Ajker Patrika

হাজার বছরের জামদানি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২২, ১৭: ০৯
Thumbnail image

আমাদের বস্ত্রবয়নশিল্পের ইতিহাসে গর্বের নাম জামদানি। ফিনফিনে পাতলা যেসব মসলিনে হাতে নকশা তোলা হতো, সেগুলোই জামদানি। এটি বাংলাদেশের জিওগ্রাফিক্যাল আইডেনটিফিকেশন (জি-আই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ২০১৬ সালে।

ঢাকার অদূরে শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব তীরে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ ও সোনারগাঁ উপজেলা। এ দুই উপজেলার নোয়াপাড়া, রূপসী, মৈকুলী, খাদুন, পবনকুল, মুরগাকুল, বরাব, সিংড়াব ইত্যাদি গ্রামের তাঁতিরা এখনো গর্ত তাঁতে তৈরি করে চলেছেন জামদানি। একসময় ধামরাই এবং ঢাকা শহরেও জামদানি তৈরি হতো বলে জানা যায়।

জামদানি বস্ত্র সবার কাছে পরিচিত মূলত শাড়ি হিসেবে। জামদানি শাড়ির পাড় ও জমিনের নকশার রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন নাম। এই শাড়ির নামকরণ করা হয় পাড়ের নামে। যেমন কলকা পাড় শাড়ি, মালঞ্চ পাড় শাড়ি, আশফুল পাড়, ঝুমকা পাড়, আমেরমৌর পাড়, নিশান পাড়, পুঁইলতা পাড়, সুপারি টাংকি পাড় শাড়ি ইত্যাদি। পাড়ের নকশায় বিভিন্ন ধরনের লতাপাতা, ফুল, পশুপাখির আদল তোলা হয়। জামদানি শাড়ির জমিনের নকশা হয় মূলত জাল, বুটি/ছিডা ও তেরছি–এই তিন ধরনের। এ ছাড়া ‘ঢেউ’ আকৃতির কিছু নকশা তৈরি করা হয় জমিনে। জামদানি শাড়ির পাড়ের নকশাই আঁচলের নকশা হিসেবে বোনা হয়। পাড়, জমিন ও আঁচল—এই তিন নকশা নিয়েই জামদানির বাহার। বলে রাখা ভালো, যে জামদানি শাড়ির নকশা যত ঘন, ভারী ও জটিল, তার দামও তত বেশি। হাফসিল্ক ও ফুল কটন—এই দুই ধরনের জামদানি শাড়ি তৈরি হয়। টানায় সিল্ক সুতা এবং পোড়েনে সুতি সুতা দিয়ে হাফসিল্ক এবং টানা-পোড়েনে সুতির সুতা দিয়ে ফুল কটন জামদানি তৈরি হয়। ‘টাঙ্গাইলা জামদানি’ নামে বাজারে যে শাড়ি বিক্রি হয়, সেগুলো জামদানি শাড়ি নয়।

শাড়ি হিসেবে পরিচিত হলেও জামদানি কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয় পাঞ্জাবি, কুশন কভার, জানালার পর্দা, স্কার্ফ। এ ছাড়া কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান নোটবুকের কভার হিসেবে ব্যবহার করছে দৃষ্টিনন্দন জামদানি। শাড়ি হোক বা শাড়ির বাইরে অন্যান্য পণ্যই হোক, জীবনযাপনে রাখুন এ ঐতিহ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত