Ajker Patrika

বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়ে মানুষ

সিলেট প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ মে ২০২২, ১৪: ১৫
বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়ে মানুষ

সিলেটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নগরীতে বেড়েই চলেছে পানি। সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় আরও নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নগরীসহ বন্যাকবলিত এলাকায় দুর্ভোগ বেড়েছে।

এদিকে গত বুধবার রাতে ও গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেছে সিলেটে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নগরীসহ বিভিন্ন উপজেলায় থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, বাসাবাড়ি, দোকানপাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

অপরদিকে সীমান্তের ওপারে ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ায় ঢলের প্রভাবও বেড়েছে। যার ফলে সুরমা, কুশিয়ারা, সারিসহ বিভিন্ন নদ নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট নগরীর নিচু এলাকা হিসেবে পরিচিত শাহজালাল উপশহর, ঘাসিটুলা, মাছিমপুর, ছড়ারপার, তালতলা, কুয়ারপার, মেন্দিবাগ, কামালগড়, চালিবন্দর, যতরপুর, সোবহানিঘাট, কালীঘাট, শেখঘাট, তালতলা, জামতলা, মাছুদীঘিরপার, রামের দীঘিরপার, মোগলটুলা, খুলিয়াটুলা, পাঠানটুলা, সাগরদীঘিরপার, সুবিদবাজার, শিবগঞ্জ, মেজরটিলা, বাগবাড়ি, দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর রোড, ভার্থখলা, মোমিনখলা, পিরোজপুর, আলমপুর ও ঝালোপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে। এসব এলাকায় বাসাবাড়িতে কোমরপানি।

এদিকে বাসাবাড়িতে পানি ওঠা, বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় অনেক মানুষ নিজ বাসস্থান ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনের বাসা, গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন। অনেকেই শহরের বিভিন্ন হোটেলে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। গতকাল সবচেয়ে বেশি এলাকা ছাড়তে দেখা যায় নগরীর উপশহরের বাসিন্দাদের।

সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত বলেন, ‘ঘরের মধ্যে পানি। বাসার সবাইকে বোনের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। আজ তিনদিন হলো আমি নগরীর তালতলায় হোটেল রয়েল প্লামে থাকছি। এখানেও বিদ্যুৎ নেই। শুধুমাত্র বাসা ও দোকান দেখার জন্য এখানে আছি।’

নগরীর মির্জাজাঙ্গালে হোটেল নির্ভানা ইনের ফ্রন্ট অফিস নির্বাহী হুমায়ুন আহমেদ বলেন, ‘নগরী বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার পর আমাদের এখানে অন্যান্য অতিথিদের পাশাপাশি স্থানীয়রা এসে রুম ভাড়া করে থাকছেন।’

সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ চৌধুরী বলেন, এই মুহূর্তে প্রকৃতি খুবই বিরূপ আচরণ করছে। একদিকে অবিরাম বর্ষণ আর আরেকদিকে পাহাড়ি ঢল, এই দুইয়ে মিলে সিলেট অঞ্চলকে বিস্বাদে পরিণত করে দিয়েছে। যেহেতু সামনে বর্ষাকাল তাই সহসাই এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।

সিলেট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ বলেন, সিলেটের নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। দুদিন আগে থেকেই সবগুলো নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। বিভিন্ন জায়গায় নদ-নদীর পানি পাড় উপচে শহর-গ্রামকে প্লাবিত করে দিয়েছে। সিলেট জেলার প্রতিটি জায়গায় পানি গত ২৪ ঘণ্টায় এক থেকে দেড় ফুট বেড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত