাবে একটা সুস্থ, সুষ্ঠু বিশ্বাস প্রক্রিয়ার চর্চার মধ্য দিয়ে রচিত হয়, গভীর হয় এবং বিদ্যমান থাকে। সন্তান প্রসবের পর যদি মায়ের কাছ থেকে সন্তানকে দূরে রাখা হয়, তাহলে মা ও সন্তানের ভেতরে নাড়ির টানের সম্পর্ক দৃশ্যমান হয় না, অনুভূত হয় না। মায়ের ভেতরে একধরনের অনুভূতি জাগলেও সন্তানের ভেতরে তা জাগে না। অনেকেই এটাকে রক্ত সম্পর্কের জন্য দায়ী করে।
নারী ও পুরুষের দাম্পত্য সম্পর্ক হলো একটা সামাজিক চুক্তিভিত্তিক সম্পর্ক, যা কিছু রীতিনীতি ও কাগজকলমে স্বাক্ষরের দ্বারা গ্রথিত হয়। পছন্দ করে বিয়ে কিংবা আলাপ-আলোচনা করে বিয়ে—সব ধরনের বিয়েকে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে সম্পন্ন করতে হয়। আবার সামাজিক রীতিনীতির বাইরে গিয়েও কেউ কেউ এমন সম্পর্কে আবদ্ধ হয়। সেখানে আকাশ-বাতাসকে সাক্ষী মানা হয়।
বিয়ে সম্পর্কের শুরুতে থাকে বিভিন্ন আয়োজন, অনুষ্ঠান। সবটাই থাকে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর। কিন্তু সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার সময় শুধু স্বাক্ষরের প্রয়োজন পড়ে। কেন সম্পর্ক ভেঙে যায়? প্রতিটি সম্পর্ক ভাঙার ক্ষেত্রে থাকে ভিন্ন ভিন্ন কারণ। তবে সাধারণভাবে কারণ হিসেবে যেটা আসে সেটা হলো আস্থা ও বিশ্বাসে ফাটল কিংবা সম্পর্কের মোহ কেটে যাওয়া। সমাজে পরকীয়ার আধিক্য বলে দেয়, নারী ও পুরুষের বিদ্যমান সম্পর্ক থেকে বের হওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে। সামাজিক নৈতিকতা ও শৃঙ্খলাবোধের অভাবই এই প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। মানিয়ে চলা, মেনে চলা সম্ভব হচ্ছে না—এমন অজুহাতও সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার কারণ হিসেবে আসে।
সন্তানসন্ততি হওয়ার পরও নারী ও পুরুষ নিজেদের প্রাপ্তির হিসাব কষতে বসে। কারণ, সমাজটা এখন ব্যক্তিপ্রধান এবং ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এখানে চুলচেরা হিসাব কষা হয়। তবে কামনা-বাসনার বিষয়টি মুখ্য বলে কেউ কেউ মনে করেন। সেই সঙ্গে আধুনিক বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তির প্রচলন ও তার ব্যবহার জীবনকে এতটাই সহজ করে দিয়েছে যে, জীবনের প্রতি ব্যক্তির যত্ন, দায়বোধও কমে গেছে। সহজভাবে সবকিছু পাওয়া, ভোগ করার আচরণ আধুনিক বিশ্বের মস্ত বড় খেসারত।
একটা সময় ছিল, সম্পর্ক বিষয়টা রক্ষণশীল বেড়াজালে আবদ্ধ রাখা হতো। পরিচর্যার বিষয়টি অনুসৃত হতো। আধুনিক বিশ্ব সেই বেড়াজাল থেকে সম্পর্ককে উন্মুক্ত করেছে। দুটো ডানা দিয়েছে। একটুতেই নারী ও পুরুষের ভেতর থেকে সম্পর্ক উড়াল দেয়। অন্যত্র ঠাঁই নেয়। ব্যক্তি যতই তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে, যতই অধিকার বিষয়ে সমাজে আইন প্রণয়ন হচ্ছে, ততই যেন সম্পর্ক ভাঙতে সহজ হচ্ছে। আস্থা, ভরসা ও বিশ্বাসের অভাব—এমন সম্পর্ক রেখে লাভ কী? কিংবা সম্পর্কের ভেতরে একঘেয়েমি চলে আসছে, জীবন ত্যানা-ত্যানা—এমন অজস্র কারণ ও মনোভাব থাকে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পেছনে। রেললাইনের পাশের বস্তিতে একজন নারী ও পুরুষের ভেতরে মানসিকতা যেমন থাকে, তেমনই থাকে অভিজাত এলাকার নারী ও পুরুষের মধ্যে। এই সম্পর্ক এক বছরে যেমন ভেঙে যায়, তেমনি ভাঙতে বিশ, তিরিশ, চল্লিশ বছরও লেগে যায়।
দুটি ভিন্ন সত্তার মানুষ এক বিন্দুতে থেকে চলাটা কিন্তু ওই দুই ব্যক্তির চাওয়া ও পাওয়ার ওপর নির্ভর করে। তারা কী চাইবে, কী পাবে—এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। অন্য কারওর অধিকার নেই সে বিষয়ে কথা বলার। এখানে যেকোনো সুস্থ সম্পর্কই হলো সভ্যতার অন্যতম সামাজিক আচরণ, যা সভ্যতাকে টিকে থাকতে সহায়তা করে, সুশৃঙ্খল করে। পরিশেষে বলব, পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সঙ্গে তুলনা করে আমাদের সামাজিক সম্পর্কের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ প্রদান করা সমীচীন নয় কোনোভাবেই। বীজ বপনের পর যেমন বৃক্ষের যত্ন লাগে, বেড়ে উঠতে জায়গার প্রয়োজন হয়, ঠিক সম্পর্কের বেলায়ও যত্ন লাগে, জায়গার প্রয়োজন হয়। কীসে আটকায় না, কীসে মজবুত ও বিস্মৃত হয়, সেই অনুসন্ধান করলে ব্যক্তির ভেতরকার ঝামেলা দূর হয়।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক

এটা আর অস্বীকার করবার উপায় নেই, সোশ্যাল মিডিয়া তথা ফেসবুকে দৃষ্টি ফেললে বোঝা যায় যে সমাজের লোকজন এখন কী নিয়ে বেশি ভাবছে কিংবা বেশি চিন্তিত। একটা আলোচনার ইস্যু জন্ম নিয়েছে সম্প্রতি জাস্টিন ট্রুডো ও তাঁর স্ত্রীর আলাদা হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে। ট্রুডো ক্ষমতাবান, সুদর্শন, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর জীবনযাপন সুখের ছিল বলে ধারণা প্রচলিত ছিল। এমন এক দম্পতির আচমকা সম্পর্কের টানাপোড়েন যেন অবিশ্বাস্য ঘটনায় দাঁড়িয়ে গেল। অনেক জল্পনা-কল্পনার কারণ হলো। সেই সঙ্গে জনমনে রাজ্যের বিস্ময় আছড়ে পড়ল। বিল গেটস বিশ্বের বিত্তবান ব্যক্তি, অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি প্রচণ্ড ভালোবাসতেন অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফাকে, অথচ তাঁদেরও দাম্পত্য সম্পর্ক টেকেনি। অর্থ, বিত্ত, প্রভাব, ক্ষমতা এবং ভালোবাসার থাকার পরও সম্পর্ক টেকে না। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, নারী বা পুরুষের এই সামাজিক সম্পর্ক আসলে কীসে আটকায়? তবে পুরুষের চাইতে প্রশ্নের তীরটা নারী জাতির প্রতিই বেশি। সামাজিক সম্পর্ক টেকানোর দায়টা নারীরই যেন। যা হোক, সোশ্যাল মিডিয়া যেন ভ্রাম্যমাণ গবেষণাগার। ফেসবুকাররা যে যা পারলেন, নিজের মতো করে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দিয়ে গেলেন। এখানে যে বিষয়টি লক্ষণীয় ছিল তা হলো, প্রচলিত সামাজিক মূল্যবোধ, দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতা অনুসারেই এসব ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে।
নারী তার মেধা, সক্ষমতা ও যোগ্যতাবলে পুরুষের পাশাপাশি অবস্থান নিলেও এই সমাজ এখনো পুরুষশাসিত। কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিতেই নয়, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক নীতিনির্ধারণীতেও নারীকে পুরুষের তুলনায় দুর্বল অবস্থানে রাখা হয়েছে। খুব কৌশলে নারীকে পুরুষের অধীনস্থ করে রাখা হয়েছে। ফলে অধিকার, ন্যায্যতাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারী এখনো বঞ্চনার শিকার, নির্যাতনের শিকার। অহরহ নারী নির্যাতনের ঘটনা অনেক ধরনের বৈষম্য, নারীর প্রতি মর্যাদাহীন গল্পের জন্ম দেয় এবং তা প্রতিনিয়ত। তেমন একটা অবস্থায় নারী ও পুরুষের সামাজিক সম্পর্ক না টেকার বেলায় দোষারোপের ওজনটা নারীর দিকেই বেশি যাবে, সেটাই স্বাভাবিক। সামাজিক বিধিটা এমনভাবেই দণ্ডায়মান। আর তারই ফলে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উত্থাপিত হয় নারীর দিকে বন্দুকের নল তাক করে। যা হোক, সম্পর্কের বেলায় নারী বা পুরুষ কীসে আটকায় বলতে যে যুক্তি ও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে, তা নারী বা পুরুষ কারওর জন্যই মর্যাদাকর নয়, মর্যাদা রক্ষা করে না।
রীতিমতো অসম্মানজনক। পুরুষের টাকা থাকলে কিংবা পুরুষ সুদর্শন হলে কিংবা ক্ষমতাবান হলেই যে নারী তার প্রতি দুর্বল থাকবে, থেকে যাবে—এমন ধারণা পোষণ যথার্থ বা সঠিক নয় এবং সেটা বর্তমান যুগে তো নয়ই। এখানে নারীর মূল্যবোধ, বিবেককে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হয়েছে। এক কথায়, নারী টাকা-পয়সায়, বিত্তে, রূপে এবং ক্ষমতার প্রতি যে দুর্বল, সেটাকেই বোঝানো হয়েছে, যেটা মোটেও কাম্য নয়, যুক্তিসংগত নয়। এটা একধরনের ধৃষ্টতাপূর্ণ অভিমত নিঃসন্দেহে। একই কথা প্রযোজ্য পুরুষের বেলায়ও। দেখা যায়, শিক্ষিত, সুন্দরী ও সম্পদশালী স্ত্রী ঘরে থাকলেও অনেক পুরুষের বহুগামিতা বা নারীপ্রীতি রয়েছে। অন্য নারীর প্রতি তার বেপরোয়া আসক্তি দেখা যায়। সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষার অভাবের পাশাপাশি ব্যক্তির শারীরিক কোনো ত্রুটি এর কারণ হতে পারে। আবার রূপ, গুণ ও অর্থের প্রতি কোনো কোনো নারী বা পুরুষ যে দুর্বল হয় না, তাও কিন্তু নয়। অস্বাভাবিক চাহিদা, লোভ ব্যক্তিকে বিভ্রান্ত করে, বিপথে ঠেলে দেয়।
সম্পর্ক কী—এমন প্রশ্নের নানান জবাব হতে পারে এবং সেটা ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গি, বিশ্বাস ও দর্শনের ওপর ভিত্তি করে। প্রত্যেক ব্যক্তিই স্বতন্ত্র। অর্থাৎ, ভিন্নতা ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে থেকে যায়। বিশেষ করে মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে। ব্যক্তির পরিবেশ বিষয়টিকে প্রভাবিত করে। ফলে সম্পর্ক বিষয়ে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির তফাত থেকে যায়। তবে সাধারণভাবে সম্পর্ককে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির তেমন গভীর যোগাযোগ বোঝায়, যা সম্পূর্ণভাবে একটা সুস্থ, সুষ্ঠু বিশ্বাস প্রক্রিয়ার চর্চার মধ্য দিয়ে রচিত হয়, গভীর হয় এবং বিদ্যমান থাকে। সন্তান প্রসবের পর যদি মায়ের কাছ থেকে সন্তানকে দূরে রাখা হয়, তাহলে মা ও সন্তানের ভেতরে নাড়ির টানের সম্পর্ক দৃশ্যমান হয় না, অনুভূত হয় না। মায়ের ভেতরে একধরনের অনুভূতি জাগলেও সন্তানের ভেতরে তা জাগে না। অনেকেই এটাকে রক্ত সম্পর্কের জন্য দায়ী করে।
নারী ও পুরুষের দাম্পত্য সম্পর্ক হলো একটা সামাজিক চুক্তিভিত্তিক সম্পর্ক, যা কিছু রীতিনীতি ও কাগজকলমে স্বাক্ষরের দ্বারা গ্রথিত হয়। পছন্দ করে বিয়ে কিংবা আলাপ-আলোচনা করে বিয়ে—সব ধরনের বিয়েকে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে সম্পন্ন করতে হয়। আবার সামাজিক রীতিনীতির বাইরে গিয়েও কেউ কেউ এমন সম্পর্কে আবদ্ধ হয়। সেখানে আকাশ-বাতাসকে সাক্ষী মানা হয়।
বিয়ে সম্পর্কের শুরুতে থাকে বিভিন্ন আয়োজন, অনুষ্ঠান। সবটাই থাকে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর। কিন্তু সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার সময় শুধু স্বাক্ষরের প্রয়োজন পড়ে। কেন সম্পর্ক ভেঙে যায়? প্রতিটি সম্পর্ক ভাঙার ক্ষেত্রে থাকে ভিন্ন ভিন্ন কারণ। তবে সাধারণভাবে কারণ হিসেবে যেটা আসে সেটা হলো আস্থা ও বিশ্বাসে ফাটল কিংবা সম্পর্কের মোহ কেটে যাওয়া। সমাজে পরকীয়ার আধিক্য বলে দেয়, নারী ও পুরুষের বিদ্যমান সম্পর্ক থেকে বের হওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে। সামাজিক নৈতিকতা ও শৃঙ্খলাবোধের অভাবই এই প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। মানিয়ে চলা, মেনে চলা সম্ভব হচ্ছে না—এমন অজুহাতও সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার কারণ হিসেবে আসে।
সন্তানসন্ততি হওয়ার পরও নারী ও পুরুষ নিজেদের প্রাপ্তির হিসাব কষতে বসে। কারণ, সমাজটা এখন ব্যক্তিপ্রধান এবং ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এখানে চুলচেরা হিসাব কষা হয়। তবে কামনা-বাসনার বিষয়টি মুখ্য বলে কেউ কেউ মনে করেন। সেই সঙ্গে আধুনিক বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তির প্রচলন ও তার ব্যবহার জীবনকে এতটাই সহজ করে দিয়েছে যে, জীবনের প্রতি ব্যক্তির যত্ন, দায়বোধও কমে গেছে। সহজভাবে সবকিছু পাওয়া, ভোগ করার আচরণ আধুনিক বিশ্বের মস্ত বড় খেসারত।
একটা সময় ছিল, সম্পর্ক বিষয়টা রক্ষণশীল বেড়াজালে আবদ্ধ রাখা হতো। পরিচর্যার বিষয়টি অনুসৃত হতো। আধুনিক বিশ্ব সেই বেড়াজাল থেকে সম্পর্ককে উন্মুক্ত করেছে। দুটো ডানা দিয়েছে। একটুতেই নারী ও পুরুষের ভেতর থেকে সম্পর্ক উড়াল দেয়। অন্যত্র ঠাঁই নেয়। ব্যক্তি যতই তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে, যতই অধিকার বিষয়ে সমাজে আইন প্রণয়ন হচ্ছে, ততই যেন সম্পর্ক ভাঙতে সহজ হচ্ছে। আস্থা, ভরসা ও বিশ্বাসের অভাব—এমন সম্পর্ক রেখে লাভ কী? কিংবা সম্পর্কের ভেতরে একঘেয়েমি চলে আসছে, জীবন ত্যানা-ত্যানা—এমন অজস্র কারণ ও মনোভাব থাকে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পেছনে। রেললাইনের পাশের বস্তিতে একজন নারী ও পুরুষের ভেতরে মানসিকতা যেমন থাকে, তেমনই থাকে অভিজাত এলাকার নারী ও পুরুষের মধ্যে। এই সম্পর্ক এক বছরে যেমন ভেঙে যায়, তেমনি ভাঙতে বিশ, তিরিশ, চল্লিশ বছরও লেগে যায়।
দুটি ভিন্ন সত্তার মানুষ এক বিন্দুতে থেকে চলাটা কিন্তু ওই দুই ব্যক্তির চাওয়া ও পাওয়ার ওপর নির্ভর করে। তারা কী চাইবে, কী পাবে—এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। অন্য কারওর অধিকার নেই সে বিষয়ে কথা বলার। এখানে যেকোনো সুস্থ সম্পর্কই হলো সভ্যতার অন্যতম সামাজিক আচরণ, যা সভ্যতাকে টিকে থাকতে সহায়তা করে, সুশৃঙ্খল করে। পরিশেষে বলব, পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সঙ্গে তুলনা করে আমাদের সামাজিক সম্পর্কের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ প্রদান করা সমীচীন নয় কোনোভাবেই। বীজ বপনের পর যেমন বৃক্ষের যত্ন লাগে, বেড়ে উঠতে জায়গার প্রয়োজন হয়, ঠিক সম্পর্কের বেলায়ও যত্ন লাগে, জায়গার প্রয়োজন হয়। কীসে আটকায় না, কীসে মজবুত ও বিস্মৃত হয়, সেই অনুসন্ধান করলে ব্যক্তির ভেতরকার ঝামেলা দূর হয়।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক
স্বপ্না রেজা

এটা আর অস্বীকার করবার উপায় নেই, সোশ্যাল মিডিয়া তথা ফেসবুকে দৃষ্টি ফেললে বোঝা যায় যে সমাজের লোকজন এখন কী নিয়ে বেশি ভাবছে কিংবা বেশি চিন্তিত। একটা আলোচনার ইস্যু জন্ম নিয়েছে সম্প্রতি জাস্টিন ট্রুডো ও তাঁর স্ত্রীর আলাদা হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে। ট্রুডো ক্ষমতাবান, সুদর্শন, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর জীবনযাপন সুখের ছিল বলে ধারণা প্রচলিত ছিল। এমন এক দম্পতির আচমকা সম্পর্কের টানাপোড়েন যেন অবিশ্বাস্য ঘটনায় দাঁড়িয়ে গেল। অনেক জল্পনা-কল্পনার কারণ হলো। সেই সঙ্গে জনমনে রাজ্যের বিস্ময় আছড়ে পড়ল। বিল গেটস বিশ্বের বিত্তবান ব্যক্তি, অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি প্রচণ্ড ভালোবাসতেন অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফাকে, অথচ তাঁদেরও দাম্পত্য সম্পর্ক টেকেনি। অর্থ, বিত্ত, প্রভাব, ক্ষমতা এবং ভালোবাসার থাকার পরও সম্পর্ক টেকে না। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, নারী বা পুরুষের এই সামাজিক সম্পর্ক আসলে কীসে আটকায়? তবে পুরুষের চাইতে প্রশ্নের তীরটা নারী জাতির প্রতিই বেশি। সামাজিক সম্পর্ক টেকানোর দায়টা নারীরই যেন। যা হোক, সোশ্যাল মিডিয়া যেন ভ্রাম্যমাণ গবেষণাগার। ফেসবুকাররা যে যা পারলেন, নিজের মতো করে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দিয়ে গেলেন। এখানে যে বিষয়টি লক্ষণীয় ছিল তা হলো, প্রচলিত সামাজিক মূল্যবোধ, দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতা অনুসারেই এসব ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে।
নারী তার মেধা, সক্ষমতা ও যোগ্যতাবলে পুরুষের পাশাপাশি অবস্থান নিলেও এই সমাজ এখনো পুরুষশাসিত। কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিতেই নয়, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক নীতিনির্ধারণীতেও নারীকে পুরুষের তুলনায় দুর্বল অবস্থানে রাখা হয়েছে। খুব কৌশলে নারীকে পুরুষের অধীনস্থ করে রাখা হয়েছে। ফলে অধিকার, ন্যায্যতাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারী এখনো বঞ্চনার শিকার, নির্যাতনের শিকার। অহরহ নারী নির্যাতনের ঘটনা অনেক ধরনের বৈষম্য, নারীর প্রতি মর্যাদাহীন গল্পের জন্ম দেয় এবং তা প্রতিনিয়ত। তেমন একটা অবস্থায় নারী ও পুরুষের সামাজিক সম্পর্ক না টেকার বেলায় দোষারোপের ওজনটা নারীর দিকেই বেশি যাবে, সেটাই স্বাভাবিক। সামাজিক বিধিটা এমনভাবেই দণ্ডায়মান। আর তারই ফলে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উত্থাপিত হয় নারীর দিকে বন্দুকের নল তাক করে। যা হোক, সম্পর্কের বেলায় নারী বা পুরুষ কীসে আটকায় বলতে যে যুক্তি ও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে, তা নারী বা পুরুষ কারওর জন্যই মর্যাদাকর নয়, মর্যাদা রক্ষা করে না।
রীতিমতো অসম্মানজনক। পুরুষের টাকা থাকলে কিংবা পুরুষ সুদর্শন হলে কিংবা ক্ষমতাবান হলেই যে নারী তার প্রতি দুর্বল থাকবে, থেকে যাবে—এমন ধারণা পোষণ যথার্থ বা সঠিক নয় এবং সেটা বর্তমান যুগে তো নয়ই। এখানে নারীর মূল্যবোধ, বিবেককে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হয়েছে। এক কথায়, নারী টাকা-পয়সায়, বিত্তে, রূপে এবং ক্ষমতার প্রতি যে দুর্বল, সেটাকেই বোঝানো হয়েছে, যেটা মোটেও কাম্য নয়, যুক্তিসংগত নয়। এটা একধরনের ধৃষ্টতাপূর্ণ অভিমত নিঃসন্দেহে। একই কথা প্রযোজ্য পুরুষের বেলায়ও। দেখা যায়, শিক্ষিত, সুন্দরী ও সম্পদশালী স্ত্রী ঘরে থাকলেও অনেক পুরুষের বহুগামিতা বা নারীপ্রীতি রয়েছে। অন্য নারীর প্রতি তার বেপরোয়া আসক্তি দেখা যায়। সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষার অভাবের পাশাপাশি ব্যক্তির শারীরিক কোনো ত্রুটি এর কারণ হতে পারে। আবার রূপ, গুণ ও অর্থের প্রতি কোনো কোনো নারী বা পুরুষ যে দুর্বল হয় না, তাও কিন্তু নয়। অস্বাভাবিক চাহিদা, লোভ ব্যক্তিকে বিভ্রান্ত করে, বিপথে ঠেলে দেয়।
সম্পর্ক কী—এমন প্রশ্নের নানান জবাব হতে পারে এবং সেটা ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গি, বিশ্বাস ও দর্শনের ওপর ভিত্তি করে। প্রত্যেক ব্যক্তিই স্বতন্ত্র। অর্থাৎ, ভিন্নতা ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে থেকে যায়। বিশেষ করে মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে। ব্যক্তির পরিবেশ বিষয়টিকে প্রভাবিত করে। ফলে সম্পর্ক বিষয়ে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির তফাত থেকে যায়। তবে সাধারণভাবে সম্পর্ককে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির তেমন গভীর যোগাযোগ বোঝায়, যা সম্পূর্ণভাবে একটা সুস্থ, সুষ্ঠু বিশ্বাস প্রক্রিয়ার চর্চার মধ্য দিয়ে রচিত হয়, গভীর হয় এবং বিদ্যমান থাকে। সন্তান প্রসবের পর যদি মায়ের কাছ থেকে সন্তানকে দূরে রাখা হয়, তাহলে মা ও সন্তানের ভেতরে নাড়ির টানের সম্পর্ক দৃশ্যমান হয় না, অনুভূত হয় না। মায়ের ভেতরে একধরনের অনুভূতি জাগলেও সন্তানের ভেতরে তা জাগে না। অনেকেই এটাকে রক্ত সম্পর্কের জন্য দায়ী করে।
নারী ও পুরুষের দাম্পত্য সম্পর্ক হলো একটা সামাজিক চুক্তিভিত্তিক সম্পর্ক, যা কিছু রীতিনীতি ও কাগজকলমে স্বাক্ষরের দ্বারা গ্রথিত হয়। পছন্দ করে বিয়ে কিংবা আলাপ-আলোচনা করে বিয়ে—সব ধরনের বিয়েকে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে সম্পন্ন করতে হয়। আবার সামাজিক রীতিনীতির বাইরে গিয়েও কেউ কেউ এমন সম্পর্কে আবদ্ধ হয়। সেখানে আকাশ-বাতাসকে সাক্ষী মানা হয়।
বিয়ে সম্পর্কের শুরুতে থাকে বিভিন্ন আয়োজন, অনুষ্ঠান। সবটাই থাকে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর। কিন্তু সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার সময় শুধু স্বাক্ষরের প্রয়োজন পড়ে। কেন সম্পর্ক ভেঙে যায়? প্রতিটি সম্পর্ক ভাঙার ক্ষেত্রে থাকে ভিন্ন ভিন্ন কারণ। তবে সাধারণভাবে কারণ হিসেবে যেটা আসে সেটা হলো আস্থা ও বিশ্বাসে ফাটল কিংবা সম্পর্কের মোহ কেটে যাওয়া। সমাজে পরকীয়ার আধিক্য বলে দেয়, নারী ও পুরুষের বিদ্যমান সম্পর্ক থেকে বের হওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে। সামাজিক নৈতিকতা ও শৃঙ্খলাবোধের অভাবই এই প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। মানিয়ে চলা, মেনে চলা সম্ভব হচ্ছে না—এমন অজুহাতও সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার কারণ হিসেবে আসে।
সন্তানসন্ততি হওয়ার পরও নারী ও পুরুষ নিজেদের প্রাপ্তির হিসাব কষতে বসে। কারণ, সমাজটা এখন ব্যক্তিপ্রধান এবং ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এখানে চুলচেরা হিসাব কষা হয়। তবে কামনা-বাসনার বিষয়টি মুখ্য বলে কেউ কেউ মনে করেন। সেই সঙ্গে আধুনিক বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তির প্রচলন ও তার ব্যবহার জীবনকে এতটাই সহজ করে দিয়েছে যে, জীবনের প্রতি ব্যক্তির যত্ন, দায়বোধও কমে গেছে। সহজভাবে সবকিছু পাওয়া, ভোগ করার আচরণ আধুনিক বিশ্বের মস্ত বড় খেসারত।
একটা সময় ছিল, সম্পর্ক বিষয়টা রক্ষণশীল বেড়াজালে আবদ্ধ রাখা হতো। পরিচর্যার বিষয়টি অনুসৃত হতো। আধুনিক বিশ্ব সেই বেড়াজাল থেকে সম্পর্ককে উন্মুক্ত করেছে। দুটো ডানা দিয়েছে। একটুতেই নারী ও পুরুষের ভেতর থেকে সম্পর্ক উড়াল দেয়। অন্যত্র ঠাঁই নেয়। ব্যক্তি যতই তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে, যতই অধিকার বিষয়ে সমাজে আইন প্রণয়ন হচ্ছে, ততই যেন সম্পর্ক ভাঙতে সহজ হচ্ছে। আস্থা, ভরসা ও বিশ্বাসের অভাব—এমন সম্পর্ক রেখে লাভ কী? কিংবা সম্পর্কের ভেতরে একঘেয়েমি চলে আসছে, জীবন ত্যানা-ত্যানা—এমন অজস্র কারণ ও মনোভাব থাকে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পেছনে। রেললাইনের পাশের বস্তিতে একজন নারী ও পুরুষের ভেতরে মানসিকতা যেমন থাকে, তেমনই থাকে অভিজাত এলাকার নারী ও পুরুষের মধ্যে। এই সম্পর্ক এক বছরে যেমন ভেঙে যায়, তেমনি ভাঙতে বিশ, তিরিশ, চল্লিশ বছরও লেগে যায়।
দুটি ভিন্ন সত্তার মানুষ এক বিন্দুতে থেকে চলাটা কিন্তু ওই দুই ব্যক্তির চাওয়া ও পাওয়ার ওপর নির্ভর করে। তারা কী চাইবে, কী পাবে—এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। অন্য কারওর অধিকার নেই সে বিষয়ে কথা বলার। এখানে যেকোনো সুস্থ সম্পর্কই হলো সভ্যতার অন্যতম সামাজিক আচরণ, যা সভ্যতাকে টিকে থাকতে সহায়তা করে, সুশৃঙ্খল করে। পরিশেষে বলব, পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সঙ্গে তুলনা করে আমাদের সামাজিক সম্পর্কের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ প্রদান করা সমীচীন নয় কোনোভাবেই। বীজ বপনের পর যেমন বৃক্ষের যত্ন লাগে, বেড়ে উঠতে জায়গার প্রয়োজন হয়, ঠিক সম্পর্কের বেলায়ও যত্ন লাগে, জায়গার প্রয়োজন হয়। কীসে আটকায় না, কীসে মজবুত ও বিস্মৃত হয়, সেই অনুসন্ধান করলে ব্যক্তির ভেতরকার ঝামেলা দূর হয়।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক

এটা আর অস্বীকার করবার উপায় নেই, সোশ্যাল মিডিয়া তথা ফেসবুকে দৃষ্টি ফেললে বোঝা যায় যে সমাজের লোকজন এখন কী নিয়ে বেশি ভাবছে কিংবা বেশি চিন্তিত। একটা আলোচনার ইস্যু জন্ম নিয়েছে সম্প্রতি জাস্টিন ট্রুডো ও তাঁর স্ত্রীর আলাদা হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে। ট্রুডো ক্ষমতাবান, সুদর্শন, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর জীবনযাপন সুখের ছিল বলে ধারণা প্রচলিত ছিল। এমন এক দম্পতির আচমকা সম্পর্কের টানাপোড়েন যেন অবিশ্বাস্য ঘটনায় দাঁড়িয়ে গেল। অনেক জল্পনা-কল্পনার কারণ হলো। সেই সঙ্গে জনমনে রাজ্যের বিস্ময় আছড়ে পড়ল। বিল গেটস বিশ্বের বিত্তবান ব্যক্তি, অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি প্রচণ্ড ভালোবাসতেন অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফাকে, অথচ তাঁদেরও দাম্পত্য সম্পর্ক টেকেনি। অর্থ, বিত্ত, প্রভাব, ক্ষমতা এবং ভালোবাসার থাকার পরও সম্পর্ক টেকে না। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, নারী বা পুরুষের এই সামাজিক সম্পর্ক আসলে কীসে আটকায়? তবে পুরুষের চাইতে প্রশ্নের তীরটা নারী জাতির প্রতিই বেশি। সামাজিক সম্পর্ক টেকানোর দায়টা নারীরই যেন। যা হোক, সোশ্যাল মিডিয়া যেন ভ্রাম্যমাণ গবেষণাগার। ফেসবুকাররা যে যা পারলেন, নিজের মতো করে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দিয়ে গেলেন। এখানে যে বিষয়টি লক্ষণীয় ছিল তা হলো, প্রচলিত সামাজিক মূল্যবোধ, দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতা অনুসারেই এসব ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে।
নারী তার মেধা, সক্ষমতা ও যোগ্যতাবলে পুরুষের পাশাপাশি অবস্থান নিলেও এই সমাজ এখনো পুরুষশাসিত। কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিতেই নয়, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক নীতিনির্ধারণীতেও নারীকে পুরুষের তুলনায় দুর্বল অবস্থানে রাখা হয়েছে। খুব কৌশলে নারীকে পুরুষের অধীনস্থ করে রাখা হয়েছে। ফলে অধিকার, ন্যায্যতাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারী এখনো বঞ্চনার শিকার, নির্যাতনের শিকার। অহরহ নারী নির্যাতনের ঘটনা অনেক ধরনের বৈষম্য, নারীর প্রতি মর্যাদাহীন গল্পের জন্ম দেয় এবং তা প্রতিনিয়ত। তেমন একটা অবস্থায় নারী ও পুরুষের সামাজিক সম্পর্ক না টেকার বেলায় দোষারোপের ওজনটা নারীর দিকেই বেশি যাবে, সেটাই স্বাভাবিক। সামাজিক বিধিটা এমনভাবেই দণ্ডায়মান। আর তারই ফলে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উত্থাপিত হয় নারীর দিকে বন্দুকের নল তাক করে। যা হোক, সম্পর্কের বেলায় নারী বা পুরুষ কীসে আটকায় বলতে যে যুক্তি ও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে, তা নারী বা পুরুষ কারওর জন্যই মর্যাদাকর নয়, মর্যাদা রক্ষা করে না।
রীতিমতো অসম্মানজনক। পুরুষের টাকা থাকলে কিংবা পুরুষ সুদর্শন হলে কিংবা ক্ষমতাবান হলেই যে নারী তার প্রতি দুর্বল থাকবে, থেকে যাবে—এমন ধারণা পোষণ যথার্থ বা সঠিক নয় এবং সেটা বর্তমান যুগে তো নয়ই। এখানে নারীর মূল্যবোধ, বিবেককে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হয়েছে। এক কথায়, নারী টাকা-পয়সায়, বিত্তে, রূপে এবং ক্ষমতার প্রতি যে দুর্বল, সেটাকেই বোঝানো হয়েছে, যেটা মোটেও কাম্য নয়, যুক্তিসংগত নয়। এটা একধরনের ধৃষ্টতাপূর্ণ অভিমত নিঃসন্দেহে। একই কথা প্রযোজ্য পুরুষের বেলায়ও। দেখা যায়, শিক্ষিত, সুন্দরী ও সম্পদশালী স্ত্রী ঘরে থাকলেও অনেক পুরুষের বহুগামিতা বা নারীপ্রীতি রয়েছে। অন্য নারীর প্রতি তার বেপরোয়া আসক্তি দেখা যায়। সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষার অভাবের পাশাপাশি ব্যক্তির শারীরিক কোনো ত্রুটি এর কারণ হতে পারে। আবার রূপ, গুণ ও অর্থের প্রতি কোনো কোনো নারী বা পুরুষ যে দুর্বল হয় না, তাও কিন্তু নয়। অস্বাভাবিক চাহিদা, লোভ ব্যক্তিকে বিভ্রান্ত করে, বিপথে ঠেলে দেয়।
সম্পর্ক কী—এমন প্রশ্নের নানান জবাব হতে পারে এবং সেটা ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গি, বিশ্বাস ও দর্শনের ওপর ভিত্তি করে। প্রত্যেক ব্যক্তিই স্বতন্ত্র। অর্থাৎ, ভিন্নতা ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে থেকে যায়। বিশেষ করে মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে। ব্যক্তির পরিবেশ বিষয়টিকে প্রভাবিত করে। ফলে সম্পর্ক বিষয়ে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির তফাত থেকে যায়। তবে সাধারণভাবে সম্পর্ককে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির তেমন গভীর যোগাযোগ বোঝায়, যা সম্পূর্ণভাবে একটা সুস্থ, সুষ্ঠু বিশ্বাস প্রক্রিয়ার চর্চার মধ্য দিয়ে রচিত হয়, গভীর হয় এবং বিদ্যমান থাকে। সন্তান প্রসবের পর যদি মায়ের কাছ থেকে সন্তানকে দূরে রাখা হয়, তাহলে মা ও সন্তানের ভেতরে নাড়ির টানের সম্পর্ক দৃশ্যমান হয় না, অনুভূত হয় না। মায়ের ভেতরে একধরনের অনুভূতি জাগলেও সন্তানের ভেতরে তা জাগে না। অনেকেই এটাকে রক্ত সম্পর্কের জন্য দায়ী করে।
নারী ও পুরুষের দাম্পত্য সম্পর্ক হলো একটা সামাজিক চুক্তিভিত্তিক সম্পর্ক, যা কিছু রীতিনীতি ও কাগজকলমে স্বাক্ষরের দ্বারা গ্রথিত হয়। পছন্দ করে বিয়ে কিংবা আলাপ-আলোচনা করে বিয়ে—সব ধরনের বিয়েকে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে সম্পন্ন করতে হয়। আবার সামাজিক রীতিনীতির বাইরে গিয়েও কেউ কেউ এমন সম্পর্কে আবদ্ধ হয়। সেখানে আকাশ-বাতাসকে সাক্ষী মানা হয়।
বিয়ে সম্পর্কের শুরুতে থাকে বিভিন্ন আয়োজন, অনুষ্ঠান। সবটাই থাকে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর। কিন্তু সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার সময় শুধু স্বাক্ষরের প্রয়োজন পড়ে। কেন সম্পর্ক ভেঙে যায়? প্রতিটি সম্পর্ক ভাঙার ক্ষেত্রে থাকে ভিন্ন ভিন্ন কারণ। তবে সাধারণভাবে কারণ হিসেবে যেটা আসে সেটা হলো আস্থা ও বিশ্বাসে ফাটল কিংবা সম্পর্কের মোহ কেটে যাওয়া। সমাজে পরকীয়ার আধিক্য বলে দেয়, নারী ও পুরুষের বিদ্যমান সম্পর্ক থেকে বের হওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে। সামাজিক নৈতিকতা ও শৃঙ্খলাবোধের অভাবই এই প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। মানিয়ে চলা, মেনে চলা সম্ভব হচ্ছে না—এমন অজুহাতও সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার কারণ হিসেবে আসে।
সন্তানসন্ততি হওয়ার পরও নারী ও পুরুষ নিজেদের প্রাপ্তির হিসাব কষতে বসে। কারণ, সমাজটা এখন ব্যক্তিপ্রধান এবং ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এখানে চুলচেরা হিসাব কষা হয়। তবে কামনা-বাসনার বিষয়টি মুখ্য বলে কেউ কেউ মনে করেন। সেই সঙ্গে আধুনিক বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তির প্রচলন ও তার ব্যবহার জীবনকে এতটাই সহজ করে দিয়েছে যে, জীবনের প্রতি ব্যক্তির যত্ন, দায়বোধও কমে গেছে। সহজভাবে সবকিছু পাওয়া, ভোগ করার আচরণ আধুনিক বিশ্বের মস্ত বড় খেসারত।
একটা সময় ছিল, সম্পর্ক বিষয়টা রক্ষণশীল বেড়াজালে আবদ্ধ রাখা হতো। পরিচর্যার বিষয়টি অনুসৃত হতো। আধুনিক বিশ্ব সেই বেড়াজাল থেকে সম্পর্ককে উন্মুক্ত করেছে। দুটো ডানা দিয়েছে। একটুতেই নারী ও পুরুষের ভেতর থেকে সম্পর্ক উড়াল দেয়। অন্যত্র ঠাঁই নেয়। ব্যক্তি যতই তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে, যতই অধিকার বিষয়ে সমাজে আইন প্রণয়ন হচ্ছে, ততই যেন সম্পর্ক ভাঙতে সহজ হচ্ছে। আস্থা, ভরসা ও বিশ্বাসের অভাব—এমন সম্পর্ক রেখে লাভ কী? কিংবা সম্পর্কের ভেতরে একঘেয়েমি চলে আসছে, জীবন ত্যানা-ত্যানা—এমন অজস্র কারণ ও মনোভাব থাকে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পেছনে। রেললাইনের পাশের বস্তিতে একজন নারী ও পুরুষের ভেতরে মানসিকতা যেমন থাকে, তেমনই থাকে অভিজাত এলাকার নারী ও পুরুষের মধ্যে। এই সম্পর্ক এক বছরে যেমন ভেঙে যায়, তেমনি ভাঙতে বিশ, তিরিশ, চল্লিশ বছরও লেগে যায়।
দুটি ভিন্ন সত্তার মানুষ এক বিন্দুতে থেকে চলাটা কিন্তু ওই দুই ব্যক্তির চাওয়া ও পাওয়ার ওপর নির্ভর করে। তারা কী চাইবে, কী পাবে—এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। অন্য কারওর অধিকার নেই সে বিষয়ে কথা বলার। এখানে যেকোনো সুস্থ সম্পর্কই হলো সভ্যতার অন্যতম সামাজিক আচরণ, যা সভ্যতাকে টিকে থাকতে সহায়তা করে, সুশৃঙ্খল করে। পরিশেষে বলব, পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সঙ্গে তুলনা করে আমাদের সামাজিক সম্পর্কের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ প্রদান করা সমীচীন নয় কোনোভাবেই। বীজ বপনের পর যেমন বৃক্ষের যত্ন লাগে, বেড়ে উঠতে জায়গার প্রয়োজন হয়, ঠিক সম্পর্কের বেলায়ও যত্ন লাগে, জায়গার প্রয়োজন হয়। কীসে আটকায় না, কীসে মজবুত ও বিস্মৃত হয়, সেই অনুসন্ধান করলে ব্যক্তির ভেতরকার ঝামেলা দূর হয়।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

এটা আর অস্বীকার করবার উপায় নেই, সোশ্যাল মিডিয়া তথা ফেসবুকে দৃষ্টি ফেললে বোঝা যায় যে সমাজের লোকজন এখন কী নিয়ে বেশি ভাবছে কিংবা বেশি চিন্তিত। একটা আলোচনার ইস্যু জন্ম নিয়েছে সম্প্রতি জাস্টিন ট্রুডো ও তাঁর স্ত্রীর আলাদা হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে।
১৮ আগস্ট ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

এটা আর অস্বীকার করবার উপায় নেই, সোশ্যাল মিডিয়া তথা ফেসবুকে দৃষ্টি ফেললে বোঝা যায় যে সমাজের লোকজন এখন কী নিয়ে বেশি ভাবছে কিংবা বেশি চিন্তিত। একটা আলোচনার ইস্যু জন্ম নিয়েছে সম্প্রতি জাস্টিন ট্রুডো ও তাঁর স্ত্রীর আলাদা হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে।
১৮ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

এটা আর অস্বীকার করবার উপায় নেই, সোশ্যাল মিডিয়া তথা ফেসবুকে দৃষ্টি ফেললে বোঝা যায় যে সমাজের লোকজন এখন কী নিয়ে বেশি ভাবছে কিংবা বেশি চিন্তিত। একটা আলোচনার ইস্যু জন্ম নিয়েছে সম্প্রতি জাস্টিন ট্রুডো ও তাঁর স্ত্রীর আলাদা হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে।
১৮ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

এটা আর অস্বীকার করবার উপায় নেই, সোশ্যাল মিডিয়া তথা ফেসবুকে দৃষ্টি ফেললে বোঝা যায় যে সমাজের লোকজন এখন কী নিয়ে বেশি ভাবছে কিংবা বেশি চিন্তিত। একটা আলোচনার ইস্যু জন্ম নিয়েছে সম্প্রতি জাস্টিন ট্রুডো ও তাঁর স্ত্রীর আলাদা হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে।
১৮ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫