Ajker Patrika

জামিনে বের করার চেষ্টা না করায় স্ত্রীকে হত্যা

কুমিল্লা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২২, ১১: ৩৩
জামিনে বের করার চেষ্টা না করায় স্ত্রীকে হত্যা

চুরির মামলায় গ্রেপ্তার স্বামীকে জেল থেকে জামিনে বের করার চেষ্টা না করে বাপের বাড়িতে চলে যান স্ত্রী। পরে জামিনে বের হয়ে ক্ষোভে স্ত্রীকে হত্যা করেন স্বামী। স্বামী মো. ইকবালকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‍্যাব) তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন। ইকবালের ভাষ্যমতে, ঈদের কেনাকাটার কথা বলে স্ত্রীকে নিয়ে গিয়ে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন তিনি।

ইকবাল জেলার আদর্শ সদর উপজেলার অলিপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি এই হত্যা মামলায় প্রধান আসামি। নিহত গৃহবধূর নাম ফারজানা আক্তার (২৯)।

গতকাল মঙ্গলবার র‍্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে মেজর মোহাম্মাদ সাকিব হোসেন এসব তথ্য জানান।

র‍্যাব জানায়, আদর্শ সদর উপজেলার কালিরবাজার ইউনিয়নের অলিপুর এলাকায় গৃহবধূ ফারজানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্বামী মো. ইকবালকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গত রোববার আদর্শ সদর উপজেলার কালিরবাজার ইউনিয়নের মস্তফাপুর (কাছার) এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ফারজানার হাত-মুখ বাঁধা রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

ফারজানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তার করতে র‍্যাবের গোয়েন্দা দল মাঠে নামে। গত সোমবার দিবাগত রাতে র‍্যাবের অভিযানে স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া একই দিন মামলার ২, ৩ ও ৬ নম্বর আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে র‍্যাব।

মেজর সাকিব জানান, ইকবাল পেশায় অটোরিকশাচালক। বিভিন্ন গাড়ির ব্যাটারি ও গাড়ি চুরিসহ বিভিন্ন ধরনের চুরির অভিযোগে তাঁর নামে একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি তাঁর স্ত্রী ফারজানাকে নিয়ে কুমিল্লা শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

২০১০ সালের একটি চুরির ঘটনায় দুই মাস আগে পরোয়ানা জারি হাওয়ায় জামিনে বের হওয়ার জন্য পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ৫ হাজার টাকা স্ত্রী ফারজানাকে দেন তিনি। পরে ইকবালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। স্বামী জেলে থাকায় ভাড়া বাসায় শিশুসন্তানকে নিয়ে কষ্টে থাকায় স্ত্রী ইকবালের রেখে যাওয়া টাকা দিয়ে ট্রাক ভাড়া করে সব মালামাল নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান। পরে জেলখানায় গিয়ে ফারজানা তাঁর স্বামী ইকবালকে ভাড়া বাসা ছেড়ে তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যাওয়ার ঘটনাটি বলতেই ইকবাল স্ত্রীর ওপর চড়াও হন। পরে ফারজানা তাঁকে ১ হাজার টাকা দিয়ে দ্রুত ছাড়ানোর ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়ে চলে আসেন।

স্ত্রী জামিনে বের করার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় স্বামীর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে ইকবাল জামিনে বের হয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ফারজানার সঙ্গে কথা-কাটাকাটি করেন।

এরপর ফারজানাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ইকবাল। ঘটনার দিন ইকবাল নিজ বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে তাঁর শিশুসন্তানকে ঈদের কেনাকাটা করে দেবেন বলে স্ত্রীকে নিয়ে বের হন। পরে ইকবাল ফারজানাকে নিজ বাড়িতে আনার সময় নির্জন স্থানে পরিকল্পনা অনুযায়ী ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। পরে ফারজানার ব্যবহৃত ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে এবং কাছে থাকা গামছা দিয়ে হাত বেঁধে ফেলেন। এরপর একই ইট দিয়ে মাথায় একাধিকবার আঘাত করে স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়ে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত