Ajker Patrika

জব্দ করা গাড়ি রাস্তায় ভোগান্তি পথচারীদের

আল-আমিন রাজু, ঢাকা
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ০৬
জব্দ করা গাড়ি রাস্তায় ভোগান্তি পথচারীদের

সরু অলিগলির কারণে যানজট যেখানে নিত্যসঙ্গী। রাসায়নিকের কারখানায় আগুনের ভয়াবহতা মনে পড়লে যেখানের ব্যবসায়ীরা এখনো শিউরে ওঠেন। পুরান ঢাকার অন্যতম এ ব্যস্ত এলাকার নাম বংশাল। তবে এসবের বাইরেও আর্থিক লেনদেন-সংক্রান্ত প্রতারণা, বন্ধকি ঋণ জটিলতা, মাদক, চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে বংশাল থানা এলাকায়।

থানা এলাকার অনেকেই বাড়ি, জমি, ফ্ল্যাটসহ নানা স্থাবর সম্পত্তি জমা রেখে তার বিপরীতে অর্থ ঋণ নিয়ে থাকেন। পরবর্তী সময়ে বন্ধকি ঋণ পরিশোধ করা হলেও সম্পত্তি বুঝিয়ে দিতে চান না অনেক ঋণদাতা। বংশাল থানা-পুলিশকে এসব নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকতে হয় বলে জানা গেছে।

বংশাল থানার ওসি (তদন্ত) মীর রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘বন্ধকি ঋণসংক্রান্ত সমস্যায় পুলিশের পক্ষ থেকে দুই পক্ষকে ডেকে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়। এরপরও সমস্যা না মিটলে আমরা আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকি।’

ওসি রেজাউল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আর্থিক লেনদেন-সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান করা কঠিন। তা ছাড়া বংশাল থানায় চুরি ও মাদকের অভিযোগও আসে। কিশোর অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

৬ ফেব্রুয়ারি এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় থানার ওসি রেজাউলের। বংশাল থানায় প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবস্থান করেন এই প্রতিবেদক।

সরেজমিন দেখা যায়, চারতলা একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় কাজ চলছে বংশাল থানার। দ্বিতীয় তলার এক পাশে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবু সাঈদ ও মুক্তিযোদ্ধা লীগের কার্যালয়। ভবনটির তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় কমিউনিটি সেন্টার আর নিচতলায় লোহাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্রের দোকান। দোকানের মালামাল রাস্তার ফুটপাত দখল করেই রাখা। থানার জব্দ করা মোটরসাইকেল, রিকশা, বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন গাড়ি সড়কেই স্তূপ করে রাখা হয়েছে। দেখে মনে হবে, রাস্তা দখলে থানা-পুলিশ আর ব্যবসায়ীদের প্রতিযোগিতা চলছে। মালামাল রাখার পর যেটুকু জায়গা, সেখান দিয়েই গাড়ি চলাচল করছে।

স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করেন, দিনে তো যানজট থাকেই। রাত হলে যানজট যেন আরও বেড়ে যায়। কারণ, এখান থেকেই বড় বড় ট্রাকে করে দেশের নানা প্রান্তে মালামাল পাঠানো হয়। সেগুলোর কারণেই যানজট তৈরি হয়।

এদিকে বেলা একটার দিকে রাসেল নামের এক তরুণ এসেছেন থানায় আটক তাঁর ছোট ভাই রিপনের খোঁজে। থানার এক পুলিশ সদস্য তাঁকে জানান, সব আসামিকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মোবাইল হারিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে আসেন সোহেল নামের একজন।

বেলা দুইটার দিকে দুই তরুণ প্রবেশ করলেন থানায়। তাঁদের একজন মো. আদর জানান, বিকাশের লেনদেন নিয়ে একটি সমস্যায় পড়েছেন। সিদ্দিক বাজারে তাঁর দোকান আছে। প্রতারক চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা খোয়া গেছে তাঁর। যে কারণে থানায় জিডি করতে এসেছেন।

বেলা তিনটার দিকে মো. ইমরান হাসান ও তাঁর দুই বন্ধু মিলে আসেন মোবাইল চুরির বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে। ইমরান বলেন, ‘এক মাস আগেও আমি মোবাইল হারিয়েছি। তখনো সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ মোবাইল উদ্ধার করতে পারেনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত