Ajker Patrika

সমাজসেবা কার্যালয় বন্ধ ৩৫ বছর ধরে

চাটখিল (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১২: ৩২
Thumbnail image

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার পরকোট ইউনিয়নের দশঘরিয়া বাজারে সমাজসেবা কার্যালয়টি ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর ছয় মাস কার্যক্রম চলে। বন্ধের পর কেটে গেছে প্রায় ৩৫টি বছর। কেন্দ্রটি নতুন করে চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এখন সেখানে নিয়মিত বসে ইয়াবা, গাঁজা ও হেরোইনসহ মাদকের আসর। এদিকে অফিসটি পুনরায় চালু না করলে দান করা জমি ফেরত চান উত্তরসূরিরা।

গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, কেন্দ্রটির ভেতরে তিন-পাঁচজন মাদক সেবন করছেন। তাঁদের ছবি ক্যামেরাবন্দী করার উদ্যোগ নেওয়া হলে দৌড়ে পালিয়ে যান। দরজা-জানালা ইতিমধ্যে মাদকসেবীরা খুলে নিয়ে গেছেন। ভেতরের একপাশে চলে মাদক সেবন, অপর পাশে মলমূত্রের স্তূপ। সোহাগ নামের স্থানীয় এক ইট ব্যবসায়ী কেন্দ্রটির প্রবেশের রাস্তার সামনে ইটের স্তূপ রেখেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দশঘরিয়া এলাকার মরহুম নূর মোহাম্মদ ভূঁইয়া ৫ টাকার বিনিময়ে এ সম্পত্তি পরকোট সমাজসেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য চাটখিল উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরকে দান করেন ১৯৮৬ সালে। সমাজসেবা অধিদপ্তর এখানে সেমি পাকা একটি বিল্ডিং তৈরি করে। আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর ছয় মাস কার্যক্রম পরিচালনা করে। এরপর বন্ধ হওয়ার পর কেটে গেছে ৩৫ বছর। কেন্দ্রটি পুনরায় চালু করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

দশঘরিয়া এলাকার আমিনুল ইসলাম সোহাগ বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিত্যক্ত এ ভবন এখন সম্পূর্ণরূপে ইয়াবা, হেরোইন ও গাঁজাসেবীদের দখলে।

এদিকে এলাকার গরিব অসহায় মানুষের কল্যাণে সমাজসেবা অধিদপ্তরকে দান করা সম্পত্তি ব্যবহার না করলে নুর মোহাম্মদ ভুইয়াসহ উত্তরসূরিরা তাঁদের সম্পত্তি ফেরত দেওয়ার দাবি করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নুর মোহাম্মদ ভুইয়ার একজন উত্তরসূরি বলেন, ‘আমরা এলাকার অসহায় মানুষের কল্যাণের জন্য সম্পত্তি দান করেছিলাম। এখন যেহেতু সমাজসেবা অধিদপ্তর ব্যবহার করছে না। আমাদের সম্পত্তি আমাদের ফেরত দেওয়া হোক। যুগের পরিবর্তনে সম্পত্তির দাম এখন কয়েক গুণ বেড়েছে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পরকোট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বাহার আলম মুন্সি বলেন, ‘এখানে মাদক সেবন করার অপরাধে ইতিপূর্বে আমরা অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। সেখানে অভিযান পরিচালনা করে বেশ কয়েকবার বহু মাদকসেবীকে থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছি। আমি সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে জোর দাবি জানাই, দ্রুত তাদের এ সম্পত্তি ও ভবন রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য।’

জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কয়েক দিন আগে পরকোট সমাজসেবা কেন্দ্রটি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। ভেতরে প্রবেশের রাস্তায় ইটের স্তূপ থাকায় ভেতরে যেতে পারিনি। এই ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা অফিসকে নির্দেশনা দিয়েছি। সেখানে আমাদের কতটুকু সম্পত্তি আছে, কী অবস্থায় আছে, সে প্রতিবেদন পেলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখব। দ্রুত সময়ে আপনারা দেখতে পাবেন, সমাজসেবা অধিদপ্তর পরকোট সমাজসেবা কেন্দ্রটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত