Ajker Patrika

ভারী ট্রাক চলাচলে খানাখন্দ

হোসেন রায়হান, পঞ্চগড়
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ০৮
Thumbnail image

পঞ্চগড়ে ট্রাক ও ট্রাক্টরে করে অতিরিক্ত বালু-পাথর বহন করায় বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। রাস্তার ধুলা উড়ে গিয়ে বসতবাড়িতে পড়ছে। পথচারীরা ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করছেন।

পঞ্চগড়ের বিভিন্ন নদ-নদী থেকে তোলা বালু ও পাথর ট্রাক্টরে করে পরিবহন করায় নদীর পাড়সহ কাঁচা-পাকা গ্রামীণ সড়ক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত বালু-পাথর নেওয়ায় চাকার সঙ্গে উঠে যাচ্ছে পাকা ও কাঁচা রাস্তার উপরিভাগে। এতে সড়কের অনেক স্থানে সৃষ্টি হচ্ছে ছোট-বড় গর্ত। এ কারণে শুষ্ক মৌসুমে ধুলা আর বর্ষায় গর্তে পানি জমে থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন মানুষ।

এ ছাড়া নদী থেকে তুলে পাথর-বালু ট্রাক্টরে করে সড়কের ধারে রাখা হয়। পরে ট্রাকে করে পরিবহন করায় বালু পড়ে থাকে সড়কে। বাতাসে ধুলাবালু উড়ে পথচারীদের চোখে-মুখে লাগে। বিশেষ করে গোয়ালঝাড়-ব্যারিস্টার বাজার, মিরগড়-পুরাতন পঞ্চগড়, মিলগেট থেকে মাড়েয়া সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক ট্রাক-ট্রাক্টর চলাচল করছে।

২০২০-২১ অর্থবছরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ব্যারিস্টার ইনস্টিটিউট-গোয়ালঝাড় সড়কের ৪ দশমিক ২ কিলোমিটার সড়ক ১ কোটি ৮৮ লাখ টাকায় সংস্কার করা হয়। গত বছরের ৩০ মে সংস্কারকাজ শেষ করে। এই সড়ক দিয়ে ১০ চাকার ট্রাক ও ট্রাক্টর চলাচল করায় প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কে ক্ষত সৃষ্টি হওয়ায় ধুলার কারণে আশপাশের বাড়িঘর, গাছপালাসহ বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে।

এলজিইডির তথ্য অনুযায়ী ওই সড়কে যানবাহনের সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ৫ থেকে ৬ মেট্রিক টন হলেও সড়ক দিয়ে ৪০ মেট্রিক টন ওজনের ওপরে বালুবাহী ট্রাক যাতায়াত করায় সংস্কারের পরই সড়কটি নষ্ট হয়ে যায়।

দোমনী সরকারপাড়া এলাকার বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘পিচ ঢালাইয়ের দুই সপ্তাহের মধ্যেই সড়কটি পাকা কি না বোঝা যায় না। প্রতিদিন শত শত ট্রাক ও ট্রাক্টর চলাচল করায় আশপাশের বাড়িগুলোতে আমরা ধুলায় থাকতে পারি না। কিছুদিন আগে এখানে একটি ট্রাক পাশ কাটাতে গিয়ে উল্টে গেছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।’

পঞ্চগড় ব্যারিস্টার বাজারের ব্যবসায়ী সামসুল আলম বলেন, ‘রাস্তায় ট্রাকে অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন করায় জনগণকে দুর্ভোগে ফেলেছে। এসব রাস্তা দেখভালের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব থাকলেও ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য চাঁদা নেওয়া হয়।’

পঞ্চগড় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামছুজামান বলেন, ‘ওই সড়কে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পণ্যবাহী যান চলাচল করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি সংস্কারের পরপরই স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ী ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত লোড নিয়ে পাথর-বালু পরিবহন করছেন। সড়কটি রক্ষায় আমরা ইতিমধ্যে লিখিত ও মৌখিকভাবে জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সমন্বয় সভায় আলোচনার মাধ্যমে একটি রেজুলেশনও হয়েছে।’

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার দেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে দিতে গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং রক্ষণাবেক্ষণের ওপর জোর দিয়েছে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে জাতীয় সম্পদের ক্ষতি করার কোনো সুযোগ নেই, আমরা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত