Ajker Patrika

সবজির বাজারে আগুন

মেহেরপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২১, ১২: ৩৯
সবজির বাজারে আগুন

মেহেরপুরের সবজির যায় সারা দেশে। অথচ সেখানকার স্থানীয় বাজারে সবজির দাম চড়া। এতে কৃষক উপকৃত হলেও সবজি বাজারে গিয়ে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের নাকাল অবস্থা। ক্রেতাদের অভিযোগ, মেহেরপুরে সবজির দাম রাজধানীর সমান। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা সবজি কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে দাম বেশি হলেও সারা দিন সবজি বিক্রি করে তাঁদের লাভ হয় কম।

মেহেরপুর শহরের কয়েকটি কাঁচা বাজার, সবজি মার্কেট ও হাট ঘুরে জানা গেছে, বাজারে প্রচুর সবজির আমদানি রয়েছে। নিয়মিত আসছে আগাম লাগানো শীতকালীন শাকসবজি। তবুও সবজির দাম চড়া। তবে আলু, পেঁপে ও কচুর দাম আগের মতোই আছে। বাজারে কাঁচা মরিচ ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহ ছিল যা ১০০ টাকার নিচে। পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকা কেজি ছিল পেঁয়াজ। লালশাক, পুঁইশাক, সবুজ ডাঁটাশাক পাইকারি ২০-২৫ টাকা, করলা ২৫-৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৪৫-৫০ টাকা, বেগুন ৪০-৪৫ টাকা, ৮০-৮৫ টাকা, ফুলকপি ৭০-৭৫ টাকা, রসুন ৪০-৪৫ টাকা, পালংশাক ৫৫-৬০ টাকা, আদা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বড় বাজার সবজি ব্যবসায়ী জুলহাস হোসেন জানান, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজির দাম হঠাৎ করে ফড়িয়া আড়তদাররা বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাই বাজারে সবজি বিক্রি কমে গেছে।

সাহারবাটি গ্রামের বড় সবজি চাষি আলফাজ হোসেন জানান, এবার ১০ বিঘা জমিতে কাঁচা মরিচ চাষ করেছেন। ব্যবসায়ীরা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে জমি থেকে তা পাইকারি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এবার কাঁচা মরিচ উৎপাদন করে লাভ হয়েছে। কিন্তু বাজারে এর দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় কৃষকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়া আড়তদারেরা।

মেহেরপুর বড় বাজারের আড়তদার হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মাঠ থেকে কাঁচা মরিচ কিনে বাজারে আনতে শ্রমিক ও পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে। তাই মাঠের ঝাল বাজারে এসে আরও ঝাঁজালো হচ্ছে। সবজির চাহিদা থাকায় এবার কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়ই লাভবান হচ্ছেন।’

মেহেরপুর তহবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবু হানিফ জানান, বর্ষার কারণে এবার অনেক ফসল পরে হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে ফসল নষ্ট হয়েছে। এই কারণে মেহেরপুরের সবজির ওপর বাইরের চাপ বেড়েছে। বর্তমান বাজারে বাইরের ক্রেতাদের সংখ্যাও অনেক বেশি। তারা সরাসরি মাঠ থেকে সবজি কিনে ট্রাকে করে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন ৩৫-৪৫ ট্রাক সবজি সারা দেশে বিক্রির উদ্দেশ্যে চলে যায়।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক স্বপন কুমার খাঁ জানান, কৃষি বিভাগের কাজ হচ্ছে কৃষকের উৎপাদন বৃদ্ধি করা। উৎপাদনে আমরা সফল হয়েছি। চাষিরা উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে বর্ষায় প্লাবিত হয়ে সবজি খেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মেহেরপুরের সবজির দাম ঢাকার সমান হয়ে গেছে। এবার সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে সবজির চাষ হয়েছে এবং ফলনও খুব ভালো হয়েছে। তবে বাজার ব্যবস্থাপনার সুষ্ঠু বণ্টন করতে পারলে সবজিসহ সব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

শহরের ক্রেতা লোকমান আলী জানান, ৫ জনের সংসার। আগে বেতন কম থাকলেও সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। এখন বেতন বেড়েছে। সঙ্গে কয়েকগুণ বেড়েছে ব্যয়। ফলে মাছ-মাংস কেনা অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছি। এখন সবজি কিনতে গিয়েও হিমশিম খাচ্ছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত