Ajker Patrika

নানা সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭: ৩৭
নানা সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

অ্যাম্বুলেন্স আছে কিন্তু চালক নেই, ল্যাব আছে টেকনিশিয়ান নেই, প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনার রোগী আছে কিন্তু তাদের চিকিৎসার জন্য অপারেশন থিয়েটার এবং ট্রমা সেন্টার নেই, নেই অর্থোপেডিক সার্জনও। এভাবে বহু নেই নিয়ে চলছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ড পৌরসভার মৌলভীপাড়ায় উপজেলার একমাত্র সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন এ উপজেলার হাজারো মানুষ। হাসপাতালটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে হওয়ায় এখানে প্রতিদিন সংঘটিত দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত রোগীদের জরুরি চিকিৎসার জন্য আনা হয়। কিন্তু জরুরি চিকিৎসা, অপারেশনসহ বিভিন্ন সেবা দেওয়ার মতো এখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব। ল্যাব টেকনিশিয়ান ও অ্যাম্বুলেন্সচালক না থাকাসহ প্রয়োজনীয় বহু যন্ত্রপাতির অভাবে এখানে সাধারণ রোগী ছাড়া জরুরি কোনো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে রোগী নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন তাদের স্বজনেরা। সরেজমিনে এই হাসপাতাল পরিদর্শনকালে বেশ কিছু রোগীর স্বজনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

তাঁরা জানান, সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানান রোগের চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন রোগীরা। কিন্তু একটু গুরুতর হলেই তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। হাসপাতালের একজন মাত্র অর্থোপেডিক সার্জন ডা. ইমরোজ উদ্দিন বর্তমানে ডেপুটেশনে আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত আছেন।

সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন সীতাকুণ্ডের পন্থিছিলার বাসিন্দা সংগীত শিল্পী রাজীব। তিনি জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর চোট পান তিনি। এলাকাবাসী তাঁকে দ্রুত সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে চমেকে স্থানান্তর করেন। তাতে রক্তক্ষরণে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে শেষ পর্যন্ত সেখানে উন্নত চিকিৎসা পেয়ে এখন তিনি সুস্থ হওয়ার পথে।

গাছ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হওয়া কিশোর পুত্রকে নিয়ে সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন মুরাদপুর ইউনিয়নের গোপ্তাখালীর বাসিন্দা জসীম উদ্দিন। তিনি জানান, হাসপাতালে এসে দেখেন এক্স-রে মেশিন নষ্ট। শেষে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে শিশুকে চমেকে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সটি অচল থাকায় তিনি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে তার সন্তানকে চমেকে নিয়ে যান।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নুর উদ্দিন বলেন, ‘জনবল ও যন্ত্রপাতির অভাবে অনেক রোগীকে সেবা দেওয়া যায় না এ কথা সত্যি। কিন্তু এরপরও যন্ত্রপাতিগুলো ছাড়া যেসব চিকিৎসা সম্ভব সবই আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে দিয়ে থাকি।’

ডা. মো. নুর উদ্দিন বলেন, শিগগিরই বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আসার কথা রয়েছে। তবে ট্রমা সেন্টারটি এখানে খুব জরুরি এ কথা মানতেই হবে। এখানে দুর্ঘটনা নিয়মিত ঘটনা। তাই একজন সার্জারি বিশেষজ্ঞ ও ট্রমা সেন্টার থাকলে এ ধরনের রোগীদের সেবা দেওয়া সম্ভব হতো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত