Ajker Patrika

অচেনা ভানু

সম্পাদকীয়
অচেনা ভানু

দেশভাগের পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রথম গভর্নর বা রাজ্যপাল হয়েছিলেন রাজা গোপালাচারী। তাঁর সম্মানার্থে তিন দিনব্যাপী একটি বিচিত্রানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। তার কিছুদিন আগে তুলসী লাহিড়ীর লেখা ও সুশীল মজুমদার পরিচালিত ‘সর্বহারা’ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে। সেই সিনেমার সুরকার ছিলেন সিদ্ধেশ্বর মুখোপাধ্যায়।

রবীন মজুমদার ও নীলিমা বন্দ্যোপাধ্যায় সে ছবির নায়ক-নায়িকার গানের নেপথ্যে কণ্ঠ দিয়েছিলেন। নীলিমা বন্দ্যোপাধ্যায় এ ছবিতেই প্রথম গান করেছিলেন এবং তিনি ছিলেন ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী। ছবিতে একটি ছোট চরিত্রে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ও অভিনয় করেছিলেন। তিন দিনের সেই অনুষ্ঠানে নীলিমা ও রবীন মজুমদারসহ আরও অনেকে নিমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। নিমন্ত্রণ করতে এসেছিলেন রাজ্যপালের এডি হরিদাস ভট্টাচার্য। নীলিমা বললেন, ‘ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় তো অফিসে। আপনি তাঁর অফিসে যোগাযোগ করুন, তাহলে তাঁর সঙ্গে আমি যেতে পারব।’

বিকেলে রাজভবন থেকে গাড়ি এল। গাড়িকে নির্দেশ দেওয়া ছিল নীলিমা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলে নিয়ে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়কেও অফিস থেকে তুলে নেওয়া হবে। রাজভবনে পৌঁছানোর পর হরিদাস ভট্টাচার্য সবাইকে বরণ করে নিলেন। কিন্তু ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে তাকালেনও না, বাতচিতও করলেন না। নীলিমা ভাবলেন, ভানু তো শিল্পী হিসেবে নিমন্ত্রণ পেয়ে আসেননি, তাই এই ‘অভ্যর্থনা’। তবু মনে খচখচ। হরিদাস ভট্টাচার্য তো ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। সে হিসেবেও তো সাধারণ শিষ্টাচার পালনের স্বার্থে কথা বলবেন!

ভানুর অবশ্য তাতে কিছুই যায়-আসে না। তিনি এই অবজ্ঞা গায়েই মাখেননি। বিদায়বেলায় গাড়িতে ওঠার সময় ভট্টাচার্য মশাইয়ের চোখ পড়ল ভানুর দিকে। বললেন, ‘ইনি কে?’
ভানুই তড়িঘড়ি করে বললেন, ‘এ অধম হচ্ছে আপনার আজকের প্রখ্যাত শিল্পী নীলিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বামী।’

হরিদাস ভট্টাচার্য খুবই লজ্জিত হয়ে পড়লেন। জানা গেল, তিনি টেলিফোনে ভানুর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে চিনতে পারেননি।

ভানুর জনপ্রিয়তা বাড়তে বাড়তে এমন হয়েছিল যে তাঁকে দেখলেই আশপাশ থেকে মানুষ বিভিন্ন সিনেমায় তাঁর বলা সংলাপ মুখস্থ বলে দিতেন। কিন্তু রাজভবনের এই ঘটনা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর খুনসুটি চলেছে দীর্ঘকাল। 

সূত্র: ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, লেখালেখি, পৃষ্ঠা ৬-৭ 

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত