মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী
মার্কিন মুলুক থেকে প্রায়ই জানতে পারছি, সেখানকার স্কুলে বন্দুকধারী কোনো শিক্ষার্থী কিংবা উগ্র মানসিক কোনো তরুণ শিক্ষাঙ্গনে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ছে। তাতে ছাত্র-শিক্ষক হতাহত হচ্ছে। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নয়, সে দেশের দোকানপাট এবং বাসস্ট্যান্ডেও এ ধরনের হত্যাকাণ্ড প্রায়ই ঘটে থাকে। আমরা একদিকে বিস্মিত হই, অন্যদিকে প্রমাদ গুনি ভাগ্যিস আমাদের ছেলেপেলেরা এতটা বেপরোয়া হয়ে যায়নি।
কিন্তু সাভারের হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আশরাফুল আহসান জিতু তারই শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। হাসপাতালে মারা যান সেই শিক্ষক। শিক্ষকের অপরাধ ইভ টিজিংসহ আচরণগত সমস্যার কারণে শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান হিসেবে জিতুকে শাসন করা। শিক্ষককে আঘাতের পরও সে শিক্ষাঙ্গনে এসে বীরদর্পে ঘুরে গেছে। জিতু এলাকায় কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে বেড়াচ্ছিল। তার এভাবে বেড়ে ওঠার পেছনে অভিভাবকদের সমর্থন বা নীরব ভূমিকা ছিল। অথচ দশম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী এভাবে মানুষ হত্যার মতো গ্যাংস্টারে পরিণত হওয়া মার্কিন মুলুকের হঠাৎ রাইফেলধারী হয়ে ওঠার চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়।
এ রকম গ্যাংস্টার দেশে খুব কম নেই। প্রায়ই এরা সংবাদের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই বখাটে, মেয়েদের উত্ত্যক্তকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধমকি দেওয়া ব্যক্তিদের নাম গণমাধ্যমে উঠে আসে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে এমন বেপরোয়া শিক্ষার্থীর আতঙ্কে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই শিক্ষাজীবন কাটান, দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অনেকেই এ ধরনের বেপরোয়া শিক্ষার্থীর আচরণে বিব্রত হন। এরা রাজনৈতিক পরিচয়ে এমন বেপরোয়া হয়ে ওঠার ‘সুযোগ’ পায়। আবার ধর্মীয় কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত গুজবে বিশ্বাসী হয়ে শিক্ষার্থী নামধারী কিশোর-তরুণদের একটি অংশ শিক্ষককে অপদস্থ করতে মোটেও দ্বিধা করে না। এর উদাহরণ নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা পরিয়ে অপদস্থ করা, তিনজন শিক্ষকের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়াসহ কলেজে ভয়ানক দাঙ্গা সৃষ্টির মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এর পেছনে উসকানিদাতা হয়তো অনেকেই ছিল। অথচ ফেসবুকের সরাসরি ধর্ম-সংক্রান্ত নয় এমন একটি পোস্ট একজন শিক্ষার্থী শেয়ার দেওয়ার অপরাধে হিন্দু সম্প্রদায়ের কলেজশিক্ষকদের বিরুদ্ধে উত্তেজনা সৃষ্টি, শিক্ষককে এভাবে অপদস্থ করা, মেরে ফেলতে তেড়ে আসার বিষয়টি কতটা হিংসাত্মক মনোবৃত্তির পরিচয় বহন করে, তা সহজেই অনুমেয়।
কদিন আগে মুন্সিগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে তাঁরই শ্রেণিকক্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দেশে তুলকালাম ঘটিয়ে দিয়েছে। কয়েক বছর আগে একজন সংসদ সদস্য ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অপবাদ দিয়ে একজন প্রধান শিক্ষককে কান ধরিয়ে ওঠবস করিয়েছিলেন। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। শিক্ষককে অপদস্থ করার পেছনে কখনো ছাত্র, কখনো পরিচালনা কমিটি, কখনো স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ শিক্ষক অংশ নিচ্ছেন।
আবার উল্টো অভিজ্ঞতাও কম নয়। নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, তাঁর কয়েকজন সহকর্মী এবং লম্পট ছাত্র, স্থানীয় রাজনীতির কিছু ব্যক্তি জড়িত থাকার অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে। পত্রপত্রিকায় শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন, ছাত্রাবাসে ছাত্রদের বলাৎকার, যৌন হয়রানি ইত্যাদিতেও জড়িত থাকার অসংখ্য ঘটনা বাংলাদেশে প্রায়ই ঘটে থাকে। অনেক ঘটনা গণমাধ্যমেও আসে না। কিন্তু শিশু শিক্ষার্থীর বলাৎকারের বিষয়টি এখন সমাজে বড় ধরনের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসব হচ্ছে কেন? এই প্রশ্নের উত্তর রয়েছে কয়েকটি বিষয়ের ওপর। প্রথমত পরিবার, দ্বিতীয়ত সমাজ, তৃতীয়ত শিক্ষাব্যবস্থা এবং চতুর্থত দেশের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নিয়মনীতি ও নৈতিকতার পরিবর্তে অনিয়ম, পেশিশক্তি, উচ্চবিত্তের অহংবোধ, দলবাজি ইত্যাদিকে প্রশ্রয় দেওয়া। গোটা শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে ক্রমাগত অনিয়ম ভর করছে, শিক্ষার পরিবর্তে অশিক্ষা ও কুশিক্ষার দাপট বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিক্ষাঙ্গনের মর্যাদা বৃদ্ধির চেয়ে সামাজিক অন্ধবিশ্বাস, সাম্প্রদায়িকতা, বিজ্ঞানবিমুখতা, শিক্ষাসনদমুখিনতা, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ইত্যাদি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দীর্ঘ দিনের শিক্ষার অব্যবস্থাপনার কারণে এসবই দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। এরই প্রতিক্রিয়া এখন নীরবে বা সরবে প্রায়ই ঘটছে। অথচ শিক্ষা পশুত্ব, বিবেকহীনতা, সংকীর্ণতা, স্বার্থপরতা ইত্যাদি থেকে শিক্ষার্থীদের মুক্ত করার উপায় হিসেবে বিবেচিত।
আমাদের দেশের শিক্ষাঙ্গন এখন অনেক বিস্তৃত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। দেশে কতটি কেজি স্কুল রয়েছে তার পরিসংখ্যান নেই। কতটি কওমি মাদ্রাসা আছে তা-ও হলফ করে বলা যাবে না। নুরানি মাদ্রাসার সংখ্যাও কারও জানা নেই। এ ছাড়া আছে আলিয়া মাদ্রাসা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ, সরকারি স্কুল এবং কলেজ, বিদেশি কারিকুলামে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি শিক্ষা, নার্সিং, বিশেষায়িত ইত্যাদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যথার্থ পরিসংখ্যান পাওয়া মোটেও সহজ কাজ নয়।
সচরাচর বলা হয়ে থাকে, দেশে ৫ কোটি শিক্ষার্থী রয়েছে। তাহলে ধরে নিতে পারি, মোট জনসংখ্যার ৩ ভাগের ১ ভাগ শিক্ষার্থী। শিক্ষকতা পেশায় কতজন যুক্ত আছেন, তারও সঠিক পরিসংখ্যান নেই। বাংলাদেশের সংখ্যায় সবচেয়ে বড় পেশাজীবী হচ্ছেন শিক্ষকেরা। কিন্তু তাঁদের পরিচয় অনেকটাই প্রতিষ্ঠানভিত্তিক। চাকরিবিধি ও প্রতিষ্ঠানের মালিকানা কিংবা সরকারি স্বীকৃতির ওপর নির্ভরশীল। সে কারণে তাঁরা শিক্ষক হয়েও মর্যাদায় বেশির ভাগই ভিন্ন ভিন্ন গোত্রে যেন বিভক্ত। সংখ্যাটি ৩০ লাখের বেশি হবে। দেশে আরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন রয়েছে, আরও শিক্ষকেরও দরকার আছে। কিন্তু বলতে দ্বিধা নেই স্বাধীনতা-উত্তরকালে ফুলেফেঁপে ওঠা বিভিন্ন ধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে সম্পূর্ণরূপে অপরিকল্পিতভাবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তালিকায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই নাম নেই, স্বীকৃতিও নেই। সরকারি বেতন কিংবা মাসিক ভাতা পান এমন শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চেয়ে না পাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ঢের বেশি বলেই অনুমান করা যাচ্ছে। অথচ সব কটিকেই আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলছি, স্বীকৃতি দিচ্ছি, আমাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য সেগুলোতে পাঠাচ্ছি।
শিক্ষার নামে এমন নৈরাজ্য কোনো দেশে চলতে দেওয়া হয় বলে আমাদের জানা নেই। সমমানের শিক্ষার দাবি করা হলেও শিক্ষাক্রমে রয়েছে ভিন্নতা, পঠনপাঠনের সুযোগ-সুবিধায়ও রয়েছে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। পাঠদানে নিযুক্ত শিক্ষকদের মধ্যেও শিক্ষাগত যোগ্যতা, দক্ষতা, মানের ক্ষেত্রেও ন্যূনতম কোনো মানদণ্ড কার্যকর করা হচ্ছে না। পাঠ্যবইয়ের ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা প্রতিষ্ঠানের নানা অবস্থান ও পছন্দ। শিক্ষার সঙ্গে এর সম্পর্ক খুঁজতে গেলে হতাশ হওয়া ছাড়া উপায় নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেকোনো স্তরেই শিক্ষাক্রম বলে একটি আবশ্যিক অনুষঙ্গ রয়েছে। এর ভিত্তিতেই পাঠ্যপুস্তক রচিত হয়। শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়। কিন্তু বাংলাদেশে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই রয়েছে, যেগুলো বনিয়াদি শিক্ষার আবশ্যকীয় শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে না। শিক্ষার্থীদের নানা ভাষা ও ধরনের বইপুস্তক এবং নিয়মনীতিতে বেড়ে তোলার চেষ্টা করে থাকে, যা শিক্ষাবিজ্ঞান সমর্থন করে না। শিক্ষাবিজ্ঞানের নির্দেশনা, অনুশীলন, চর্চা সবাই বোঝেন— এমনটিও নয়।
এ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাংলাদেশের শহরগুলোতে তিন-চার দশক আগ থেকেই বেড়ে উঠেছে, এখন তা গ্রামেও জায়গা করে নিচ্ছে। ফলে শিক্ষার নামে যা কিছু চলছে তার অনেকটাই শিক্ষার দর্শনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা। অন্যদিকে সরকারি এবং অনুমোদনপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যেও রয়েছে নানা জোড়াতালি দিয়ে বেড়ে ওঠার কয়েক দশকের নজির। যেখানে শিক্ষাক্রম, পাঠ্যপুস্তক, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যকর থাকলেও মানের বৈষম্য এতটাই প্রকট যে বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই মানসম্মত পাঠদানে সক্ষমতা রাখে না। ফলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার কারণেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও গড়ে তোলার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না। তাই সর্বত্রই শিক্ষার মানের সমস্যা প্রকট হয়ে উঠছে। বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই গুরুত্ব হারাতে বসেছে। এর ফলে একটি বিরাটসংখ্যক শিক্ষার্থী শিক্ষাবিমুখ হয়ে পড়ছে, ঝরেও পড়ছে, অদক্ষ জনগোষ্ঠীতে নাম লেখাচ্ছে।
বহুধাবিভক্ত এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা থেকে প্রত্যাশিত মানের শিক্ষার্থী ক্রমেই যেন কমে আসতে শুরু করেছে। বিশ্বজনীন এবং দেশীয় নানা বাস্তবতা এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ফলে শিক্ষাব্যবস্থার অভ্যন্তরে শিশু-কিশোর, তরুণদের পঠনপাঠন নানা জটিল অবস্থার মুখে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বিরাজমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখা দরকার, নিজেরা কতটা প্রস্তুত সে ধরনের কোনো চিন্তাভাবনা নীতিনির্ধারণী এবং প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে খুব একটা দেখা যায় না। সে কারণেই দেশের শিক্ষাব্যবস্থা আকারে বড় হয়ে উঠলেও প্রকারে বিভক্তি এবং দুর্বলতার ফলে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাই নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আইন, বিধিবিধান জানেন না, মানেনও না। আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগেও রয়েছে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অযোগ্যদের নানা ফাঁকফোকর। শ্রেণিপাঠের পরিবর্তে কোচিং, নোটবই, গাইডবই এবং পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের নানা ব্যবস্থা। জিপিএ-৫ পাওয়ার দৌড়ে শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মনোযোগ যেখানে, সেখানে শিক্ষার্থীর মানসগঠন, সাংস্কৃতিক বোধ, সমাজ ও বিশ্ববাস্তবতার জ্ঞান আহরণ হারিয়ে যেতে বসেছে। ফলে শিক্ষার নামে যা চলছে তাতে মেধাবী, যুক্তিশীল, উদার মানসিকতা, সৃজনশীলতা, উদ্ভাবনী ক্ষমতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে হারিয়ে যেতে বসেছে। সে স্থান দখল করছে কার্যত অর্ধশিক্ষা, বখে যাওয়া, বেকার হওয়া এবং সমাজ ও সভ্যতাবিরোধী বিশ্বাসে বেড়ে ওঠা তরুণ-তরুণীতে।
মার্কিন মুলুক থেকে প্রায়ই জানতে পারছি, সেখানকার স্কুলে বন্দুকধারী কোনো শিক্ষার্থী কিংবা উগ্র মানসিক কোনো তরুণ শিক্ষাঙ্গনে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ছে। তাতে ছাত্র-শিক্ষক হতাহত হচ্ছে। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নয়, সে দেশের দোকানপাট এবং বাসস্ট্যান্ডেও এ ধরনের হত্যাকাণ্ড প্রায়ই ঘটে থাকে। আমরা একদিকে বিস্মিত হই, অন্যদিকে প্রমাদ গুনি ভাগ্যিস আমাদের ছেলেপেলেরা এতটা বেপরোয়া হয়ে যায়নি।
কিন্তু সাভারের হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আশরাফুল আহসান জিতু তারই শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। হাসপাতালে মারা যান সেই শিক্ষক। শিক্ষকের অপরাধ ইভ টিজিংসহ আচরণগত সমস্যার কারণে শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান হিসেবে জিতুকে শাসন করা। শিক্ষককে আঘাতের পরও সে শিক্ষাঙ্গনে এসে বীরদর্পে ঘুরে গেছে। জিতু এলাকায় কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে বেড়াচ্ছিল। তার এভাবে বেড়ে ওঠার পেছনে অভিভাবকদের সমর্থন বা নীরব ভূমিকা ছিল। অথচ দশম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী এভাবে মানুষ হত্যার মতো গ্যাংস্টারে পরিণত হওয়া মার্কিন মুলুকের হঠাৎ রাইফেলধারী হয়ে ওঠার চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়।
এ রকম গ্যাংস্টার দেশে খুব কম নেই। প্রায়ই এরা সংবাদের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই বখাটে, মেয়েদের উত্ত্যক্তকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধমকি দেওয়া ব্যক্তিদের নাম গণমাধ্যমে উঠে আসে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে এমন বেপরোয়া শিক্ষার্থীর আতঙ্কে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই শিক্ষাজীবন কাটান, দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অনেকেই এ ধরনের বেপরোয়া শিক্ষার্থীর আচরণে বিব্রত হন। এরা রাজনৈতিক পরিচয়ে এমন বেপরোয়া হয়ে ওঠার ‘সুযোগ’ পায়। আবার ধর্মীয় কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত গুজবে বিশ্বাসী হয়ে শিক্ষার্থী নামধারী কিশোর-তরুণদের একটি অংশ শিক্ষককে অপদস্থ করতে মোটেও দ্বিধা করে না। এর উদাহরণ নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা পরিয়ে অপদস্থ করা, তিনজন শিক্ষকের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়াসহ কলেজে ভয়ানক দাঙ্গা সৃষ্টির মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এর পেছনে উসকানিদাতা হয়তো অনেকেই ছিল। অথচ ফেসবুকের সরাসরি ধর্ম-সংক্রান্ত নয় এমন একটি পোস্ট একজন শিক্ষার্থী শেয়ার দেওয়ার অপরাধে হিন্দু সম্প্রদায়ের কলেজশিক্ষকদের বিরুদ্ধে উত্তেজনা সৃষ্টি, শিক্ষককে এভাবে অপদস্থ করা, মেরে ফেলতে তেড়ে আসার বিষয়টি কতটা হিংসাত্মক মনোবৃত্তির পরিচয় বহন করে, তা সহজেই অনুমেয়।
কদিন আগে মুন্সিগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে তাঁরই শ্রেণিকক্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দেশে তুলকালাম ঘটিয়ে দিয়েছে। কয়েক বছর আগে একজন সংসদ সদস্য ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অপবাদ দিয়ে একজন প্রধান শিক্ষককে কান ধরিয়ে ওঠবস করিয়েছিলেন। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। শিক্ষককে অপদস্থ করার পেছনে কখনো ছাত্র, কখনো পরিচালনা কমিটি, কখনো স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ শিক্ষক অংশ নিচ্ছেন।
আবার উল্টো অভিজ্ঞতাও কম নয়। নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, তাঁর কয়েকজন সহকর্মী এবং লম্পট ছাত্র, স্থানীয় রাজনীতির কিছু ব্যক্তি জড়িত থাকার অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে। পত্রপত্রিকায় শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন, ছাত্রাবাসে ছাত্রদের বলাৎকার, যৌন হয়রানি ইত্যাদিতেও জড়িত থাকার অসংখ্য ঘটনা বাংলাদেশে প্রায়ই ঘটে থাকে। অনেক ঘটনা গণমাধ্যমেও আসে না। কিন্তু শিশু শিক্ষার্থীর বলাৎকারের বিষয়টি এখন সমাজে বড় ধরনের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসব হচ্ছে কেন? এই প্রশ্নের উত্তর রয়েছে কয়েকটি বিষয়ের ওপর। প্রথমত পরিবার, দ্বিতীয়ত সমাজ, তৃতীয়ত শিক্ষাব্যবস্থা এবং চতুর্থত দেশের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নিয়মনীতি ও নৈতিকতার পরিবর্তে অনিয়ম, পেশিশক্তি, উচ্চবিত্তের অহংবোধ, দলবাজি ইত্যাদিকে প্রশ্রয় দেওয়া। গোটা শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে ক্রমাগত অনিয়ম ভর করছে, শিক্ষার পরিবর্তে অশিক্ষা ও কুশিক্ষার দাপট বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিক্ষাঙ্গনের মর্যাদা বৃদ্ধির চেয়ে সামাজিক অন্ধবিশ্বাস, সাম্প্রদায়িকতা, বিজ্ঞানবিমুখতা, শিক্ষাসনদমুখিনতা, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ইত্যাদি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দীর্ঘ দিনের শিক্ষার অব্যবস্থাপনার কারণে এসবই দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। এরই প্রতিক্রিয়া এখন নীরবে বা সরবে প্রায়ই ঘটছে। অথচ শিক্ষা পশুত্ব, বিবেকহীনতা, সংকীর্ণতা, স্বার্থপরতা ইত্যাদি থেকে শিক্ষার্থীদের মুক্ত করার উপায় হিসেবে বিবেচিত।
আমাদের দেশের শিক্ষাঙ্গন এখন অনেক বিস্তৃত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। দেশে কতটি কেজি স্কুল রয়েছে তার পরিসংখ্যান নেই। কতটি কওমি মাদ্রাসা আছে তা-ও হলফ করে বলা যাবে না। নুরানি মাদ্রাসার সংখ্যাও কারও জানা নেই। এ ছাড়া আছে আলিয়া মাদ্রাসা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ, সরকারি স্কুল এবং কলেজ, বিদেশি কারিকুলামে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি শিক্ষা, নার্সিং, বিশেষায়িত ইত্যাদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যথার্থ পরিসংখ্যান পাওয়া মোটেও সহজ কাজ নয়।
সচরাচর বলা হয়ে থাকে, দেশে ৫ কোটি শিক্ষার্থী রয়েছে। তাহলে ধরে নিতে পারি, মোট জনসংখ্যার ৩ ভাগের ১ ভাগ শিক্ষার্থী। শিক্ষকতা পেশায় কতজন যুক্ত আছেন, তারও সঠিক পরিসংখ্যান নেই। বাংলাদেশের সংখ্যায় সবচেয়ে বড় পেশাজীবী হচ্ছেন শিক্ষকেরা। কিন্তু তাঁদের পরিচয় অনেকটাই প্রতিষ্ঠানভিত্তিক। চাকরিবিধি ও প্রতিষ্ঠানের মালিকানা কিংবা সরকারি স্বীকৃতির ওপর নির্ভরশীল। সে কারণে তাঁরা শিক্ষক হয়েও মর্যাদায় বেশির ভাগই ভিন্ন ভিন্ন গোত্রে যেন বিভক্ত। সংখ্যাটি ৩০ লাখের বেশি হবে। দেশে আরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন রয়েছে, আরও শিক্ষকেরও দরকার আছে। কিন্তু বলতে দ্বিধা নেই স্বাধীনতা-উত্তরকালে ফুলেফেঁপে ওঠা বিভিন্ন ধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে সম্পূর্ণরূপে অপরিকল্পিতভাবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তালিকায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই নাম নেই, স্বীকৃতিও নেই। সরকারি বেতন কিংবা মাসিক ভাতা পান এমন শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চেয়ে না পাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ঢের বেশি বলেই অনুমান করা যাচ্ছে। অথচ সব কটিকেই আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলছি, স্বীকৃতি দিচ্ছি, আমাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য সেগুলোতে পাঠাচ্ছি।
শিক্ষার নামে এমন নৈরাজ্য কোনো দেশে চলতে দেওয়া হয় বলে আমাদের জানা নেই। সমমানের শিক্ষার দাবি করা হলেও শিক্ষাক্রমে রয়েছে ভিন্নতা, পঠনপাঠনের সুযোগ-সুবিধায়ও রয়েছে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। পাঠদানে নিযুক্ত শিক্ষকদের মধ্যেও শিক্ষাগত যোগ্যতা, দক্ষতা, মানের ক্ষেত্রেও ন্যূনতম কোনো মানদণ্ড কার্যকর করা হচ্ছে না। পাঠ্যবইয়ের ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা প্রতিষ্ঠানের নানা অবস্থান ও পছন্দ। শিক্ষার সঙ্গে এর সম্পর্ক খুঁজতে গেলে হতাশ হওয়া ছাড়া উপায় নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেকোনো স্তরেই শিক্ষাক্রম বলে একটি আবশ্যিক অনুষঙ্গ রয়েছে। এর ভিত্তিতেই পাঠ্যপুস্তক রচিত হয়। শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়। কিন্তু বাংলাদেশে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই রয়েছে, যেগুলো বনিয়াদি শিক্ষার আবশ্যকীয় শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে না। শিক্ষার্থীদের নানা ভাষা ও ধরনের বইপুস্তক এবং নিয়মনীতিতে বেড়ে তোলার চেষ্টা করে থাকে, যা শিক্ষাবিজ্ঞান সমর্থন করে না। শিক্ষাবিজ্ঞানের নির্দেশনা, অনুশীলন, চর্চা সবাই বোঝেন— এমনটিও নয়।
এ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাংলাদেশের শহরগুলোতে তিন-চার দশক আগ থেকেই বেড়ে উঠেছে, এখন তা গ্রামেও জায়গা করে নিচ্ছে। ফলে শিক্ষার নামে যা কিছু চলছে তার অনেকটাই শিক্ষার দর্শনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা। অন্যদিকে সরকারি এবং অনুমোদনপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যেও রয়েছে নানা জোড়াতালি দিয়ে বেড়ে ওঠার কয়েক দশকের নজির। যেখানে শিক্ষাক্রম, পাঠ্যপুস্তক, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যকর থাকলেও মানের বৈষম্য এতটাই প্রকট যে বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই মানসম্মত পাঠদানে সক্ষমতা রাখে না। ফলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার কারণেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও গড়ে তোলার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না। তাই সর্বত্রই শিক্ষার মানের সমস্যা প্রকট হয়ে উঠছে। বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই গুরুত্ব হারাতে বসেছে। এর ফলে একটি বিরাটসংখ্যক শিক্ষার্থী শিক্ষাবিমুখ হয়ে পড়ছে, ঝরেও পড়ছে, অদক্ষ জনগোষ্ঠীতে নাম লেখাচ্ছে।
বহুধাবিভক্ত এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা থেকে প্রত্যাশিত মানের শিক্ষার্থী ক্রমেই যেন কমে আসতে শুরু করেছে। বিশ্বজনীন এবং দেশীয় নানা বাস্তবতা এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ফলে শিক্ষাব্যবস্থার অভ্যন্তরে শিশু-কিশোর, তরুণদের পঠনপাঠন নানা জটিল অবস্থার মুখে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বিরাজমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখা দরকার, নিজেরা কতটা প্রস্তুত সে ধরনের কোনো চিন্তাভাবনা নীতিনির্ধারণী এবং প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে খুব একটা দেখা যায় না। সে কারণেই দেশের শিক্ষাব্যবস্থা আকারে বড় হয়ে উঠলেও প্রকারে বিভক্তি এবং দুর্বলতার ফলে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাই নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আইন, বিধিবিধান জানেন না, মানেনও না। আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগেও রয়েছে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অযোগ্যদের নানা ফাঁকফোকর। শ্রেণিপাঠের পরিবর্তে কোচিং, নোটবই, গাইডবই এবং পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের নানা ব্যবস্থা। জিপিএ-৫ পাওয়ার দৌড়ে শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মনোযোগ যেখানে, সেখানে শিক্ষার্থীর মানসগঠন, সাংস্কৃতিক বোধ, সমাজ ও বিশ্ববাস্তবতার জ্ঞান আহরণ হারিয়ে যেতে বসেছে। ফলে শিক্ষার নামে যা চলছে তাতে মেধাবী, যুক্তিশীল, উদার মানসিকতা, সৃজনশীলতা, উদ্ভাবনী ক্ষমতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে হারিয়ে যেতে বসেছে। সে স্থান দখল করছে কার্যত অর্ধশিক্ষা, বখে যাওয়া, বেকার হওয়া এবং সমাজ ও সভ্যতাবিরোধী বিশ্বাসে বেড়ে ওঠা তরুণ-তরুণীতে।
সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশে বিদেশে’ বইয়ের হরফুন মৌলা বা সকল কাজের কাজী আবদুর রহমানের বলা একটি বাক্য—‘ইনহাস্ত ওয়াতানাম’—‘এই আমার জন্মভূমি’। সে কথা বলার সময় আফগানি আবদুর রহমানের চোখেমুখে যে অম্লান দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছিল, সে কথা দিব্যি অনুভব করে নেওয়া যায়...
১৭ ঘণ্টা আগেবিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৮ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪