Ajker Patrika

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমালোচনা-বিতর্কে বছর গেল

মিনহাজ তুহিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
Thumbnail image

দেখতে দেখতে কালের মহাগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে আরও একটি বছর, ২০২২। চলতি এই বছরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) গবেষণাসহ নানা ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে। তবে এসবের বাইরে নানা আলোচিত ও বিতর্কিত ঘটনায় বছরজুড়েই পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

শিক্ষক নিয়োগে অর্থ লেনদেনের অডিও কেলেঙ্কারি, ছাত্রলীগের সংঘর্ষ-ভাঙচুর, উপাচার্য-ডিনের বাগ্‌বিতণ্ডা ও কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ), পদের অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ, সিন্ডিকেট নির্বাচন নিয়ে দফায় দফায় চিঠি, যৌন হয়রানি, চারুকলা শিক্ষার্থীদের দেড় মাসব্যাপী আন্দোলনসহ অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে বিদায়ী এই বছরে।

অডিও কেলেঙ্কারি: বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে প্রভাষক নিয়োগে অর্থ লেনদেন-সংক্রান্ত পাঁচটি অডিও ফাঁস হয়। এর মধ্যে একটি ফোনালাপে প্রভাষক পদের এক প্রার্থীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পিএস খালেদ মিসবাহউল মুকররবিনকে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলতে শোনা যায়।  নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে উপাচার্যের পিএসকে অপসারণ করে পদাবনতি করা হয়। পাশাপাশি কর্মচারী আহমদ হোসেনকে চাকরিচ্যুত করার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

পদের অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ: নিয়োগ-বাণিজ্যের ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর পদের অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিতর্কের মুখে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত পদের অতিরিক্ত ১৩ প্রার্থীকে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৭তম সিন্ডিকেট। পরে ৫৩৮তম সিন্ডিকেটে এই নিয়োগ না দিতে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়। তবে সিদ্ধান্তের তিন মাস না যেতেই সাত বিভাগে বাতিল হওয়া ১৩ জনসহ পদের অতিরিক্ত ১৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

ডিন-উপাচার্যের বাগ্‌বিতণ্ডা: সিন্ডিকেট নির্বাচন চেয়ে চিঠি দেওয়ার ২২ দিন পরও নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় এক সভায় উপাচার্যের কাছে কারণ জানতে চান ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন নিজামী। এ সময় উপাচার্য বসা থেকে উঠে ডিনকে ‘চুপ বেয়াদব’ বলে শাসাতে থাকেন এবং নির্বাচন দেবেন না বলে জানান। পরে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ায় এই ডিনকে শোকজও করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ছাত্রলীগের সংঘর্ষ: আধিপত্য বিস্তার, নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব, আবাসিক হলের সিট দখলসহ সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র গত এক বছরে অন্তত ১০ বার সংঘর্ষে জড়িয়েছে শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন উপদল। এতে শতাধিক ছাত্রলীগকর্মী আহত হন। তবে এসব ঘটনা বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রলীগ।

চারুকলায় বিক্ষোভ: চট্টগ্রাম নগরীতে অবস্থিত চবির চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে প্রায় দেড় মাস ধরে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে তাঁরা ইনস্টিটিউটের ফটকে তালা, অবস্থান, স্মারকলিপি, সড়ক অবরোধ, চিত্রকর্ম অঙ্কনসহ নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করেন। প্রশাসন সংকট নিরসনে দফায় দফায় বৈঠক ও কমিটি গঠন করলেও কোনো সুরাহা হয়নি।

ক্যাম্পাসে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: আবাসিক হলের পাশে ছেলে বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন এক ছাত্রী। এ ঘটনার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। পরে জড়িত দুই শিক্ষার্থীসহ চারজনকে আটক করে র‍্যাব। একই সঙ্গে অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত