Ajker Patrika

পানির অভাবে মরছে রোপণ করা আমন

রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর) 
আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২২, ১২: ৩৫
পানির অভাবে মরছে রোপণ করা আমন

গাজীপুরের শ্রীপুরে পানির অভাবে জমিতে সদ্য রোপণ করা শত শত একর আমনের চারা মারা যাচ্ছে। একদিকে অতিমাত্রার লোডশেডিং অন্যদিকে নেই বৃষ্টির দেখা। কোনোমতে জমি তৈরি করে আমন রোপণ করলেও শেষ পর্যন্ত রক্ষা করতে না পারার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুরুতেই খরার দেখা আর লোডশেডিংয়ের মাঝখানে পড়ে আমন নিয়ে শঙ্কিত উপজেলার প্রান্তিক কৃষকেরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানির অভাবে আমন রোপণ করতে দেরি হচ্ছে। আবার কেউ কেউ এখন পর্যন্ত জমি তৈরি করতে পারছেন না পানির জন্য। কোনো কোনো জমি তৈরি করে আমন রোপণ করলেও সেগুলো শুরুতেই পড়েছে খরায়। কোনো কোনো জমিতে রোপণকৃত ধানের চারা মরে যাচ্ছে। আবার কোনো জমিতে শুধু হালচাষ করে ফেলে রাখা হয়েছে, পানির অভাবে ধান রোপণ করতে পারছেন না।

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা এ বছর আমন ধান নিয়ে বেশ শঙ্কিত রয়েছেন। একদিকে বৃষ্টির দেখা নেই, অন্যদিকে অতিমাত্রার লোডশেডিং। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খেতের আমন ধান।

উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের কৃষক মো. রহমত আলী বলেন, ‘দুই বিঘা জমি কোনোমতে তৈরি করে আপন রোপণ করেছি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। ঠিকমতো বিদ্যুৎও থাকে না। যার কারণে ধান খেতে খরা লেগেছে।

কাওরাইদ ইউনিয়নের গলদাপাড়া গ্রামের কৃষক মো. সোবহান মিয়া বলেন, ‘যে জমিতে গভীর নলকূপ অথবা পাম্প দিয়ে পানি সেচের ব্যবস্থা নেই। আমন সাধারণত বৃষ্টির পানিতে চাষনির্ভর। এ বছর আমন চাষে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। তবুও ফসল তোলা নিয়ে আমি শঙ্কিত।’

বরমী ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামের কৃষক সুলতান মিয়া বলেন, ‘ধান রোপণ করেছি এক সপ্তাহ হলো। লোডশেডিংয়ের কারণে ঠিকমতো সেচ দেওয়া যাচ্ছে না। জমির চারা মরতে শুরু করেছে। বৃষ্টির দেখা নেই অনেক দিন। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের মাথায় হাত পড়বে।’

গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল হক মাদবর বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয় কৃষকদের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানের পানির মোটরের সংস্কার করে দেওয়া হচ্ছে। এ রকম চলতে থাকলে সামনে আরও বড় সমস্যা হবে। এ বছর আমন চাষে অনেক কৃষক আগ্রহ হারাচ্ছেন, তাতে এ বছর আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কমতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যুতের দিকে নজর দিতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর মাওনা জোনাল অফিসের ডিজিএম আহমেদ শাহ্ আল জাবেদ বলেন, ‘বর্তমানে বিদ্যুৎ নির্দিষ্ট নিয়মে চলছে। তবুও কৃষকদের কথা মাথায় রেখে সেচব্যবস্থায় যাতে আমন উৎপাদন ব্যাহত না হয় বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। উপজেলার কৃষিনির্ভর এলাকার জন্য যতটুকু সম্ভব কম লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে।’

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মূয়ীদুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর অন্য বছরের তুলনায় বৃষ্টির পরিমাণ কম। এ ছাড়া অতিমাত্রার লোডশেডিংয়ের জন্য আমন রোপণে সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে কৃষিনির্ভর এলাকায় কম লোডশেডিং দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে ইতিমধ্যে বিনা মূল্যে সার-বীজ ও কীটনাশক দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেঘালয়ে হানিমুনের সময় ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্বামীকে হত্যা, উত্তর প্রদেশে নববধূর আত্মসমর্পণ

ভিকারুননিসার ছাত্রী মেয়েকে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন বাবা, ডুবে প্রাণ গেল দুজনেরই

মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় খুন—কীভাবে এক নববধূ হয়ে উঠলেন হত্যাকারী

হাসিনার মতো মাফিয়াকে বিতাড়িত করেছি, এখন আমরাই বড় মাফিয়া: এনসিপি নেতা জুবাইরুল

কানাডার লেকে বোট উল্টে বাংলাদেশের পাইলট ও গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর মৃত্যু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত