Ajker Patrika

বদলি ঠেকাতে ‘তৎপর’ আরডিএ চেয়ারম্যান

রিমন রহমান, রাজশাহী
Thumbnail image

বদলির আদেশ হয়েছে দুই সপ্তাহ আগে। তবু নতুন কর্মস্থলে যোগ দেননি রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) চেয়ারম্যান মো. আনওয়ার হোসেন। ফলে আরডিএর চেয়ারম্যান হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাও নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে পারেননি। অভিযোগ পাওয়া গেছে, নিজের বদলি ঠেকাতে ঢাকায় পড়ে আছেন মো. আনওয়ার হোসেন।

আরডিএর একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছে, নিজের বদলির আদেশ প্রত্যাহার করতে ঢাকায় গিয়ে তদবির শুরু করেছেন আরডিএ চেয়ারম্যান আনওয়ার হোসেন। এতে দাপ্তরিক কাজকর্মে চরম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৩ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন নিয়োগ-১ অধিশাখার উপসচিব এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে আরডিএ চেয়ারম্যান আনওয়ার হোসেনকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে বদলি করা হয়। একই দিন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ-১ অধিশাখার উপসচিব আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান স্বাক্ষরিত আরেক প্রজ্ঞাপনে রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মো. জিয়াউল হককে প্রেষণে আরডিএ চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

আরডিএ সূত্র বলছে, প্রায় তিন বছর ধরে আরডিএর চেয়ারম্যান আছেন আনওয়ার হোসেন। এই সময়ের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে নগরীর প্রান্তিক আবাসিক এলাকায় দেড় থেকে ছয় কাঠা আয়তনের প্রায় ২০০টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হবে। এসব প্লটের কাঠাপ্রতি মূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা। প্লটগুলো নিজেদের মতো করে বরাদ্দ দিতে আরডিএ চেয়ারম্যান নিজের লোকদের নিয়ে পরিচালনা বোর্ডও গঠন করেছেন। এমন অবস্থায় তিনি এখন আরডিএ ছেড়ে যেতে চাচ্ছেন না।

আরডিএ চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও যোগ না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘অফিস ছাড়ার আগে কাজগুলো গুছিয়ে দিতে হয়। আমাকে এটা করতে হচ্ছে। তিনিও (আনওয়ার হোসেন) করছেন।’ আনওয়ার হোসেন কয়েক দিন পরে যোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন কি না জানতে চাইলে জিয়াউল হক বলেন, ‘তিনি বলছিলেন, তাঁর মেয়ের পরীক্ষা। আর আমাদের এ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যোগ দিতে তো নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয় না।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর উপশহরে আরডিএ চেয়ারম্যানের স্ত্রীর নামে সাততলা একটি আবাসিক ভবন আছে। সম্প্রতি এটি নির্মাণ করা হয়েছে। রাজশাহীর ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আনওয়ার হোসেনের বিশেষ সখ্য। তাই এখানে থাকতেই বেশি পছন্দ তাঁর।

রাজশাহীতে থাকছেন কি না এমন প্রশ্নে সরাসরি মন্তব্য করেননি আনওয়ার হোসেন। তবে বদলি ঠেকানোর চেষ্টা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, প্রশিক্ষণ থাকা এবং মন্ত্রণালয়ে নতুন সচিব যোগ দেওয়ায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় গিয়েছেন।’

জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অধিশাখার অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুস সবুর মণ্ডল বলেন, ‘এটার কোনো সুযোগ নেই। 
সরকার আদেশ করেছে। সরকারি কর্মচারীরা তা প্রতিপালন করবেন, এটা রীতি আর নীতি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত