Ajker Patrika

নাক ফজলির শুরু নওগাঁয়

নূরুন্নবী ফারুকী, ধামইরহাট (নওগাঁ)
আপডেট : ১৭ জুন ২০২২, ১৪: ৩২
নাক ফজলির শুরু নওগাঁয়

নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চল ধামইরহাটে বহুকাল ধরেই বাড়ির আঙিনা, খেলার মাঠ ও আশপাশে চোখে পড়ে নাক ফজলি জাতের আমগাছ। স্বাদে-গুণে অনন্য এ আমের ঘ্রাণ এক অসাধারণ অনুভূতির জন্ম দেয়। ফলে এ এলাকার মানুষ তাঁদের পরিবারের চাহিদা পূরণের জন্য নাক ফজলি আমের চারা রোপণ করেন।

জানা গেছে, সাবেক কৃষি কর্মকর্তা সেলিম রেজা নিজ উদ্যোগে ২০১৮ সালে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে নাক ফজলি আমকে ধামইরহাটের একমাত্র ব্র্যান্ডিং আম হিসেবে ঘোষণা করেন। বর্তমানে নাক ফজলি আমের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার গণ্ডি পেরিয়ে পত্নীতলা, বদলগাছী, সাপাহার, জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আমবাগানগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে নাক ফজলি।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর ধামইরহাট ও বদলগাছী উপজেলায় প্রথম এ আমের চাষ শুরু হয়। এই জাতের আম দেখতে দৈর্ঘ্য প্রায় চার ইঞ্চি আর প্রস্থ দেড় ইঞ্চি। নাক ফজলি আম কাঁচা অবস্থায় মিষ্টি হওয়ায় শিশুরা খেতে বেশ পছন্দ করে। এ ছাড়া মিষ্টতার দিক দিয়ে এই জাতের আম ল্যাংড়া ও আম্রপালির সমতুল্য। প্রত্যেকটি আমের ওজন ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। নাক ফজলি আমের খোসা পাতলা হয়। এই আম গাছ থেকে নামানোর উপযুক্ত সময় জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে। এ আম পাকার পরও শক্ত থাকে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে ঘরে রেখে খাওয়া যায়।

নাক ফজলি আমের সঠিক ইতিহাস এখনো অজানা থেকে গেলেও চাষি ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, বন বিভাগের তৎকালীন এম এল এস এস আফতাব হোসেনের হাত ধরে ১৯৬৭ সালে নওগাঁর বদলগাছীর ভান্ডারপুর এলাকায় এই আমের প্রথম বিস্তার লাভ করে।

অন্য এক সূত্রে জানা গেছে, ভান্ডারপুর এলাকার তৎকালীন জমিদার খুকুমনি লাহিড়ী নাক ফজলি আমের জাত সংগ্রহ করেন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কলকাতা থেকে। এরপর অন্য জমিদার বিনোদ কুমার লাহিড়ী প্রতিবছর তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তীর্থে ভারতে যেতেন। দেশে ফেরার পথে তিনি বিভিন্ন ধরনের ফলদ গাছের সঙ্গে নাক ফজলি জাতের চারা নিয়ে আসেন। তারপর ধীরে ধীরে এ এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে নাক ফজলি আমের পরিচিতি লাভ করে।

রামরামপুর এলাকার চাষি হান্নান দেওয়ান বলেন, প্রায় চার বিঘা জমিতে তিনি আমের বাগান করেছেন। তাঁর বাগানে বিভিন্ন জাতের আমের মধ্যে নাক ফজলি উল্লেখযোগ্য। এই জাতের আম আগাম পাকে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বহুদিন ধরে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় তিনি আমের ব্যবসা করেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌফিক আল জুবায়ের বলেন, স্বাদে-গুণে নাক ফজলির খ্যাতি সারা দেশে ছড়িয়েছে। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদা বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত