Ajker Patrika

লুট হচ্ছে ব্রহ্মপুত্রের বালু

মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জুন ২০২২, ১২: ২৫
লুট হচ্ছে ব্রহ্মপুত্রের বালু

জামালপুরের মেলান্দহে ব্রহ্মপুত্র নদে খননযন্ত্র বসিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বালু তোলা বন্ধ করা না হলে ফসলি জমি নদে ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন। উপজেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, নদে খননযন্ত্র বসিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের পূর্ব শ্যামপুর এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদে খননযন্ত্র বসিয়ে বালু তুলছে একটি প্রভাবশালী মহল। বালু দিয়ে একটি বিদ্যালয়ের পাশে ফসলি জমি ভরাট করা হচ্ছে।

১০ দিন ধরে খননযন্ত্র বসিয়ে তোলা হচ্ছে এই বালু। খননযন্ত্রের মালিক ক্ষমতাসীন দলের ব্যক্তি হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পান না। খননযন্ত্র দিয়ে বালু তোলার ফলে অনেক আবাদি জমি নদে ভেঙে গেছে। এখন বোঝা যাবে না আবাদি জমি ভাঙবে কি না। তবে বন্যার পানি চলে যাওয়ার পর দেখা যাবে যে আবাদি জমি ভেঙে গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার পূর্ব শ্যামপুর এলাকায় উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন খননযন্ত্র ব্রহ্মপুত্র নদে বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। পাশে আরেকটি খননযন্ত্র বসানোর প্রস্তুতি চলছে। নদ থেকে বালু যাচ্ছে পাশের একটি ফসলি জমিতে। ৫-৬ জন আরেকটি মেশিন বসানোর জন্য পাইপ লাগাচ্ছেন।

শ্যামপুর এলাকার কৃষক নাজির উদ্দিন বলেন, নদ থেকে অনেক দিন ধরে বালু তুলছেন বালু খেকোরা। বালু তোলার জন্য বিভিন্ন ু ফসলি জমি ভেঙে গেছে। আগে বালু তোলা নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট জরিমানা করেছে কয়েকজনকে। তাও বালু তোলা বন্ধ হয়নি। বালু তোলা যদি এখন বন্ধ করা না হয়। বন্যার পরে দেখা যাবে, বালু তোলার ওই জায়গার আশপাশের ফসলি জমি ভেঙে গেছে।

শহিদুল নামের এক কৃষক বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে সারা বছরই বালু উত্তোলন করে বালু খেকোরা। এখন নদে পানি এসেছে। এখন আরও কয়েকটি খননযন্ত্র বসিয়ে বালু তুলবে। পানি যখন কমে যায় তখন ভেকু মেশিন দিয়ে মাহিন্দ্রা গাড়িতে করে বালু তুলে নেওয়া হয়। খননযন্ত্রের মেশিন দিয়ে বালু তোলার জন্য অনেক আবাদি জমি ভেঙে গেছে।

নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, খননযন্ত্রের মালিকের নাম আবু তালেব। তিনি এই নদ থেকে দীর্ঘদিন ধরে বালু তুলছেন। তিনি ব্রহ্মপুত্র নদের বিভিন্ন জায়গায় খননযন্ত্র বসিয়ে বালু তোলেন।

শ্যামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খলিলুর রহমান খলিল বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অনেকেই খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করে ব্যবসা করছেন। খননযন্ত্র ও ভেকু মেশিন দিয়ে সারা বছরে ব্যবসা করছে‌ কিছু বালু ব্যবসায়ী। এ বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অনেক বার জানানো হয়েছে। এখন শ্যামপুরে খননযন্ত্র বসিয়ে আবু তালেব বালু তুলছেন। খননযন্ত্র বসিয়ে বালু তোলার বিষয়ে জানতে আবু তালেবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম সায়েদুর রহমান বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে‌ কিছু লোক দীর্ঘদিন ধরে বালু তুলছেন। বালু তোলার ব্যাপারে সবাই জানে। বালু তোলার বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে আমি জানিয়েছি।’

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এখন জানলাম। আমি এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলব।’

মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম মিঞা বলেন, ‘মাটি উত্তোলনের এ বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খননযন্ত্র বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত