Ajker Patrika

বোরোর চারায় সবুজ মাঠ

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ২৩
বোরোর চারায় সবুজ মাঠ

উঁচু এলাকা হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় প্রতিবছর বোরো ধানের ভালো ফলন হয়। লাভজনক হওয়ায় এবারও বোরো ধানের চারা রোপণ শুরু করেছেন কৃষকেরা। শীত উপেক্ষা করে কৃষকেরা এখন বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিস্তীর্ণ এলাকার মাঠজুড়ে বোরো আবাদের ধুম চলছে। ভোরের আলো ফুটতেই কোমর বেঁধে ফসলের মাঠে নেমে পড়ছেন তাঁরা। উপজেলায় বোরোর চারায় অধিকাংশ খেত এখন সবুজ হয়ে উঠছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বোরো ধানের বীজতলা থেকে চারা সংগ্রহ করে এক ফসলি জমিতে বোরো ধান রোপণ করছেন কৃষকেরা। শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমি প্রস্তুত,পানি সেচ, হালচাষ, সার প্রয়োগ ও বীজ ওঠানোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা। কেউবা জমিতে হাল চাষ দিচ্ছেন, আবার অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। সব কাজ শেষ করে কেউবা বীজতলা থেকে চারা তুলে তা রোপণ করছেন খেতে।

গত মঙ্গলবার উপজেলার বরইচারা, রাণীদিয়া, অরুয়াইল, কাকরিয়া, রাজাপুর, দুবাজাইল, পাকশিমুল, ফতেপুর, পরমানন্দপুরভুইশ্বরসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা ধান চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন। অনেকে বীজতলা থেকে বোরো ধানের চারা তুলে জমিতে রোপণ করেছেন। আবার জমি পরিচর্যায় ব্যস্ত অনেকে। অনেকে দুপুরের খাবার নিয়ে মাঠে যাচ্ছেন শ্রমিকদের জন্য।

পাকশিমুল ইউনিয়নের বরইচারা গ্রামের ধানচাষি লিয়াকত আলী নামের এক কৃষক বলেন, ‘তেলের দাম বাড়ায় ট্রাক্টর দিয়ে হাল চাষের খরচ বাড়ছে। কয়েক বছর ধরে ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হয়েছে। কৃষিকাজই আমাদের পেশা, অন্য কোনো কাজ জানি না। তবু আশায় বুক বেঁধে বোরো ধানের চাষ করি।’

একই এলাকার হুমায়ুন নামের এক চাষি বলেন, ‘আমাদের এলাকা কৃষিনির্ভর। কৃষির ওপর নির্ভরশীল সরাইল হাওরাঞ্চলের মানুষ। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ধান চাষে খরচ বেড়ে গেছে। আমাদের এই অঞ্চলের প্রায় সব কৃষকই বর্গাচাষি। এঁদের নিজের জমি নেই। এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেন অনেকেই।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ইতিমধ্যে ৬ হাজার ৯৬০ জন কৃষকের মধ্যে কৃষি প্রণোদনার সার কীটনাশক বীজসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। চলতি বছর ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রায়হান পারভেজ রনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে সরাইল উপজেলায় বোরো ধানের ব্যাপক আবাদ করা হয়েছে। কারণ, সরাইল এলাকাটি মোটামুটি উঁচু এলাকা। জোয়ারের পানিতে বোরো ধানের বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয় না।

রায়হান পারভেজ আরও বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে আছে। তাই বোরো ধানের বাম্পার ফলন হতে পারে। তবে এ বছর তেলের দাম বেশি। তাই চাষাবাদের খরচ কিছুটা বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত