Ajker Patrika

বহিষ্কৃত ৯ জন পরীক্ষার্থীর অভিভাবকেরা দুশ্চিন্তায়

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
বহিষ্কৃত ৯ জন পরীক্ষার্থীর অভিভাবকেরা দুশ্চিন্তায়

এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে পটুয়াখালীর গলাচিপার খারিজ্জমা ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরুর ৫-৬ মিনিটের মধ্যে ৯ পরীক্ষার্থী বহিষ্কৃত হয়। ওই পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। সন্তান এ ধাক্কা কাটিয়ে উঠবে কীভাবে, এ নিয়ে চিন্তিত অনেকে।

এদিকে ৯ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের ঘটনায় গত শনিবার সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব, মো. রোকনুজ্জামান ও নাইম সরদার জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার মো. ইসমাইল রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। এর অনুলিপি শিক্ষাসচিব, জনপ্রশাসন সচিব, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক, সহকারী কমিশনার মো. ইসমাইল রহমান ও খারিজ্জমা ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রসচিব নুসরাত জাহান মনিকে ই-মেইলে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় খারিজ্জমা ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে বিভিন্ন অভিযোগে একের পর এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা শুরু করেন মো. ইসমাইল রহমান। ৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭ জনের খাতায় রোল এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছাড়া কিছুই লেখা হয়নি বলে জানান কেন্দ্রসচিব নুসরাত জাহান।

বহিষ্কৃত পরীক্ষার্থী লিয়া আক্তার বলে, ‘ম্যাজিস্ট্রেট স্যারকে এত অনুরোধ করলাম আমাদের পরীক্ষা দিতে দেওয়ার জন্য; কিন্তু আমাদের কথা তিনি শুনলেন না। কত কষ্ট করে মা-বাবা পড়াশোনা করায়। একটি বছর আমার জীবন থেকে শেষ হয়ে গেল।’

লিয়ার বাবা হাওলাদার বলেন, ‘বিনা কারণে বহিষ্কার হওয়ার পর থেকে ও বারবার বলতেছে সুইসাইড করব। সেদিনের পর থেকে ওকে পাহারা দিয়ে রাখতে হচ্ছে।’

অন্য বহিষ্কৃত পরীক্ষার্থী সুমাইয়ার বাবা শাহাবুদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘বিনা কারণে পরীক্ষার প্রথম দিনের বহিষ্কারের পর থেকে আমার মেয়ের গায়ে জ্বর। কোনো কথা বলে না।’

এ বিষয়ে পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জাফর আহমেদ বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। ৫ মিনিটের মধ্যে শিক্ষার্থীরা এমন কী ভুল করেছে, যার জন্য এক বছর তাদের বহিষ্কার করতে হবে। যদি শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন বদল করে থাকে, তা হলে তখন হল পরিদর্শক কী করেছেন?

খারিজ্জমা ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুসরাত জাহান মনি বলেন, ‘আমি স্যারকে (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) অনুরোধ করেছিলাম যাতে বহিষ্কার না করেন; কিন্তু তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বহিষ্কারাদেশ লিখেছেন।’

সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইসমাইল রহমান বলেন, বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা নিজেরা দেখাদেখি ও প্রশ্ন এক্সচেঞ্জ করেছিল, এ জন্য তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এখন বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত