Ajker Patrika

হবিগঞ্জে অন্ধকারে ৩ লাখ গ্রাহক

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
Thumbnail image

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে বিভিন্ন স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ও সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গত সোমবার রাত থেকে হবিগঞ্জের বেশির ভাগ এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। জেলার প্রায় ৩ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিলেন বলে জানিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

সিত্রাংয়ের প্রভাবে গত রোববার সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও বিকেল থেকে তা বাড়তে থাকে। সোমবার দুপুর থেকে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে শুরু হওয়া বাতাসে গাছপালা উপড়ে ও ডালপালা ভেঙে পড়তে থাকে। মূলত এরপর থেকেই বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পুরো জেলা। বিদ্যুৎ না থাকায় অধিকাংশ এলাকায় বন্ধ থাকে ইন্টারনেট।

বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দুদিন অস্বস্তিতে কাটে হবিগঞ্জবাসীর। শায়েস্তাগঞ্জের বাসিন্দা জাহির মিয়া বলেন, রোববার রাতে বিদ্যুৎ গেছে। এখনো আসেনি।

ঝড় শেষ হলে বিদ্যুতের খুঁটি ও সঞ্চালন লাইন দ্রুত সংস্কার করে বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানান তিনি।

জানতে চাইলে হবিগঞ্জ জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. মোতাহার হোসেন বলেন, ঝোড়ো বাতাসে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি ও সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারেননি তাঁরা। তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি ক্ষতিগ্রস্ত লাইন সংস্কারের। ইতিমধ্যে অনেক স্থানে লাইন সংস্কার করা হয়েছে। পরিস্থিতি ভালো হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাকি ক্ষতিগ্রস্ত লাইন সংস্কারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হবে।

এদিকে মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, মৌলভীবাজারে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দুদিন ধরেই ছিল বৃষ্টি। টানা বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ায় জেলার সবজিখেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিভিন্ন উপজেলার প্রান্তিক সবজিচাষিদের সঙ্গে আলাপ করে এ তথ্য জানা গেছে। জেলার সাত উপজেলায় সবজিখেতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সবজি চাষে কৃষকদের ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। অতি বৃষ্টির ফলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধাগ্রস্ত হবে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের সবজিচাষি মণি কুমার সিংহ ও সুশীল সিংহ বলেন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, করলাসহ সব ধরনের শাক পচে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এখন নতুন করে চারা লাগাতে খরচ বাড়বে এবং তুলনামূলক দাম কমে যাবে।

সদর উপজেলার গিয়াসনগর ইউনিয়নের কৃষক আরিফ মিয়া। তিনি এই প্রথম বড় পরিসরে পাঁচ বিঘা জমিতে টমেটোর চাষ শুরু করেন।

আরিফ মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, দুদিনের লাগাতার বৃষ্টির ফলে জমির ৮০ ভাগ টমেটোর চারা নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি ২০ ভাগ রুগ্‌ণ হয়ে গেছে। এতে প্রায় তিন লাখ টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে।

আরেক কৃষক আমির মিয়া বলেন, ‘আমি তিন বিঘা জমিতে লাউ, টমেটো, বেগুন, ঢ্যাঁড়সসহ বিভিন্ন জাতের সবজির চাষ করেছিলাম; কিন্তু দুই দফা বৃষ্টিতে প্রায় ৭০ ভাগ সবজির চারা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আমার প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সামসুদ্দিন বলেন, দফায় দফায় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় সবজিখেতের অনেক ক্ষতি হয়েছে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণের কাজ চলমান। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত