বাসব রায়
আগের দিনগুলোতে ফিরে যেতে মন চায়। শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের সোনালি দিনগুলোর ছবি চোখে মাঝেমধ্যেই ভাসে। সে সময় আকুলতা বৃদ্ধি পায় এবং মনের মধ্যে স্মৃতিকাতরতা ভিড় করে। সব মিলে আগের দিনগুলোই যে অসাধারণ ছিল, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
জীবনের গোধূলিবেলায় আরক্তিম দিগন্তের মনোরম দৃশ্যের মাঝে শ্রান্তির যে আহ্বান, তা যেন শরীর-মনকে চঞ্চল করে তোলে—একটা অনন্ত অবকাশের তৃষ্ণায় ছটফট করে মন। তখন ফেলে আসা শৈশব আর কৈশোরের দিনগুলো সামনে এসে দাঁড়ায় ৷ তখন মনে হয়, আসল জীবন সে সময়টাই ছিল। তবে অতীতের কষ্ট, যন্ত্রণাগুলো পরম যত্নে ভুলিয়ে দেয় এসব সুখস্মৃতি। বেঁচে থাকার প্রেরণাও বটে এসব নস্টালজিক ভাবনা।
তবে আগের দিনগুলো সব সময়ই ভালো ছিল এ কারণে যে ভাবনা কম ছিল, জীবনের উপলব্ধি কম ছিল এবং বৈষয়িক চিন্তাভাবনা করার কোনো সুযোগই ছিল না। আর বর্তমান সময়ের অস্থিরতাও তেমন ছিল না। রাজনৈতিক বা সামাজিক ক্ষেত্রেও ছিল তুলনমূলক স্বাভাবিক ও সহনীয় পরিবেশ, যা এখনকার সময়ে সেই সব বিষয়
বিস্ময়কর মনে হয়।
সেই সময়কার স্কুল, শিক্ষকদের মধ্যে এবং শিক্ষাব্যবস্থার একটা ওজন ছিল। ছিল ভয়, শ্রদ্ধা আর শিক্ষকদের শাসন এবং স্নেহ-ভালোবাসা। সবার মধ্যেই সততা ছিল। আত্মীয়-অনাত্মীয় সবার মাঝেই একটা আন্তরিকতার ভাব ছিল, যা কখনোই কৃত্রিম ছিল না।
আজকাল সব কেমন ওলট-পালট হয়ে গেছে। মানুষের মন কম মূল্যের খোলস পরে সন্দিহান চোখে অস্বস্তির মাঝে আনন্দের কথা ভুলেই গেছে একদম। সবখানেই জোড়াতালি আর আহাজারি। জানি না আগামী প্রজন্মকে নিয়ে আমরা কোথায় চলেছি? পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি কিছুতেই অভিভাবকদের স্বস্তি দিতে পারছে না। ছেলেমেয়েরা বাইরে যায় পড়ালেখার কারণেই। অথচ তাদের পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টজন নিতে পারছেন না। কোথায় যেন একটা ঘাটতি, কোথায় যেন একটি অসমাপ্ত কিছু?
বর্তমান সময়ে পারস্পরিক বোঝাপড়াসহ সহানুভূতি এবং শ্রদ্ধাবোধ হারিয়ে গেছে। ভক্তি বা শ্রদ্ধা মন থেকে উধাও আজকাল। পক্ষান্তরে স্নেহ, ভালোবাসা এসবেরও বেশ ঘাটতি। তখনকার পণ্ডিতব্যক্তিদের চেয়ে হাজার গুণ বেশি পাণ্ডিত্য এ সময়ের শিক্ষকদের; শিক্ষায়-দীক্ষায় ও জ্ঞান-বিজ্ঞানে এখনকার স্যাররা যথেষ্ট এগিয়ে। অথচ তুলনা করলে এখনকার স্যাররা বিগত দিনের পণ্ডিতজনদের কাছে নস্যি মাত্র।
পাঠ অনুশীলন বা চর্চা করার তাগিদ আমাদের নেই; কোনোভাবে সময়গুলো অতিক্রম করাই যেন মূল উদ্দেশ্য। এখনকার পড়ালেখায় কৌশল আছে সূক্ষ্মশৈলীর প্রয়োগে, কিন্তু তখনকার পড়ালেখায় বিন্দুমাত্র ফাঁকিবাজি ছিল না। আমরা হারিয়ে ফেলেছি আমাদের আসল সত্তা, আসল শিক্ষা। শিক্ষাগুরু বলতে তাঁদেরই বোঝায়, যাঁরা পাঠদান করাটাকে একটা ধর্মজ্ঞান মনে করতেন এবং নিজস্ব কৌশল প্রয়োগে শিক্ষাকে করে তুলতেন সময়োপযোগী। তাই বর্তমানে বিশ্বমানের কারিকুলামের অত্যাধুনিক প্রায়োগিক বিষয়টি সফল হওয়া জরুরি এবং তা সফল করতে গেলে প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতার উন্নয়ন প্রয়োজন।
সব হচ্ছে, সবটাই চলমানও আছে, শুধু অন্তঃকরণ পর্যন্ত বিশুদ্ধ বার্তা পৌঁছাতে পারছে না। হয়তো একসময় তা পৌঁছাবে এবং নতুন কারিকুলাম অনুসারে বিদ্যালয়ের পাঠপরিকল্পনা মোতাবেক প্রক্রিয়াটি সচল থাকবে, তা আশা করা যায়। ইতিমধ্যেই সপ্তম শ্রেণির একটি বইয়ে ট্রান্সজেন্ডার আর হিজড়া-সংশ্লিষ্ট শরীফ-শরিফাকে নিয়ে তোড়জোড় সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে। বায়োলজিক্যাল ব্যাখ্যা থেকে ধর্মীয় বিষয়সহ নানা রকমের ব্যাখ্যা-প্রতিব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে।
একধরনের বিবর্তন-প্রক্রিয়ায় সময় আজ স্মার্ট বিশ্বে উপনীত হয়েছে আর তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে বাংলাদেশ। স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক বহু রকমের প্রতিকূলতা পেছনে ফেলে এগিয়ে চলছে লাল-সবুজের পতাকাধারী এ দেশটি। বর্তমান জনগোষ্ঠীসহ নতুন প্রজন্ম এর ধারক ও বাহক। এ জন্য আগের সময়গুলো ভুলে না গিয়ে সেই সময়ের সুর, সততা ও শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলার ব্রত নিতে হবে। কিছু প্রশ্ন, কিছু অমিল, কিছু বিস্ময় নিয়েই পথচলা আর সেই পথচলায় একমাত্র সাথি হলো নিজের দৃঢ় অবস্থান থাকা জরুরি বিষয়।
লেখক: কবি
আগের দিনগুলোতে ফিরে যেতে মন চায়। শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের সোনালি দিনগুলোর ছবি চোখে মাঝেমধ্যেই ভাসে। সে সময় আকুলতা বৃদ্ধি পায় এবং মনের মধ্যে স্মৃতিকাতরতা ভিড় করে। সব মিলে আগের দিনগুলোই যে অসাধারণ ছিল, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
জীবনের গোধূলিবেলায় আরক্তিম দিগন্তের মনোরম দৃশ্যের মাঝে শ্রান্তির যে আহ্বান, তা যেন শরীর-মনকে চঞ্চল করে তোলে—একটা অনন্ত অবকাশের তৃষ্ণায় ছটফট করে মন। তখন ফেলে আসা শৈশব আর কৈশোরের দিনগুলো সামনে এসে দাঁড়ায় ৷ তখন মনে হয়, আসল জীবন সে সময়টাই ছিল। তবে অতীতের কষ্ট, যন্ত্রণাগুলো পরম যত্নে ভুলিয়ে দেয় এসব সুখস্মৃতি। বেঁচে থাকার প্রেরণাও বটে এসব নস্টালজিক ভাবনা।
তবে আগের দিনগুলো সব সময়ই ভালো ছিল এ কারণে যে ভাবনা কম ছিল, জীবনের উপলব্ধি কম ছিল এবং বৈষয়িক চিন্তাভাবনা করার কোনো সুযোগই ছিল না। আর বর্তমান সময়ের অস্থিরতাও তেমন ছিল না। রাজনৈতিক বা সামাজিক ক্ষেত্রেও ছিল তুলনমূলক স্বাভাবিক ও সহনীয় পরিবেশ, যা এখনকার সময়ে সেই সব বিষয়
বিস্ময়কর মনে হয়।
সেই সময়কার স্কুল, শিক্ষকদের মধ্যে এবং শিক্ষাব্যবস্থার একটা ওজন ছিল। ছিল ভয়, শ্রদ্ধা আর শিক্ষকদের শাসন এবং স্নেহ-ভালোবাসা। সবার মধ্যেই সততা ছিল। আত্মীয়-অনাত্মীয় সবার মাঝেই একটা আন্তরিকতার ভাব ছিল, যা কখনোই কৃত্রিম ছিল না।
আজকাল সব কেমন ওলট-পালট হয়ে গেছে। মানুষের মন কম মূল্যের খোলস পরে সন্দিহান চোখে অস্বস্তির মাঝে আনন্দের কথা ভুলেই গেছে একদম। সবখানেই জোড়াতালি আর আহাজারি। জানি না আগামী প্রজন্মকে নিয়ে আমরা কোথায় চলেছি? পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি কিছুতেই অভিভাবকদের স্বস্তি দিতে পারছে না। ছেলেমেয়েরা বাইরে যায় পড়ালেখার কারণেই। অথচ তাদের পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টজন নিতে পারছেন না। কোথায় যেন একটা ঘাটতি, কোথায় যেন একটি অসমাপ্ত কিছু?
বর্তমান সময়ে পারস্পরিক বোঝাপড়াসহ সহানুভূতি এবং শ্রদ্ধাবোধ হারিয়ে গেছে। ভক্তি বা শ্রদ্ধা মন থেকে উধাও আজকাল। পক্ষান্তরে স্নেহ, ভালোবাসা এসবেরও বেশ ঘাটতি। তখনকার পণ্ডিতব্যক্তিদের চেয়ে হাজার গুণ বেশি পাণ্ডিত্য এ সময়ের শিক্ষকদের; শিক্ষায়-দীক্ষায় ও জ্ঞান-বিজ্ঞানে এখনকার স্যাররা যথেষ্ট এগিয়ে। অথচ তুলনা করলে এখনকার স্যাররা বিগত দিনের পণ্ডিতজনদের কাছে নস্যি মাত্র।
পাঠ অনুশীলন বা চর্চা করার তাগিদ আমাদের নেই; কোনোভাবে সময়গুলো অতিক্রম করাই যেন মূল উদ্দেশ্য। এখনকার পড়ালেখায় কৌশল আছে সূক্ষ্মশৈলীর প্রয়োগে, কিন্তু তখনকার পড়ালেখায় বিন্দুমাত্র ফাঁকিবাজি ছিল না। আমরা হারিয়ে ফেলেছি আমাদের আসল সত্তা, আসল শিক্ষা। শিক্ষাগুরু বলতে তাঁদেরই বোঝায়, যাঁরা পাঠদান করাটাকে একটা ধর্মজ্ঞান মনে করতেন এবং নিজস্ব কৌশল প্রয়োগে শিক্ষাকে করে তুলতেন সময়োপযোগী। তাই বর্তমানে বিশ্বমানের কারিকুলামের অত্যাধুনিক প্রায়োগিক বিষয়টি সফল হওয়া জরুরি এবং তা সফল করতে গেলে প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতার উন্নয়ন প্রয়োজন।
সব হচ্ছে, সবটাই চলমানও আছে, শুধু অন্তঃকরণ পর্যন্ত বিশুদ্ধ বার্তা পৌঁছাতে পারছে না। হয়তো একসময় তা পৌঁছাবে এবং নতুন কারিকুলাম অনুসারে বিদ্যালয়ের পাঠপরিকল্পনা মোতাবেক প্রক্রিয়াটি সচল থাকবে, তা আশা করা যায়। ইতিমধ্যেই সপ্তম শ্রেণির একটি বইয়ে ট্রান্সজেন্ডার আর হিজড়া-সংশ্লিষ্ট শরীফ-শরিফাকে নিয়ে তোড়জোড় সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে। বায়োলজিক্যাল ব্যাখ্যা থেকে ধর্মীয় বিষয়সহ নানা রকমের ব্যাখ্যা-প্রতিব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে।
একধরনের বিবর্তন-প্রক্রিয়ায় সময় আজ স্মার্ট বিশ্বে উপনীত হয়েছে আর তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে বাংলাদেশ। স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক বহু রকমের প্রতিকূলতা পেছনে ফেলে এগিয়ে চলছে লাল-সবুজের পতাকাধারী এ দেশটি। বর্তমান জনগোষ্ঠীসহ নতুন প্রজন্ম এর ধারক ও বাহক। এ জন্য আগের সময়গুলো ভুলে না গিয়ে সেই সময়ের সুর, সততা ও শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলার ব্রত নিতে হবে। কিছু প্রশ্ন, কিছু অমিল, কিছু বিস্ময় নিয়েই পথচলা আর সেই পথচলায় একমাত্র সাথি হলো নিজের দৃঢ় অবস্থান থাকা জরুরি বিষয়।
লেখক: কবি
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪