বিভুরঞ্জন সরকার

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাঙালি জাতির রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। ওই দিন তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভা আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ করে। এর আগে ১০ এপ্রিল গঠন করা হয়েছিল স্বাধীন বাংলা সরকারের মন্ত্রিসভা।
তখন জাতীয় পরিষদের ১৬৭ সদস্যের মধ্যে ১৫০ জন এবং ২৯০ জন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যের মধ্যে দুই শতাধিকের সমর্থন ওই সরকারের প্রতি ছিল বলে জানা যায়। মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের পর বাংলাদেশের এই প্রথম সরকারের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ স্বতঃস্ফূর্ত থেকে সংগঠিত পর্যায়ে প্রবেশ করে। বৈদ্যনাথতলার নামকরণ করা হয় মুজিবনগর।
এটা সবার জানা যে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালি জাতির ওপর আক্রমণ শুরু করে এবং বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
বঙ্গবন্ধু তাঁর সহকর্মীদের নিরাপদ স্থানে গিয়ে যুদ্ধ পরিচালনার নির্দেশনাও গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই দিয়েছিলেন। তাঁর পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুযায়ী নেতারা ভিন্ন ভিন্ন পথে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে যান। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম সীমান্ত অতিক্রমের পর বিএসএফের তৎকালীন প্রধান রুস্তমজীর সহযোগিতায় দিল্লিতে যোগাযোগ করলে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর দপ্তর থেকে তাজউদ্দীন আহমদকে দিল্লি যাওয়ার কথা জানানো হয়। ব্যারিস্টার আমীর-উলকে সঙ্গে নিয়ে তাজউদ্দীন দিল্লি গিয়ে নানা রকম তৎপরতার পর ৪ এপ্রিল তাজউদ্দীন একা দেখা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে। এই সাক্ষাৎকারের মধ্য দিয়েই মূলত রচিত হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতার আনুষ্ঠানিক ভিত্তি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ সরাসরি বৈঠকে মিলিত হওয়ার বিষয়টি ওই সময় ছিল একটি মোড় ঘোরানো ঘটনা। এর আগের দিনই ইন্দিরা গান্ধীর পরামর্শকেরা তাজউদ্দীনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার গঠিত হয়েছে কি না। তাই ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আলোচনার প্রথমেই উপস্থিত বুদ্ধি প্রয়োগ করে তাজউদ্দীন বলেন, বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই একটি সরকার গঠন করা হয়েছে। নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপতিসহ মন্ত্রিসভার সদস্যদেরও নাম জানান তিনি। ইন্দিরা গান্ধী সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে পরবর্তী বৈঠকে তা সুনির্দিষ্ট করার কথা বলেন।
তাজউদ্দীনের এই উপস্থিত বুদ্ধি বিলম্ব না ঘটিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত করতে ও দেশ-বিদেশে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানো বন্ধ করার ক্ষেত্রে নিষ্পত্তিমূলক ভূমিকা রাখে। নেতৃত্ব গ্রহণের বিষয়টি যদি ওইভাবে তাৎক্ষণিক সমাধান না হতো, তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিরা বসে তা সমাধান করতে পারতেন না বলেই পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ থেকে অনুমান করা যায়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যেও ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তা যে প্রভাবক ভূমিকা পালন করে তা অস্বীকার করা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর মতো ক্যারিশমাটিক নেতা না হলেও তাজউদ্দীনের বুদ্ধির দীপ্তি যে ব্যতিক্রমী ছিল, মুজিবনগর সরকার গঠন ও পরবর্তী ঘটনাবলি তার প্রমাণ দেয়।
সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ সফল করার জন্য কয়েকটি উপাদান প্রয়োজন।
এক. দৃঢ়তাপূর্ণ নেতৃত্ব ও একশিলা রাজনৈতিক দল, দুই. যুক্তিসংগত কারণ, তিন. রাজনৈতিক দলসহ জনগণের দৃঢ় ও ব্যাপক সমর্থন, চার. মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ও সমরাস্ত্র সরবরাহ এবং পাঁচ. প্রতিবেশী দেশসহ বিশ্ববাসীর সমর্থন।
অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় প্রধান নেতা তাজউদ্দীনের নেতৃত্ব গ্রহণ ও ভারতের সমর্থনের ভেতর দিয়ে উল্লিখিত শর্তগুলো মোটামুটি পূরণ হয়। দেরি না করে তাজউদ্দীনের নেতৃত্ব গ্রহণ, ইন্দিরা গান্ধীর যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে হানাদারমুক্ত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রতিরোধ সংগ্রামকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের মধ্যেই অন্তত দুটি স্বতন্ত্র উদ্যোগ ছিল। এ ছাড়া সাবেক সেনা অফিসার, রুশপন্থী কমিউনিস্ট পার্টি ও মোজাফফর ন্যাপ এবং নানা গ্রুপে বিভক্ত চীনপন্থী কমিউনিস্টদের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা উদ্যোগ ছিল। নানা টানাপোড়েন ও ঘাত-প্রতিঘাত সত্ত্বেও তাজউদ্দীন আহমদ বিচক্ষণতার সঙ্গে অগ্রসর হওয়ার নজির রেখেছেন। তাজউদ্দীন আহমদ ভারতে পৌঁছেই উপলব্ধি করেছিলেন, সমন্বিত ও ঐক্যবদ্ধ সশস্ত্র লড়াই ছাড়া দেশ স্বাধীন করা সম্ভব নয়, বিশেষভাবে ভারতের সাহায্য ছাড়া তা অগ্রসর করা কঠিন। এই দুই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তিনি তাঁর কাজের পরিকল্পনা ও ছক আঁকেন।
আওয়ামী লীগে বঙ্গবন্ধুর পর দ্বিতীয় প্রধান নেতা ছিলেন তাজউদ্দীন। আর জাতীয় পরিষদের ডেপুটি লিডার ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। তাই বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তিনি অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হবেন, এটা অনেকটা অবধারিত ছিল। তাজউদ্দীন আহমদ প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হলেও আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি দল প্রাদেশিক পরিষদের নেতা নির্বাচিত করেছিল ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীকে। এ এইচ এম কামারুজ্জামান ছিলেন পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তাই জাতীয় পরিষদের সদস্য কামারুজ্জামান বা প্রাদেশিক পরিষদের নেতা এম মনসুর আলীর প্রধানমন্ত্রী পদের প্রত্যাশী হওয়াটা অস্বাভাবিক ছিল না। অন্যদিকে ধূর্ত মোশতাক সব সময়ই পদলোভী ও ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন। তাই প্রধান ও কার্যকরী উদ্যোগ হিসেবে প্রথমেই দলীয় কোনো বৈঠক না করে তাজউদ্দীনের প্রধানমন্ত্রীর পদ নেওয়া নিয়ে বিতর্ক অস্বাভাবিক ছিল না। আওয়ামী লীগ মহলে তা হতেই থাকে। তবে স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক দল ও জনগণ তাজউদ্দীনকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সর্বান্তঃকরণে মেনে নেওয়ায় এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী স্বাভাবিক কারণেই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁকে সাদরে গ্রহণ করায় অন্য কিছু হওয়া সম্ভব ছিল না।
মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের একান্ত সহকারী ফারুক আজিজ খান পরবর্তী সময়ে তাঁর স্মৃতিকথায় লিখেছেন: দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে অনেকেই মনে করতেন যে তাঁরাই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য দাবিদার। এ জন্য তাঁদের নিজস্ব যুক্তিও ছিল। প্রধানমন্ত্রীর জন্য এটাই সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ সমস্যা ছিল—অন্তত প্রথম দিকে। অনেক প্রভাবশালী এমএনএ তাজউদ্দীনের বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন খন্দকার মোশতাক ও মিজানুর রহমান চৌধুরী। অধ্যাপক ইউসুফ আলী উত্তরবঙ্গের একটি অংশের নেতৃত্ব দিতেন, যাঁরা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ছিলেন। তবে তাঁরা অত সরব ছিলেন না। সিলেটের এমএনএ দেওয়ান ফরিদ গাজী এবং চট্টগ্রামের এমপি জহুর আহমেদ চৌধুরী মুজিবনগর সরকারের সমালোচক ছিলেন।...বরিশালের তরুণ এমএনএ নূরুল ইসলাম মনজুর সরকারের তীব্র সমালোচক ছিলেন। এ রকম আরও কয়েকজন ছিলেন। আমি দেখছিলাম যে দুর্ভাগ্যজনকভাবে শেখ মুজিবের অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কোনো চেইন অব কমান্ড নেই। আর এটা আসলে নেতৃত্বের সংকটকেই তুলে ধরেছে। বেশ কয়েকজন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও যেকোনো একজনকে প্রধানমন্ত্রী বিবেচনা করা কঠিন ছিল। তাজউদ্দীন সাহেব একাধিকবার বলেছেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় দল। এর সমস্যাও অনেক বড়। (বসন্ত ১৯৭১, পৃষ্ঠা ১৩৪)
বড় দল আওয়ামী লীগ এখনো কি বড় সমস্যা নিয়েই চলছে না?
দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও দৃঢ়চেতা নেতা তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় হঠকারিতা রোধ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলগুলোর মধ্যে মোটামুটি সৌহার্দ্য রক্ষা এবং স্বাধীনতার পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য যথাসম্ভব সমন্বয় সাধন ও সঠিক পথে অগ্রসর করে নেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়। তবে শুরুতেই পদলাভের জন্য টানাপোড়েন মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় তো বটেই, এমনকি স্বাধীন দেশের রাজনীতিকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করে। অনৈক্য ছিল কিন্তু ঐক্যই শেষ পর্যন্ত নিয়ামক ভূমিকা পালন করেছিল।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী দলের নেতা শেখ মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। নানা টালবাহানার পর ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। অনেকটা তাৎক্ষণিকভাবেই বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে দাঁড়ায় প্রতিবেশী দেশ ভারত ও বৃহৎ শক্তি হিসেবে পরিচিত সোভিয়েত ইউনিয়ন। রাজনৈতিক শক্তি ও সাধারণ মানুষ যখন চরম বিপদাপন্ন ও কিংকর্তব্যবিমূঢ়, তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারতের সমর্থন মানুষের মনে আশার সঞ্চার করেছিল নিঃসন্দেহে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যদি সীমান্ত বন্ধ রাখত এবং ভারতের জনগণ যদি শরণার্থীদের সাদরে গ্রহণ না করত, তাহলে অসহায়ত্ব কোন পর্যায়ে পৌঁছাত—তা কল্পনাও করা যায় না। আবার সোভিয়েত ইউনিয়ন যদি চুপ থাকত, তাহলে আমেরিকা হয়তো আরও আক্রমণাত্মক অবস্থান নিত।
ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রাথমিক বক্তব্য ও অবস্থানে সম্ভবত ভূরাজনৈতিক কারণে কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও শেষ পর্যন্ত দুই দেশের রাজনৈতিক পার্থক্য কমে চূড়ান্ত পর্যায়ে একবিন্দুতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় নিশ্চিত করেছে।
ভারত কেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিক ও সামরিক দিক দিয়ে সরাসরি সহায়তা করল, এই সহায়তার পেছনে ভারতের স্বার্থ কতটা ছিল কিংবা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে ভারতের কতটা নেপথ্য ইন্ধন বা ষড়যন্ত্র ছিল, সে সব নিয়ে বিতর্ক ছিল এবং আছে।
পাকিস্তানের কাঠামোর মধ্যে এই অঞ্চলের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হওয়া, ভোটের রায় কার্যকরে অনীহা দেখানোয় নিশ্চয়ই ভারতের কোনো ভূমিকা ছিল না। যুদ্ধ বাংলাদেশ শুরু করেনি। আক্রান্ত হয়ে তারা প্রতিরোধ করে।
সবকিছুরই পূর্বাপর আছে, আগে-পিছে রাজনীতি এবং অপরাজনীতিও আছে। মুক্তিযুদ্ধও কোনোভাবেই রাজনীতি ও অপরাজনীতিমুক্ত ছিল না। রাজনীতি ও অপরাজনীতি থেকে আমরা এখনো বের হতে পারছি না।
লেখক: বিভুরঞ্জন সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক
আজকের পত্রিকা

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাঙালি জাতির রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। ওই দিন তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভা আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ করে। এর আগে ১০ এপ্রিল গঠন করা হয়েছিল স্বাধীন বাংলা সরকারের মন্ত্রিসভা।
তখন জাতীয় পরিষদের ১৬৭ সদস্যের মধ্যে ১৫০ জন এবং ২৯০ জন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যের মধ্যে দুই শতাধিকের সমর্থন ওই সরকারের প্রতি ছিল বলে জানা যায়। মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের পর বাংলাদেশের এই প্রথম সরকারের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ স্বতঃস্ফূর্ত থেকে সংগঠিত পর্যায়ে প্রবেশ করে। বৈদ্যনাথতলার নামকরণ করা হয় মুজিবনগর।
এটা সবার জানা যে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালি জাতির ওপর আক্রমণ শুরু করে এবং বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
বঙ্গবন্ধু তাঁর সহকর্মীদের নিরাপদ স্থানে গিয়ে যুদ্ধ পরিচালনার নির্দেশনাও গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই দিয়েছিলেন। তাঁর পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুযায়ী নেতারা ভিন্ন ভিন্ন পথে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে যান। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম সীমান্ত অতিক্রমের পর বিএসএফের তৎকালীন প্রধান রুস্তমজীর সহযোগিতায় দিল্লিতে যোগাযোগ করলে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর দপ্তর থেকে তাজউদ্দীন আহমদকে দিল্লি যাওয়ার কথা জানানো হয়। ব্যারিস্টার আমীর-উলকে সঙ্গে নিয়ে তাজউদ্দীন দিল্লি গিয়ে নানা রকম তৎপরতার পর ৪ এপ্রিল তাজউদ্দীন একা দেখা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে। এই সাক্ষাৎকারের মধ্য দিয়েই মূলত রচিত হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতার আনুষ্ঠানিক ভিত্তি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ সরাসরি বৈঠকে মিলিত হওয়ার বিষয়টি ওই সময় ছিল একটি মোড় ঘোরানো ঘটনা। এর আগের দিনই ইন্দিরা গান্ধীর পরামর্শকেরা তাজউদ্দীনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার গঠিত হয়েছে কি না। তাই ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আলোচনার প্রথমেই উপস্থিত বুদ্ধি প্রয়োগ করে তাজউদ্দীন বলেন, বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই একটি সরকার গঠন করা হয়েছে। নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপতিসহ মন্ত্রিসভার সদস্যদেরও নাম জানান তিনি। ইন্দিরা গান্ধী সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে পরবর্তী বৈঠকে তা সুনির্দিষ্ট করার কথা বলেন।
তাজউদ্দীনের এই উপস্থিত বুদ্ধি বিলম্ব না ঘটিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত করতে ও দেশ-বিদেশে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানো বন্ধ করার ক্ষেত্রে নিষ্পত্তিমূলক ভূমিকা রাখে। নেতৃত্ব গ্রহণের বিষয়টি যদি ওইভাবে তাৎক্ষণিক সমাধান না হতো, তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিরা বসে তা সমাধান করতে পারতেন না বলেই পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ থেকে অনুমান করা যায়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যেও ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তা যে প্রভাবক ভূমিকা পালন করে তা অস্বীকার করা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর মতো ক্যারিশমাটিক নেতা না হলেও তাজউদ্দীনের বুদ্ধির দীপ্তি যে ব্যতিক্রমী ছিল, মুজিবনগর সরকার গঠন ও পরবর্তী ঘটনাবলি তার প্রমাণ দেয়।
সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ সফল করার জন্য কয়েকটি উপাদান প্রয়োজন।
এক. দৃঢ়তাপূর্ণ নেতৃত্ব ও একশিলা রাজনৈতিক দল, দুই. যুক্তিসংগত কারণ, তিন. রাজনৈতিক দলসহ জনগণের দৃঢ় ও ব্যাপক সমর্থন, চার. মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ও সমরাস্ত্র সরবরাহ এবং পাঁচ. প্রতিবেশী দেশসহ বিশ্ববাসীর সমর্থন।
অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় প্রধান নেতা তাজউদ্দীনের নেতৃত্ব গ্রহণ ও ভারতের সমর্থনের ভেতর দিয়ে উল্লিখিত শর্তগুলো মোটামুটি পূরণ হয়। দেরি না করে তাজউদ্দীনের নেতৃত্ব গ্রহণ, ইন্দিরা গান্ধীর যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে হানাদারমুক্ত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রতিরোধ সংগ্রামকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের মধ্যেই অন্তত দুটি স্বতন্ত্র উদ্যোগ ছিল। এ ছাড়া সাবেক সেনা অফিসার, রুশপন্থী কমিউনিস্ট পার্টি ও মোজাফফর ন্যাপ এবং নানা গ্রুপে বিভক্ত চীনপন্থী কমিউনিস্টদের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা উদ্যোগ ছিল। নানা টানাপোড়েন ও ঘাত-প্রতিঘাত সত্ত্বেও তাজউদ্দীন আহমদ বিচক্ষণতার সঙ্গে অগ্রসর হওয়ার নজির রেখেছেন। তাজউদ্দীন আহমদ ভারতে পৌঁছেই উপলব্ধি করেছিলেন, সমন্বিত ও ঐক্যবদ্ধ সশস্ত্র লড়াই ছাড়া দেশ স্বাধীন করা সম্ভব নয়, বিশেষভাবে ভারতের সাহায্য ছাড়া তা অগ্রসর করা কঠিন। এই দুই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তিনি তাঁর কাজের পরিকল্পনা ও ছক আঁকেন।
আওয়ামী লীগে বঙ্গবন্ধুর পর দ্বিতীয় প্রধান নেতা ছিলেন তাজউদ্দীন। আর জাতীয় পরিষদের ডেপুটি লিডার ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। তাই বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তিনি অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হবেন, এটা অনেকটা অবধারিত ছিল। তাজউদ্দীন আহমদ প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হলেও আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি দল প্রাদেশিক পরিষদের নেতা নির্বাচিত করেছিল ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীকে। এ এইচ এম কামারুজ্জামান ছিলেন পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তাই জাতীয় পরিষদের সদস্য কামারুজ্জামান বা প্রাদেশিক পরিষদের নেতা এম মনসুর আলীর প্রধানমন্ত্রী পদের প্রত্যাশী হওয়াটা অস্বাভাবিক ছিল না। অন্যদিকে ধূর্ত মোশতাক সব সময়ই পদলোভী ও ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন। তাই প্রধান ও কার্যকরী উদ্যোগ হিসেবে প্রথমেই দলীয় কোনো বৈঠক না করে তাজউদ্দীনের প্রধানমন্ত্রীর পদ নেওয়া নিয়ে বিতর্ক অস্বাভাবিক ছিল না। আওয়ামী লীগ মহলে তা হতেই থাকে। তবে স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক দল ও জনগণ তাজউদ্দীনকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সর্বান্তঃকরণে মেনে নেওয়ায় এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী স্বাভাবিক কারণেই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁকে সাদরে গ্রহণ করায় অন্য কিছু হওয়া সম্ভব ছিল না।
মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের একান্ত সহকারী ফারুক আজিজ খান পরবর্তী সময়ে তাঁর স্মৃতিকথায় লিখেছেন: দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে অনেকেই মনে করতেন যে তাঁরাই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য দাবিদার। এ জন্য তাঁদের নিজস্ব যুক্তিও ছিল। প্রধানমন্ত্রীর জন্য এটাই সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ সমস্যা ছিল—অন্তত প্রথম দিকে। অনেক প্রভাবশালী এমএনএ তাজউদ্দীনের বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন খন্দকার মোশতাক ও মিজানুর রহমান চৌধুরী। অধ্যাপক ইউসুফ আলী উত্তরবঙ্গের একটি অংশের নেতৃত্ব দিতেন, যাঁরা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ছিলেন। তবে তাঁরা অত সরব ছিলেন না। সিলেটের এমএনএ দেওয়ান ফরিদ গাজী এবং চট্টগ্রামের এমপি জহুর আহমেদ চৌধুরী মুজিবনগর সরকারের সমালোচক ছিলেন।...বরিশালের তরুণ এমএনএ নূরুল ইসলাম মনজুর সরকারের তীব্র সমালোচক ছিলেন। এ রকম আরও কয়েকজন ছিলেন। আমি দেখছিলাম যে দুর্ভাগ্যজনকভাবে শেখ মুজিবের অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কোনো চেইন অব কমান্ড নেই। আর এটা আসলে নেতৃত্বের সংকটকেই তুলে ধরেছে। বেশ কয়েকজন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও যেকোনো একজনকে প্রধানমন্ত্রী বিবেচনা করা কঠিন ছিল। তাজউদ্দীন সাহেব একাধিকবার বলেছেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় দল। এর সমস্যাও অনেক বড়। (বসন্ত ১৯৭১, পৃষ্ঠা ১৩৪)
বড় দল আওয়ামী লীগ এখনো কি বড় সমস্যা নিয়েই চলছে না?
দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও দৃঢ়চেতা নেতা তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় হঠকারিতা রোধ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলগুলোর মধ্যে মোটামুটি সৌহার্দ্য রক্ষা এবং স্বাধীনতার পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য যথাসম্ভব সমন্বয় সাধন ও সঠিক পথে অগ্রসর করে নেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়। তবে শুরুতেই পদলাভের জন্য টানাপোড়েন মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় তো বটেই, এমনকি স্বাধীন দেশের রাজনীতিকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করে। অনৈক্য ছিল কিন্তু ঐক্যই শেষ পর্যন্ত নিয়ামক ভূমিকা পালন করেছিল।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী দলের নেতা শেখ মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। নানা টালবাহানার পর ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। অনেকটা তাৎক্ষণিকভাবেই বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে দাঁড়ায় প্রতিবেশী দেশ ভারত ও বৃহৎ শক্তি হিসেবে পরিচিত সোভিয়েত ইউনিয়ন। রাজনৈতিক শক্তি ও সাধারণ মানুষ যখন চরম বিপদাপন্ন ও কিংকর্তব্যবিমূঢ়, তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারতের সমর্থন মানুষের মনে আশার সঞ্চার করেছিল নিঃসন্দেহে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যদি সীমান্ত বন্ধ রাখত এবং ভারতের জনগণ যদি শরণার্থীদের সাদরে গ্রহণ না করত, তাহলে অসহায়ত্ব কোন পর্যায়ে পৌঁছাত—তা কল্পনাও করা যায় না। আবার সোভিয়েত ইউনিয়ন যদি চুপ থাকত, তাহলে আমেরিকা হয়তো আরও আক্রমণাত্মক অবস্থান নিত।
ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রাথমিক বক্তব্য ও অবস্থানে সম্ভবত ভূরাজনৈতিক কারণে কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও শেষ পর্যন্ত দুই দেশের রাজনৈতিক পার্থক্য কমে চূড়ান্ত পর্যায়ে একবিন্দুতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় নিশ্চিত করেছে।
ভারত কেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিক ও সামরিক দিক দিয়ে সরাসরি সহায়তা করল, এই সহায়তার পেছনে ভারতের স্বার্থ কতটা ছিল কিংবা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে ভারতের কতটা নেপথ্য ইন্ধন বা ষড়যন্ত্র ছিল, সে সব নিয়ে বিতর্ক ছিল এবং আছে।
পাকিস্তানের কাঠামোর মধ্যে এই অঞ্চলের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হওয়া, ভোটের রায় কার্যকরে অনীহা দেখানোয় নিশ্চয়ই ভারতের কোনো ভূমিকা ছিল না। যুদ্ধ বাংলাদেশ শুরু করেনি। আক্রান্ত হয়ে তারা প্রতিরোধ করে।
সবকিছুরই পূর্বাপর আছে, আগে-পিছে রাজনীতি এবং অপরাজনীতিও আছে। মুক্তিযুদ্ধও কোনোভাবেই রাজনীতি ও অপরাজনীতিমুক্ত ছিল না। রাজনীতি ও অপরাজনীতি থেকে আমরা এখনো বের হতে পারছি না।
লেখক: বিভুরঞ্জন সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক
আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও দৃঢ়চেতা নেতা তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় হঠকারিতা রোধ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলগুলোর মধ্যে মোটামুটি সৌহার্দ্য রক্ষা এবং স্বাধীনতার পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য যথাসম্ভব সমন্বয় সাধন ও সঠিক পথে অগ্রসর করে নেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
১৭ এপ্রিল ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও দৃঢ়চেতা নেতা তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় হঠকারিতা রোধ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলগুলোর মধ্যে মোটামুটি সৌহার্দ্য রক্ষা এবং স্বাধীনতার পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য যথাসম্ভব সমন্বয় সাধন ও সঠিক পথে অগ্রসর করে নেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
১৭ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও দৃঢ়চেতা নেতা তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় হঠকারিতা রোধ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলগুলোর মধ্যে মোটামুটি সৌহার্দ্য রক্ষা এবং স্বাধীনতার পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য যথাসম্ভব সমন্বয় সাধন ও সঠিক পথে অগ্রসর করে নেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
১৭ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও দৃঢ়চেতা নেতা তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় হঠকারিতা রোধ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলগুলোর মধ্যে মোটামুটি সৌহার্দ্য রক্ষা এবং স্বাধীনতার পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য যথাসম্ভব সমন্বয় সাধন ও সঠিক পথে অগ্রসর করে নেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
১৭ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫