Ajker Patrika

সেবা না পেয়ে হাসপাতাল ত্যাগ ৬২ জন রোগীর

যশোর প্রতিনিধি
সেবা না পেয়ে হাসপাতাল  ত্যাগ ৬২ জন রোগীর

যশোর জেনারেল হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ৩০ চিকিৎসক একযোগে ছুটিতে যাওয়ায় চিকিৎসাসেবায় ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ছুটির তিন দিনে সেবা না পেয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৬২ জন রোগী। এ সময়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে মৃত্যুবরণ করেছেন ১১ জন।

জানা গেছে, গত সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে যোগ দিতে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ চিকিৎসকেরা কক্সবাজারে গিয়েছিলেন। এ সময় হাসপাতালটিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগীদের। চিকিৎসাসেবা না পেয়ে অনেক রোগী ক্লিনিকে ভর্তি হন। অনেক রোগীকে অন্যত্র রেফারও করা হয়।

তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, একযোগে তাঁরা কোথাও ভ্রমণে যাননি, বরং সম্মেলনে গিয়েছিলেন। এ কারণে রোগীদের কোনো ভোগান্তি হয়নি আর হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

জানা গেছে, এক মাস আগে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আক্তারুজ্জামানকে প্রধান উপদেষ্টা ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. হিমাদ্রি শেখরকে সভাপতি করে চিকিৎসক সার্জনস ওয়েলফেয়ার নামের একটি সংগঠন করা হয়।

সদ্য গঠিত এই সংগঠনের ব্যানারে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে যান। গত রোববার তত্ত্বাবধায়ক মো. আক্তারুজ্জামান ইএনটি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট মো. রাশেদ আলী মোড়লকে দায়িত্ব দিয়ে ৩০ জন চিকিৎসককে নিয়ে সেখানে যান। তিন দিন ধরে হাসপাতালে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় বিপাকে পড়েন হাজারো রোগী।

হাসপাতালের সূত্রমতে, তিন দিন চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা না পেয়ে ৬২ জন ভর্তি রোগী হাসপাতাল ছেড়েছেন। এ সময়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ১১ জন রোগী মারা গেছেন। 
শহরের জামরুলতলা এলাকার ইয়াসমিন খাতুন চিকিৎসা না পেয়ে শহরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি হন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘পেটে ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। পরে শুনি হাসপাতালে বড় কোনো চিকিৎসক নেই। তাই স্বামী পাশের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করেছেন।’

একই অভিযোগ মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হওয়া বাঘারপাড়ার সালমা খাতুন ও তহমিনা খাতুনের। তাঁরা দুজনই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পেলে এই হাসপাতাল করে কী লাভ! একসঙ্গে হাসপাতাল রেখে বড় সব ডাক্তার ভ্রমণে গেছেন। বাঁচার জন্য আমরা অন্য ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছি।’

এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোট যশোরের নেতারা। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দেওয়া স্মারকলিপিতে জনভোগান্তি ও দায়িত্বহীনতার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘চিকিৎসক সার্জনস ওয়েলফেয়ারের বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে যোগ দিতে আমরা কক্সবাজার গিয়েছিলাম।

হাসপাতালে ১১৭ জন চিকিৎসক। আমরা তো সব চিকিৎসক যাইনি। সব চিকিৎসক ফিরে এসে গতকাল থেকে হাসপাতালে ডিউটি করেছেন। এ কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবায় নেতিবাচক কোনো প্রভাব পড়েনি।’

খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত