Ajker Patrika

বিদেশ থেকে ফিরে মাছ চাষে বেনজির সাফল্য

গাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডুমুরিয়া
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১৬: ০৮
Thumbnail image

মালয়েশিয়া থেকে ফিরে এসে মাছ চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন ডুমুরিয়ার হাসানপুর গ্রামের বাসিন্দা বেনজির হোসেন। ৭ বছর মালয়েশিয়া থাকার পর ২০২০ সালে করোনা মহামারি দেখা দিলে দেশে ফিরে মাছ চাষ শুরু করেন তিনি। বর্তমানে সরকারি একটি জলাশয় ইজারা নিয়ে করছেন পাবদা ও কার্প জাতীয় মাছের চাষ। পাশাপাশি সেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তির।

বেনজিরের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ৫ বছর আগে অন্য দুই ভাইয়ের পথ ধরে বেনজিরও চাকরির উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। সেখানে জীবন ভালো কাটলেও মন টিকত না তাঁর। একপর্যায়ে করোনার সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালে বিদেশ থেকে গ্রামে চলে আসেন। কিছুদিন বেকার থাকার পর বেশ চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দেশীয় পাবদা ও কার্প জাতীয় মাছের চাষ শুরু করেন। ইতিমধ্যে পাবদা মাছ চাষে সফলতার পর কার্প চাষেও ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন বেনজির (২৮)।

বেনজির বলেন, ২০২১ সালে ৭ একরের একটি সরকারি জলাশয় ইজারা নিই। বছরে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা চুক্তিতে ৫ বছরের জন্য ইজারা নিই। শুরুতে ৩ লাখ ৮০ হাজার দেশীয় পাবদা এবং ৫ হাজার রুই, কাতলা, মৃগেল, কালো কার্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষ শুরু করি। এতে সব মিলিয়ে ২৮ লাখ টাকা খরচ হলেও ২০২১ সালের অক্টোবর মাস থেকে পাবদা মাছ বিক্রি করে খরচের টাকা প্রায় উঠে এসেছে। এ ছাড়া পুকুরে এখনো যে পরিমাণ পাবদা মাছ রয়েছে তা বিক্রি করে মোট অঙ্কের লাভ আসবে। পাশাপাশি পুকুরে যে পরিমাণ কার্প জাতীয় মাছ দিয়েছি তা থেকে অন্তত ২০ লাখ টাকা আয় হবে।

বেনজির আরও বলেন, ‘আলাউদ্দীন নামের এক স্বজন ব্যবসার অংশীদার হিসেবে আছেন। আলাউদ্দীনের আগে থেকেই পাবদা ও কার্প জাতীয় মাছ চাষের অভিজ্ঞতা ছিল। বর্তমানে আমাদের মৎস্য খামারে ৪ জন স্থায়ী কর্মী আছেন। অস্থায়ীভাবে প্রতিদিন আরও ২-৩ জন কাজ করেন।’

সফলতার গল্প জানতে চাইলে বেনজির বলেন, ‘আমি আগে জীবনে কখনো কোনো ধরনের মাছ চাষ করিনি। আর এখানকার বেশির ভাগ মানুষ চিংড়ি ও কার্প জাতীয় মাছের চাষ করেন। কিন্তু আমার ইচ্ছা ছিল ব্যতিক্রমী কিছু করার। ফলে ডুমুরিয়া উপজেলা মৎস্য দপ্তরে যোগাযোগ করার পর তাঁরা আমাকে পাবদা ও কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষের পরামর্শ দেন। এ বিষয়ে আমি ৪ দিনের একটি প্রশিক্ষণ নিই।’

ডুমুরিয়ার জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুবকর সিদ্দিক বলেন, ‘করোনাকালীন দেশীয় মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মৎস্য অধিদপ্তর বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেয়। বিদেশ ফেরত বেনজির মাছ চাষের আগ্রহের কথা জানালে তাঁকে পাবদা ও কার্প জাতীয় মাছ চাষের পরামর্শ দিই। ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তিসেবা সম্প্রসারণ (দ্বিতীয় ফেজ) প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণসহ বেনজিরের প্রদর্শনী খামারে কিছু মাছের পোনাসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়েছে। মাছ চাষে তাঁরা ব্যাপকভাবে সফল হয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত