Ajker Patrika

বৈশ্বিক কার্বন করের প্রস্তাব

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২১, ১৯: ১৮
বৈশ্বিক কার্বন করের প্রস্তাব

শিল্পবিপ্লবের আগের তুলনায় বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ২১০০ সালের মধ্যে ১ দশমিক ৫ বা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আটকে রাখতে চলমান জলবায়ু সম্মেলন বা কপ-২৬ থেকে সর্বসম্মত ঘোষণা আসার সম্ভাবনা বলতে গেলে নেই। অথচ বন্যা, খরা, টর্নেডো বা ঘূর্ণিঝড়, লবণাক্ততা ইত্যাদির মতো দুর্যোগ কমাতে এর কোনো বিকল্প নেই। তাই ভিন্ন রকমের চেষ্টা চলছে। গুচ্ছ গুচ্ছ দলে বিভিন্ন ঘোষণা আসছে। আসছে নতুন প্রস্তাব ও প্রতিবেদন।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) ও বিশ্লেষণী সংস্থা প্রাইসওয়াটারহাউসকুপার্স (পিডব্লিউসি) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানায়, ‘বৈশ্বিক কার্বন কর’ বাস্তবায়ন করা হলে বিভিন্ন ধরনের গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ বছরে প্রায় ১২ শতাংশ কমানো যেতে পারে। এ জন্য দূষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আরোপিত করের পরিমাণ দাঁড়াবে বৈশ্বিক মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ শতাংশের কম। অর্থাৎ এ কর একটা সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।

প্রতিবেদনে কার্বন নিঃসরণের জন্য উন্নত বিশ্বের কোম্পানিগুলোকে টনে ৭৫ ডলার, মধ্য আয়ের দেশের কোম্পানিকে ৫০ ডলার এবং নিম্ন আয়ের দেশের কোম্পানিকে ২৫ ডলার কর ধার্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

পিডব্লিউসির প্রধান বব মরিটজ বলেন, ‘করের মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ কমানো যাবে। তাই উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে আমার বিশ্বাস।’

নিজেদের প্রতিবেদন অত্যন্ত ইতিবাচক জানিয়ে ডব্লিউইএফের প্রেসিডেন্ট বোরজ ব্রেনডে জানান, প্রস্তাবিত কার্বন করের জন্য সরকার ও কোম্পানিগুলোর মধ্যে সম্মতি দরকার। এর মধ্য দিয়ে টেকসই উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার বা নতুন অর্থনীতির পথে যাত্রা সহজ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

চলতি বছরের শুরুতে ‘বৈশ্বিক কার্বন কর’ আরোপের প্রস্তাব করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এতে করে বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ ২০৩০ সালের মধ্যে ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী ৪৫ শতাংশ কমানো যাবে, ফলে চলতি শতাব্দীতে উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ বা ২ ডিগ্রিতে ধরে রাখা যাবে।

আর্জেন্টিনা, চীন, কানাডা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে বিভিন্ন পর্যায়ে ‘কার্বন কর’ আরোপ করা হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে টনে ১৬ পাউন্ড কর আরোপ করে যুক্তরাজ্য। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে কয়লাবিদ্যুতের পরিমাণ মাত্র ২ শতাংশে নেমে এসেছে বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান। অথচ এক দশক আগে দেশটির মোট বিদ্যুতের প্রায় অর্ধেক উৎপাদন করা হতো কয়লা পুড়িয়ে।

উষ্ণতা কমানো নিয়ে হতাশা
আগস্টে প্রকাশিত জাতিসংঘের আইপিসিসি প্রতিবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৯২ জন বিজ্ঞানীর সাক্ষাৎকার নিয়ে একটি নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ‘নেচার’। এতে ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বের উষ্ণতা ৩ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে বলে মত দিয়েছেন প্রতি দশজনের ছয়জন। আর ৮৮ শতাংশ নিজেদের জীবদ্দশায় বড় ধরনের ‘বিপর্যয়ের’ শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত