বিরিয়ানিতে গরু নাকি অন্য কিছু, তুলকালাম

সাভারের আশুলিয়ায় একটি হোটেলে বিরিয়ানির মাংস নিয়ে সন্দেহের জের ধরে তুলকালাম ঘটেছে। এ ঘটনায় হোটেলমালিককে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে সন্দেহজনকভাবে গরুর মাংসকে কুকুরের মাংস বলে কিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়। তবে ভুক্তভোগী কেউ এখনো এ বিষয়ে অভিযোগ করেননি।

গতকাল সোমবার দুপুরে হোটেলমালিক রাজীবকে আশুলিয়া থানা থেকে আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে রোববার রাত ১২টার দিকে আশুলিয়ার নরসিংহপুর বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন আল্লাহর দান বিরিয়ানি হাউস-৫ নামের দোকান থেকে তাঁকে আটক করা হয়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ক্রেতা রুপালী বেগম বলেন, ‘রোববার দুপুরে ছেলের জন্য ওই দোকান থেকে কাচ্চি বিরিয়ানি কিনে নিয়ে বাসায় নিয়ে যাই। বিরিয়ানি ভালো না বলে খেতে পারছিল না। এরপর দেখি মাংসের হাড় খুব চিকন। এতে সন্দেহ হয় আমার। এটা গরুর মাংস কি না? পরে তাঁদের আবার দোকানে যাই। সেখানে শুধু জানতে চেয়েছি, এটা কি গরু নাকি খাসির মাংস! তাঁরা বলেছেন, তাঁরা গরুর মাংস দিয়ে বিরিয়ানি রান্না করেন। এরপর চলে আসি। এরপর স্থানীয় একটি ওষুধের দোকানদার শরীফ ভাইয়ের কাছে এ বিষয়ে বলেছিলাম। তিনি কিছু বলতে পারেননি।

ওই বিরিয়ানি হাউসের একটি শাখার মালিক সায়েদ হোসেন বিল্লাল বলেন, ‘কিছু মানুষ চক্রান্ত করে আমাদের ফাঁসিয়েছে। এমনকি আমরা ভারতের কোনো এলসি করা হিমায়িত মাংসও আনি না। কাঠগড়া বাজারের আলিম কসাইয়ের কাছ থেকে গরুর মাংস কিনি। ল্যাবে পরীক্ষা করে যদি অন্য কিছু পাওয়া যায়; যে শাস্তি দেবেন মাথা পেতে নিব। কিছু স্থানীয় সাংবাদিক এই কাজ করেছেন। বিষয়টি মিটমাট করার জন্য টাকা দাবি করেন তাঁরা। টাকা না দিলে তাঁরা পুলিশ ডেকে আনেন।’

আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার আলিম কসাই বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ৪০-৫০ কেজি গরুর মাংস কেনেন তাঁরা। শুক্রবার দেশি ছোট গরু জবাই করেছিলাম। সেই মাংস নিয়েছেন তারা। সেখানে হাড় চিকন হতে পারে। গরু জবাইয়ের ক্ষেত্রে আমাদের বাজার কমিটি প্রতিদিন যাচাই-বাছাই করে।’

এ বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিকেরা বলেন, দোকানে গিয়ে তথ্য জানতে চাইলে দোকান মালিকসহ কয়েকজন তাঁদের ওপর চড়াও হয়। উল্টো তাঁদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুব্রত রায় বলেন, ‘আলামত হিসেবে মাংস জব্দ করে পরীক্ষা করার জন্য উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জনের কাছে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘আশুলিয়া থানার এক কর্মকর্তা মাংস পরীক্ষার জন্য যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু এখনো আলামত হাতে পাইনি। আমাদের এখানে সম্ভব না হলে ল্যাব টেস্ট করার জন্য পাঠাব।’