সঙ্গীতা ইমাম

সেদিন (১৭ জুলাই) শহীদ মিনার থেকে বিদায় দিয়ে এলাম এক গানের পাখিকে, আমাদের মুক্তিসংগ্রামের এক বীর যোদ্ধাকে। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ফুলের বেদনায় বিদায় জানালাম বাংলার সেই সাহসী সন্তানকে, যিনি শৈশব উত্তীর্ণ সময়ে দেশের মুক্তির জন্য কণ্ঠের অস্ত্রে যুদ্ধ করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কনিষ্ঠ কণ্ঠযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশ প্রয়াত হয়েছেন।
সোমবার বৃষ্টিস্নাত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের লাল চত্বরে, লাল সবুজের পতাকায় ঢাকা বুলবুল মহলানবীশকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনারের মাধ্যমে শ্রদ্ধায় শেষবিদায় জানানো হয়েছে। থেমে গেল সেই কণ্ঠ, যে কণ্ঠের উদ্দীপনা মুক্তিযোদ্ধাদের আন্দোলিত করেছিল, শপথে বলীয়ান করেছিল গ্রামেগঞ্জে, শহরে-বন্দরে, ট্রেঞ্চে আর বাংকারে। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ শুনেছিল, ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’।
একাত্তরে আমার বাবা-মা সৈয়দ হাসান ইমাম ও লায়লা হাসানের সঙ্গে আড়াই বছরের আমিও যাতায়াত করতাম কলকাতার বালিগঞ্জের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। সে সময় আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশকে দেখেছি কি না, তাঁর আদর পেয়েছি কি না, আমার স্মরণে নেই। তবে মায়ের কাছে শুনেছি, সদ্য বিবাহিত বুলবুল খালার বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বামী সাব সেক্টর কমান্ডার সরিত কুমার লালা তখন সম্মুখ সমরে। আর বুলবুল খালা কলকাতার এক শহরতলি থেকে রোজ ট্রেনে-বাসে করে আসতেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অফিসে।
মহড়া, রেকর্ডিং সেরে, বাজার করে আবার ফিরে যেতেন সেখানে। অসাধারণ সুন্দরী ছিলেন। সেই বিড়ম্বনাও সইতে হতো পথেঘাটে। এত কিছুর পরেও দেশপ্রেমে কোনো ঘাটতি ছিল না। তিনি যেমন ছিলেন অপরূপ সুন্দর, তেমনি ছিলেন দুর্দান্ত সাহসী। আর প্রতিভায় ছিলেন বহুমাত্রিক। বুলবুল মহলানবীশ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কেবল যে সংগীতশিল্পী হিসেবে যুদ্ধ করেছেন, তা-ই নয়; তিনি অভিনয়শিল্পী হিসেবেও কাজ করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কল্যাণ মিত্রের জল্লাদের দরবার নাটকে তিনি মূল নারী চরিত্রে অভিনয় করতেন। এ নাটকটি তখন অনেক জনপ্রিয় ছিল। আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাসেও এ নাটকটির গুরুত্ব অপরিসীম।
আমি যখন সাংস্কৃতিক আন্দোলনে যুক্ত হয়েছি, বুলবুল মহলানবীশ তখন জ্বলজ্বলে নক্ষত্র। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হয়েও রাজপথের আন্দোলনে তাঁকে নিয়মিত পেয়েছি। ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স করার পর তিনি প্রবাসে চলে গিয়েছিলেন। ১৯৮৭ সালে ফিরে আসেন ঢাকায় এবং এসেই যুক্ত হন নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে। আমরা তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ডাকসুর সাংস্কৃতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে অশোক কর্মকারের নেতৃত্বে সারা দেশে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কাজ করছি।
তখন বুলবুল খালাকে দেখেছি আন্দোলনের নানা পর্যায়ে সক্রিয় ছিলেন। তাঁর উপস্থিতি আমাদের প্রাণিত করত। শিল্পের অগ্রযাত্রায় উদীচীর সব আয়োজনে, কখনো পরিবেশনায়, কখনো বক্তব্যে, কখনো প্রশিক্ষক হিসেবে, আবার কখনো বা বিচারক হিসেবে ডাকলে তাঁকে পাইনি—এমন ঘটনা কখনোই ঘটেনি। সারা দেশের সাংগঠনিক নানা প্রশিক্ষণেও ছিল তাঁর সাগ্রহ উপস্থিতি। এমন একজন প্রাণবন্ত সংস্কৃতিজন চলে গেলেন সবাইকে অশ্রুসিক্ত করে। সময়ের নিষ্ঠুর সত্য হলেও, এ সত্য আমরা মেনে নিতে পারি না; অন্তত বুলবুল খালাকে আমরা যারা কাছ থেকে দেখেছি, তাঁর স্নেহ-ভালোবাসা পেয়েছি।
প্রকৃতি উদ্যাপনের সর্বজনীন উৎসবগুলো অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বুঝেছিলেন আমাদের পথিকৃৎ প্রজন্ম। জাতীয় নবান্নোৎসব উদ্যাপন পর্ষদ গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম উৎসবের অন্যতম নবান্ন উদ্যাপন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এই কমিটির সহসভাপতি বুলবুল মহলানবীশ। প্রতিটি আয়োজনে অর্থ সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিজ্ঞাপন জোগাড়সহ বহু কাজে যুক্ত থাকতেন তিনি। সরবে অংশ নিতেন সভাগুলোয়। নিতেন বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত। উজ্জ্বল এ মহাপ্রাণের সঙ্গে কাজ করেছি উদীচীতে। অনুষ্ঠান আয়োজনে তাঁর আলোকিত উপস্থিতি আমাদের শিখিয়েছে অনেক কিছু। কেবল উদীচীই নয়, বুলবুল মহলানবীশ ছিলেন নজরুলসংগীত শিল্পী পরিষদের সহসভাপতি, ছিলেন রবীন্দ্র একাডেমির সাধারণ সম্পাদক। জাতীয় কবিতা পরিষদ, কচি-কাঁচার মেলা, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শিল্পী পরিষদসহ বহু সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
বুলবুল খালার সঙ্গে আমার আরেকটি স্মৃতিময় স্থান হলো অমর একুশে বইমেলা। এবারের মেলায় অসুস্থ থাকার কারণে তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। কিন্তু করোনার আগে, প্রতিটি মেলাতেই তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হতো। কী অপার স্নেহে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরতেন মেলার মাঠে! লেখালেখির খোঁজ নিতেন, আমার বইয়ের খোঁজ নিতেন। খালার বইগুলো আমার বুকশেলফে আজও সযত্নে রাখা আছে।
তাঁর শুভেচ্ছাবার্তা লেখা বইগুলোর প্রথম পাতা দেখলে কত স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে। ১২টির বেশি বই রয়েছে লেখক বুলবুল মহলানবীশের। তাঁর লেখা দুটো বই—‘পূর্ব বাংলার সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধের পূর্ব প্রস্তুতি ও স্মৃতি ’৭১’ বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ আকর। নতুন প্রজন্মের প্রত্যেকেরই এ বই দুটো পড়া উচিত আমাদের ইতিহাসের সত্য তথ্য জানতে।
সত্যিকার অর্থে, মুক্তিযুদ্ধে গড়ে ওঠা সম্পর্ক রক্তের সব সম্পর্ককে ছাপিয়ে যায়। একাত্তরের সেই উত্তাল দুর্বহ দিনগুলোতে আমরা একসঙ্গে জীবন কাটিয়েছি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীরা নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও মুক্তিযুদ্ধ চালিয়েছেন। সে সময়েই সম্পর্কে তিনি আমার মায়ের ছোট বোন হয়ে গিয়েছিলেন, আর আমার কাছে হয়ে উঠেছিলেন প্রিয় বুলবুল খালা। তাঁর আদর পেয়েছি অফুরান।
সুমিষ্ট বচনে সেই আদর অতুলনীয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, যে বীর প্রজন্মের লড়াইয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, সেই বাংলাদেশকে মুক্তিসংগ্রামের আদর্শে প্রোজ্জ্বল করার দায়িত্ব আমাদের। শুধু অশ্রু নদীতে ভাসলেই দায়িত্ব শেষ হবে না।
যে দায়িত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশ আমাদের কাঁধে তুলে দিয়েছেন, তা পালনের শপথ মঞ্চই যেন ছিল শহীদ মিনার। বুলবুল মহলানবীশের মতো মানুষের মৃত্যু নেই। তিনি বিরাজ করবেন আমাদের অন্তরে। অতল শ্রদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী-সংগ্রামী বুলবুল মহলানবীশের প্রতি।
লেখক: শিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী

সেদিন (১৭ জুলাই) শহীদ মিনার থেকে বিদায় দিয়ে এলাম এক গানের পাখিকে, আমাদের মুক্তিসংগ্রামের এক বীর যোদ্ধাকে। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ফুলের বেদনায় বিদায় জানালাম বাংলার সেই সাহসী সন্তানকে, যিনি শৈশব উত্তীর্ণ সময়ে দেশের মুক্তির জন্য কণ্ঠের অস্ত্রে যুদ্ধ করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কনিষ্ঠ কণ্ঠযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশ প্রয়াত হয়েছেন।
সোমবার বৃষ্টিস্নাত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের লাল চত্বরে, লাল সবুজের পতাকায় ঢাকা বুলবুল মহলানবীশকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনারের মাধ্যমে শ্রদ্ধায় শেষবিদায় জানানো হয়েছে। থেমে গেল সেই কণ্ঠ, যে কণ্ঠের উদ্দীপনা মুক্তিযোদ্ধাদের আন্দোলিত করেছিল, শপথে বলীয়ান করেছিল গ্রামেগঞ্জে, শহরে-বন্দরে, ট্রেঞ্চে আর বাংকারে। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ শুনেছিল, ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’।
একাত্তরে আমার বাবা-মা সৈয়দ হাসান ইমাম ও লায়লা হাসানের সঙ্গে আড়াই বছরের আমিও যাতায়াত করতাম কলকাতার বালিগঞ্জের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। সে সময় আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশকে দেখেছি কি না, তাঁর আদর পেয়েছি কি না, আমার স্মরণে নেই। তবে মায়ের কাছে শুনেছি, সদ্য বিবাহিত বুলবুল খালার বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বামী সাব সেক্টর কমান্ডার সরিত কুমার লালা তখন সম্মুখ সমরে। আর বুলবুল খালা কলকাতার এক শহরতলি থেকে রোজ ট্রেনে-বাসে করে আসতেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অফিসে।
মহড়া, রেকর্ডিং সেরে, বাজার করে আবার ফিরে যেতেন সেখানে। অসাধারণ সুন্দরী ছিলেন। সেই বিড়ম্বনাও সইতে হতো পথেঘাটে। এত কিছুর পরেও দেশপ্রেমে কোনো ঘাটতি ছিল না। তিনি যেমন ছিলেন অপরূপ সুন্দর, তেমনি ছিলেন দুর্দান্ত সাহসী। আর প্রতিভায় ছিলেন বহুমাত্রিক। বুলবুল মহলানবীশ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কেবল যে সংগীতশিল্পী হিসেবে যুদ্ধ করেছেন, তা-ই নয়; তিনি অভিনয়শিল্পী হিসেবেও কাজ করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কল্যাণ মিত্রের জল্লাদের দরবার নাটকে তিনি মূল নারী চরিত্রে অভিনয় করতেন। এ নাটকটি তখন অনেক জনপ্রিয় ছিল। আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাসেও এ নাটকটির গুরুত্ব অপরিসীম।
আমি যখন সাংস্কৃতিক আন্দোলনে যুক্ত হয়েছি, বুলবুল মহলানবীশ তখন জ্বলজ্বলে নক্ষত্র। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হয়েও রাজপথের আন্দোলনে তাঁকে নিয়মিত পেয়েছি। ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স করার পর তিনি প্রবাসে চলে গিয়েছিলেন। ১৯৮৭ সালে ফিরে আসেন ঢাকায় এবং এসেই যুক্ত হন নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে। আমরা তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ডাকসুর সাংস্কৃতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে অশোক কর্মকারের নেতৃত্বে সারা দেশে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কাজ করছি।
তখন বুলবুল খালাকে দেখেছি আন্দোলনের নানা পর্যায়ে সক্রিয় ছিলেন। তাঁর উপস্থিতি আমাদের প্রাণিত করত। শিল্পের অগ্রযাত্রায় উদীচীর সব আয়োজনে, কখনো পরিবেশনায়, কখনো বক্তব্যে, কখনো প্রশিক্ষক হিসেবে, আবার কখনো বা বিচারক হিসেবে ডাকলে তাঁকে পাইনি—এমন ঘটনা কখনোই ঘটেনি। সারা দেশের সাংগঠনিক নানা প্রশিক্ষণেও ছিল তাঁর সাগ্রহ উপস্থিতি। এমন একজন প্রাণবন্ত সংস্কৃতিজন চলে গেলেন সবাইকে অশ্রুসিক্ত করে। সময়ের নিষ্ঠুর সত্য হলেও, এ সত্য আমরা মেনে নিতে পারি না; অন্তত বুলবুল খালাকে আমরা যারা কাছ থেকে দেখেছি, তাঁর স্নেহ-ভালোবাসা পেয়েছি।
প্রকৃতি উদ্যাপনের সর্বজনীন উৎসবগুলো অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বুঝেছিলেন আমাদের পথিকৃৎ প্রজন্ম। জাতীয় নবান্নোৎসব উদ্যাপন পর্ষদ গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম উৎসবের অন্যতম নবান্ন উদ্যাপন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এই কমিটির সহসভাপতি বুলবুল মহলানবীশ। প্রতিটি আয়োজনে অর্থ সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিজ্ঞাপন জোগাড়সহ বহু কাজে যুক্ত থাকতেন তিনি। সরবে অংশ নিতেন সভাগুলোয়। নিতেন বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত। উজ্জ্বল এ মহাপ্রাণের সঙ্গে কাজ করেছি উদীচীতে। অনুষ্ঠান আয়োজনে তাঁর আলোকিত উপস্থিতি আমাদের শিখিয়েছে অনেক কিছু। কেবল উদীচীই নয়, বুলবুল মহলানবীশ ছিলেন নজরুলসংগীত শিল্পী পরিষদের সহসভাপতি, ছিলেন রবীন্দ্র একাডেমির সাধারণ সম্পাদক। জাতীয় কবিতা পরিষদ, কচি-কাঁচার মেলা, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শিল্পী পরিষদসহ বহু সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
বুলবুল খালার সঙ্গে আমার আরেকটি স্মৃতিময় স্থান হলো অমর একুশে বইমেলা। এবারের মেলায় অসুস্থ থাকার কারণে তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। কিন্তু করোনার আগে, প্রতিটি মেলাতেই তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হতো। কী অপার স্নেহে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরতেন মেলার মাঠে! লেখালেখির খোঁজ নিতেন, আমার বইয়ের খোঁজ নিতেন। খালার বইগুলো আমার বুকশেলফে আজও সযত্নে রাখা আছে।
তাঁর শুভেচ্ছাবার্তা লেখা বইগুলোর প্রথম পাতা দেখলে কত স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে। ১২টির বেশি বই রয়েছে লেখক বুলবুল মহলানবীশের। তাঁর লেখা দুটো বই—‘পূর্ব বাংলার সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধের পূর্ব প্রস্তুতি ও স্মৃতি ’৭১’ বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ আকর। নতুন প্রজন্মের প্রত্যেকেরই এ বই দুটো পড়া উচিত আমাদের ইতিহাসের সত্য তথ্য জানতে।
সত্যিকার অর্থে, মুক্তিযুদ্ধে গড়ে ওঠা সম্পর্ক রক্তের সব সম্পর্ককে ছাপিয়ে যায়। একাত্তরের সেই উত্তাল দুর্বহ দিনগুলোতে আমরা একসঙ্গে জীবন কাটিয়েছি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীরা নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও মুক্তিযুদ্ধ চালিয়েছেন। সে সময়েই সম্পর্কে তিনি আমার মায়ের ছোট বোন হয়ে গিয়েছিলেন, আর আমার কাছে হয়ে উঠেছিলেন প্রিয় বুলবুল খালা। তাঁর আদর পেয়েছি অফুরান।
সুমিষ্ট বচনে সেই আদর অতুলনীয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, যে বীর প্রজন্মের লড়াইয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, সেই বাংলাদেশকে মুক্তিসংগ্রামের আদর্শে প্রোজ্জ্বল করার দায়িত্ব আমাদের। শুধু অশ্রু নদীতে ভাসলেই দায়িত্ব শেষ হবে না।
যে দায়িত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশ আমাদের কাঁধে তুলে দিয়েছেন, তা পালনের শপথ মঞ্চই যেন ছিল শহীদ মিনার। বুলবুল মহলানবীশের মতো মানুষের মৃত্যু নেই। তিনি বিরাজ করবেন আমাদের অন্তরে। অতল শ্রদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী-সংগ্রামী বুলবুল মহলানবীশের প্রতি।
লেখক: শিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী
সঙ্গীতা ইমাম

সেদিন (১৭ জুলাই) শহীদ মিনার থেকে বিদায় দিয়ে এলাম এক গানের পাখিকে, আমাদের মুক্তিসংগ্রামের এক বীর যোদ্ধাকে। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ফুলের বেদনায় বিদায় জানালাম বাংলার সেই সাহসী সন্তানকে, যিনি শৈশব উত্তীর্ণ সময়ে দেশের মুক্তির জন্য কণ্ঠের অস্ত্রে যুদ্ধ করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কনিষ্ঠ কণ্ঠযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশ প্রয়াত হয়েছেন।
সোমবার বৃষ্টিস্নাত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের লাল চত্বরে, লাল সবুজের পতাকায় ঢাকা বুলবুল মহলানবীশকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনারের মাধ্যমে শ্রদ্ধায় শেষবিদায় জানানো হয়েছে। থেমে গেল সেই কণ্ঠ, যে কণ্ঠের উদ্দীপনা মুক্তিযোদ্ধাদের আন্দোলিত করেছিল, শপথে বলীয়ান করেছিল গ্রামেগঞ্জে, শহরে-বন্দরে, ট্রেঞ্চে আর বাংকারে। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ শুনেছিল, ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’।
একাত্তরে আমার বাবা-মা সৈয়দ হাসান ইমাম ও লায়লা হাসানের সঙ্গে আড়াই বছরের আমিও যাতায়াত করতাম কলকাতার বালিগঞ্জের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। সে সময় আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশকে দেখেছি কি না, তাঁর আদর পেয়েছি কি না, আমার স্মরণে নেই। তবে মায়ের কাছে শুনেছি, সদ্য বিবাহিত বুলবুল খালার বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বামী সাব সেক্টর কমান্ডার সরিত কুমার লালা তখন সম্মুখ সমরে। আর বুলবুল খালা কলকাতার এক শহরতলি থেকে রোজ ট্রেনে-বাসে করে আসতেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অফিসে।
মহড়া, রেকর্ডিং সেরে, বাজার করে আবার ফিরে যেতেন সেখানে। অসাধারণ সুন্দরী ছিলেন। সেই বিড়ম্বনাও সইতে হতো পথেঘাটে। এত কিছুর পরেও দেশপ্রেমে কোনো ঘাটতি ছিল না। তিনি যেমন ছিলেন অপরূপ সুন্দর, তেমনি ছিলেন দুর্দান্ত সাহসী। আর প্রতিভায় ছিলেন বহুমাত্রিক। বুলবুল মহলানবীশ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কেবল যে সংগীতশিল্পী হিসেবে যুদ্ধ করেছেন, তা-ই নয়; তিনি অভিনয়শিল্পী হিসেবেও কাজ করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কল্যাণ মিত্রের জল্লাদের দরবার নাটকে তিনি মূল নারী চরিত্রে অভিনয় করতেন। এ নাটকটি তখন অনেক জনপ্রিয় ছিল। আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাসেও এ নাটকটির গুরুত্ব অপরিসীম।
আমি যখন সাংস্কৃতিক আন্দোলনে যুক্ত হয়েছি, বুলবুল মহলানবীশ তখন জ্বলজ্বলে নক্ষত্র। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হয়েও রাজপথের আন্দোলনে তাঁকে নিয়মিত পেয়েছি। ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স করার পর তিনি প্রবাসে চলে গিয়েছিলেন। ১৯৮৭ সালে ফিরে আসেন ঢাকায় এবং এসেই যুক্ত হন নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে। আমরা তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ডাকসুর সাংস্কৃতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে অশোক কর্মকারের নেতৃত্বে সারা দেশে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কাজ করছি।
তখন বুলবুল খালাকে দেখেছি আন্দোলনের নানা পর্যায়ে সক্রিয় ছিলেন। তাঁর উপস্থিতি আমাদের প্রাণিত করত। শিল্পের অগ্রযাত্রায় উদীচীর সব আয়োজনে, কখনো পরিবেশনায়, কখনো বক্তব্যে, কখনো প্রশিক্ষক হিসেবে, আবার কখনো বা বিচারক হিসেবে ডাকলে তাঁকে পাইনি—এমন ঘটনা কখনোই ঘটেনি। সারা দেশের সাংগঠনিক নানা প্রশিক্ষণেও ছিল তাঁর সাগ্রহ উপস্থিতি। এমন একজন প্রাণবন্ত সংস্কৃতিজন চলে গেলেন সবাইকে অশ্রুসিক্ত করে। সময়ের নিষ্ঠুর সত্য হলেও, এ সত্য আমরা মেনে নিতে পারি না; অন্তত বুলবুল খালাকে আমরা যারা কাছ থেকে দেখেছি, তাঁর স্নেহ-ভালোবাসা পেয়েছি।
প্রকৃতি উদ্যাপনের সর্বজনীন উৎসবগুলো অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বুঝেছিলেন আমাদের পথিকৃৎ প্রজন্ম। জাতীয় নবান্নোৎসব উদ্যাপন পর্ষদ গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম উৎসবের অন্যতম নবান্ন উদ্যাপন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এই কমিটির সহসভাপতি বুলবুল মহলানবীশ। প্রতিটি আয়োজনে অর্থ সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিজ্ঞাপন জোগাড়সহ বহু কাজে যুক্ত থাকতেন তিনি। সরবে অংশ নিতেন সভাগুলোয়। নিতেন বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত। উজ্জ্বল এ মহাপ্রাণের সঙ্গে কাজ করেছি উদীচীতে। অনুষ্ঠান আয়োজনে তাঁর আলোকিত উপস্থিতি আমাদের শিখিয়েছে অনেক কিছু। কেবল উদীচীই নয়, বুলবুল মহলানবীশ ছিলেন নজরুলসংগীত শিল্পী পরিষদের সহসভাপতি, ছিলেন রবীন্দ্র একাডেমির সাধারণ সম্পাদক। জাতীয় কবিতা পরিষদ, কচি-কাঁচার মেলা, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শিল্পী পরিষদসহ বহু সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
বুলবুল খালার সঙ্গে আমার আরেকটি স্মৃতিময় স্থান হলো অমর একুশে বইমেলা। এবারের মেলায় অসুস্থ থাকার কারণে তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। কিন্তু করোনার আগে, প্রতিটি মেলাতেই তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হতো। কী অপার স্নেহে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরতেন মেলার মাঠে! লেখালেখির খোঁজ নিতেন, আমার বইয়ের খোঁজ নিতেন। খালার বইগুলো আমার বুকশেলফে আজও সযত্নে রাখা আছে।
তাঁর শুভেচ্ছাবার্তা লেখা বইগুলোর প্রথম পাতা দেখলে কত স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে। ১২টির বেশি বই রয়েছে লেখক বুলবুল মহলানবীশের। তাঁর লেখা দুটো বই—‘পূর্ব বাংলার সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধের পূর্ব প্রস্তুতি ও স্মৃতি ’৭১’ বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ আকর। নতুন প্রজন্মের প্রত্যেকেরই এ বই দুটো পড়া উচিত আমাদের ইতিহাসের সত্য তথ্য জানতে।
সত্যিকার অর্থে, মুক্তিযুদ্ধে গড়ে ওঠা সম্পর্ক রক্তের সব সম্পর্ককে ছাপিয়ে যায়। একাত্তরের সেই উত্তাল দুর্বহ দিনগুলোতে আমরা একসঙ্গে জীবন কাটিয়েছি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীরা নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও মুক্তিযুদ্ধ চালিয়েছেন। সে সময়েই সম্পর্কে তিনি আমার মায়ের ছোট বোন হয়ে গিয়েছিলেন, আর আমার কাছে হয়ে উঠেছিলেন প্রিয় বুলবুল খালা। তাঁর আদর পেয়েছি অফুরান।
সুমিষ্ট বচনে সেই আদর অতুলনীয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, যে বীর প্রজন্মের লড়াইয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, সেই বাংলাদেশকে মুক্তিসংগ্রামের আদর্শে প্রোজ্জ্বল করার দায়িত্ব আমাদের। শুধু অশ্রু নদীতে ভাসলেই দায়িত্ব শেষ হবে না।
যে দায়িত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশ আমাদের কাঁধে তুলে দিয়েছেন, তা পালনের শপথ মঞ্চই যেন ছিল শহীদ মিনার। বুলবুল মহলানবীশের মতো মানুষের মৃত্যু নেই। তিনি বিরাজ করবেন আমাদের অন্তরে। অতল শ্রদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী-সংগ্রামী বুলবুল মহলানবীশের প্রতি।
লেখক: শিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী

সেদিন (১৭ জুলাই) শহীদ মিনার থেকে বিদায় দিয়ে এলাম এক গানের পাখিকে, আমাদের মুক্তিসংগ্রামের এক বীর যোদ্ধাকে। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ফুলের বেদনায় বিদায় জানালাম বাংলার সেই সাহসী সন্তানকে, যিনি শৈশব উত্তীর্ণ সময়ে দেশের মুক্তির জন্য কণ্ঠের অস্ত্রে যুদ্ধ করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কনিষ্ঠ কণ্ঠযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশ প্রয়াত হয়েছেন।
সোমবার বৃষ্টিস্নাত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের লাল চত্বরে, লাল সবুজের পতাকায় ঢাকা বুলবুল মহলানবীশকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনারের মাধ্যমে শ্রদ্ধায় শেষবিদায় জানানো হয়েছে। থেমে গেল সেই কণ্ঠ, যে কণ্ঠের উদ্দীপনা মুক্তিযোদ্ধাদের আন্দোলিত করেছিল, শপথে বলীয়ান করেছিল গ্রামেগঞ্জে, শহরে-বন্দরে, ট্রেঞ্চে আর বাংকারে। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ শুনেছিল, ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’।
একাত্তরে আমার বাবা-মা সৈয়দ হাসান ইমাম ও লায়লা হাসানের সঙ্গে আড়াই বছরের আমিও যাতায়াত করতাম কলকাতার বালিগঞ্জের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। সে সময় আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশকে দেখেছি কি না, তাঁর আদর পেয়েছি কি না, আমার স্মরণে নেই। তবে মায়ের কাছে শুনেছি, সদ্য বিবাহিত বুলবুল খালার বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বামী সাব সেক্টর কমান্ডার সরিত কুমার লালা তখন সম্মুখ সমরে। আর বুলবুল খালা কলকাতার এক শহরতলি থেকে রোজ ট্রেনে-বাসে করে আসতেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অফিসে।
মহড়া, রেকর্ডিং সেরে, বাজার করে আবার ফিরে যেতেন সেখানে। অসাধারণ সুন্দরী ছিলেন। সেই বিড়ম্বনাও সইতে হতো পথেঘাটে। এত কিছুর পরেও দেশপ্রেমে কোনো ঘাটতি ছিল না। তিনি যেমন ছিলেন অপরূপ সুন্দর, তেমনি ছিলেন দুর্দান্ত সাহসী। আর প্রতিভায় ছিলেন বহুমাত্রিক। বুলবুল মহলানবীশ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কেবল যে সংগীতশিল্পী হিসেবে যুদ্ধ করেছেন, তা-ই নয়; তিনি অভিনয়শিল্পী হিসেবেও কাজ করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কল্যাণ মিত্রের জল্লাদের দরবার নাটকে তিনি মূল নারী চরিত্রে অভিনয় করতেন। এ নাটকটি তখন অনেক জনপ্রিয় ছিল। আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাসেও এ নাটকটির গুরুত্ব অপরিসীম।
আমি যখন সাংস্কৃতিক আন্দোলনে যুক্ত হয়েছি, বুলবুল মহলানবীশ তখন জ্বলজ্বলে নক্ষত্র। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হয়েও রাজপথের আন্দোলনে তাঁকে নিয়মিত পেয়েছি। ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স করার পর তিনি প্রবাসে চলে গিয়েছিলেন। ১৯৮৭ সালে ফিরে আসেন ঢাকায় এবং এসেই যুক্ত হন নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে। আমরা তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ডাকসুর সাংস্কৃতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে অশোক কর্মকারের নেতৃত্বে সারা দেশে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কাজ করছি।
তখন বুলবুল খালাকে দেখেছি আন্দোলনের নানা পর্যায়ে সক্রিয় ছিলেন। তাঁর উপস্থিতি আমাদের প্রাণিত করত। শিল্পের অগ্রযাত্রায় উদীচীর সব আয়োজনে, কখনো পরিবেশনায়, কখনো বক্তব্যে, কখনো প্রশিক্ষক হিসেবে, আবার কখনো বা বিচারক হিসেবে ডাকলে তাঁকে পাইনি—এমন ঘটনা কখনোই ঘটেনি। সারা দেশের সাংগঠনিক নানা প্রশিক্ষণেও ছিল তাঁর সাগ্রহ উপস্থিতি। এমন একজন প্রাণবন্ত সংস্কৃতিজন চলে গেলেন সবাইকে অশ্রুসিক্ত করে। সময়ের নিষ্ঠুর সত্য হলেও, এ সত্য আমরা মেনে নিতে পারি না; অন্তত বুলবুল খালাকে আমরা যারা কাছ থেকে দেখেছি, তাঁর স্নেহ-ভালোবাসা পেয়েছি।
প্রকৃতি উদ্যাপনের সর্বজনীন উৎসবগুলো অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বুঝেছিলেন আমাদের পথিকৃৎ প্রজন্ম। জাতীয় নবান্নোৎসব উদ্যাপন পর্ষদ গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম উৎসবের অন্যতম নবান্ন উদ্যাপন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এই কমিটির সহসভাপতি বুলবুল মহলানবীশ। প্রতিটি আয়োজনে অর্থ সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিজ্ঞাপন জোগাড়সহ বহু কাজে যুক্ত থাকতেন তিনি। সরবে অংশ নিতেন সভাগুলোয়। নিতেন বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত। উজ্জ্বল এ মহাপ্রাণের সঙ্গে কাজ করেছি উদীচীতে। অনুষ্ঠান আয়োজনে তাঁর আলোকিত উপস্থিতি আমাদের শিখিয়েছে অনেক কিছু। কেবল উদীচীই নয়, বুলবুল মহলানবীশ ছিলেন নজরুলসংগীত শিল্পী পরিষদের সহসভাপতি, ছিলেন রবীন্দ্র একাডেমির সাধারণ সম্পাদক। জাতীয় কবিতা পরিষদ, কচি-কাঁচার মেলা, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শিল্পী পরিষদসহ বহু সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
বুলবুল খালার সঙ্গে আমার আরেকটি স্মৃতিময় স্থান হলো অমর একুশে বইমেলা। এবারের মেলায় অসুস্থ থাকার কারণে তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। কিন্তু করোনার আগে, প্রতিটি মেলাতেই তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হতো। কী অপার স্নেহে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরতেন মেলার মাঠে! লেখালেখির খোঁজ নিতেন, আমার বইয়ের খোঁজ নিতেন। খালার বইগুলো আমার বুকশেলফে আজও সযত্নে রাখা আছে।
তাঁর শুভেচ্ছাবার্তা লেখা বইগুলোর প্রথম পাতা দেখলে কত স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে। ১২টির বেশি বই রয়েছে লেখক বুলবুল মহলানবীশের। তাঁর লেখা দুটো বই—‘পূর্ব বাংলার সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধের পূর্ব প্রস্তুতি ও স্মৃতি ’৭১’ বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ আকর। নতুন প্রজন্মের প্রত্যেকেরই এ বই দুটো পড়া উচিত আমাদের ইতিহাসের সত্য তথ্য জানতে।
সত্যিকার অর্থে, মুক্তিযুদ্ধে গড়ে ওঠা সম্পর্ক রক্তের সব সম্পর্ককে ছাপিয়ে যায়। একাত্তরের সেই উত্তাল দুর্বহ দিনগুলোতে আমরা একসঙ্গে জীবন কাটিয়েছি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীরা নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও মুক্তিযুদ্ধ চালিয়েছেন। সে সময়েই সম্পর্কে তিনি আমার মায়ের ছোট বোন হয়ে গিয়েছিলেন, আর আমার কাছে হয়ে উঠেছিলেন প্রিয় বুলবুল খালা। তাঁর আদর পেয়েছি অফুরান।
সুমিষ্ট বচনে সেই আদর অতুলনীয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, যে বীর প্রজন্মের লড়াইয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, সেই বাংলাদেশকে মুক্তিসংগ্রামের আদর্শে প্রোজ্জ্বল করার দায়িত্ব আমাদের। শুধু অশ্রু নদীতে ভাসলেই দায়িত্ব শেষ হবে না।
যে দায়িত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশ আমাদের কাঁধে তুলে দিয়েছেন, তা পালনের শপথ মঞ্চই যেন ছিল শহীদ মিনার। বুলবুল মহলানবীশের মতো মানুষের মৃত্যু নেই। তিনি বিরাজ করবেন আমাদের অন্তরে। অতল শ্রদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী-সংগ্রামী বুলবুল মহলানবীশের প্রতি।
লেখক: শিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

সেদিন (১৭ জুলাই) শহীদ মিনার থেকে বিদায় দিয়ে এলাম এক গানের পাখিকে, আমাদের মুক্তিসংগ্রামের এক বীর যোদ্ধাকে। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ফুলের বেদনায় বিদায় জানালাম বাংলার সেই সাহসী সন্তানকে, যিনি শৈশব উত্তীর্ণ সময়ে দেশের মুক্তির জন্য কণ্ঠের অস্ত্রে যুদ্ধ করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কনিষ্ঠ কণ্ঠযোদ্ধা
২০ জুলাই ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

সেদিন (১৭ জুলাই) শহীদ মিনার থেকে বিদায় দিয়ে এলাম এক গানের পাখিকে, আমাদের মুক্তিসংগ্রামের এক বীর যোদ্ধাকে। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ফুলের বেদনায় বিদায় জানালাম বাংলার সেই সাহসী সন্তানকে, যিনি শৈশব উত্তীর্ণ সময়ে দেশের মুক্তির জন্য কণ্ঠের অস্ত্রে যুদ্ধ করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কনিষ্ঠ কণ্ঠযোদ্ধা
২০ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

সেদিন (১৭ জুলাই) শহীদ মিনার থেকে বিদায় দিয়ে এলাম এক গানের পাখিকে, আমাদের মুক্তিসংগ্রামের এক বীর যোদ্ধাকে। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ফুলের বেদনায় বিদায় জানালাম বাংলার সেই সাহসী সন্তানকে, যিনি শৈশব উত্তীর্ণ সময়ে দেশের মুক্তির জন্য কণ্ঠের অস্ত্রে যুদ্ধ করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কনিষ্ঠ কণ্ঠযোদ্ধা
২০ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

সেদিন (১৭ জুলাই) শহীদ মিনার থেকে বিদায় দিয়ে এলাম এক গানের পাখিকে, আমাদের মুক্তিসংগ্রামের এক বীর যোদ্ধাকে। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ফুলের বেদনায় বিদায় জানালাম বাংলার সেই সাহসী সন্তানকে, যিনি শৈশব উত্তীর্ণ সময়ে দেশের মুক্তির জন্য কণ্ঠের অস্ত্রে যুদ্ধ করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কনিষ্ঠ কণ্ঠযোদ্ধা
২০ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫