জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা

টাকার অভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। সব ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রসাধনের চেষ্টা চলছে। রাজস্ব ঘাটতির কারণে নতুন টাকা ছাপিয়ে আর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তহবিল সংকটে সরকার যখন হিসেবি, তখনই রাজস্ব বা শুল্কছাড়ের বেহিসেবি তথ্য সামনে এল।
অর্থসংকট কাটাতে যখন বড় রাজস্ব আয় করার কথা, সেখানে উল্টো ১১ মাসেই অবাধ ছাড় দিয়ে ৫৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি করা হয়েছে। এ সুযোগ নিয়েছে ভোজ্যতেল আমদানিকারক, মোবাইল ফোনসেট উৎপাদক ও পোলট্রিশিল্প এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক প্রতিবেদন থেকে বিপুল পরিমাণ শুল্কছাড়ের তথ্য জানা গেছে।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, বিদায়ী অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত ভোজ্যতেলের আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট ছাড় দেওয়া হয়। এতে রাজস্ব ক্ষতি হয় ৩ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরে ছাড়ের পরিমাণ ছিল ৬১৮ কোটি টাকা। শুল্কছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তি ছিল, এতে ভোক্তারা কম দামে ভোজ্যতেল কিনতে পারবেন। অথচ ভোজ্যতেলের দাম দফায় দফায় বেড়েছে। একইভাবে দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন খাতে ২ হাজার ১৫৩ কোটি টাকার শুল্কছাড় দেওয়া হয়।
তখন বলা হয়েছিল, এর ফলে অপেক্ষাকৃত কম দামে মানুষ মোবাইল ফোনসেট কিনতে পারবে। অথচ বাজারে মোবাইল ফোনসেটের দাম খুব একটা কমেনি। পোলট্রিশিল্পে ছাড় দেওয়া হয় ৮৯৩ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে ছিল ৬৭২ কোটি টাকা। বাস্তবে পোলট্রি পণ্য, বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে।
এর বাইরে টেক্সটাইল খাত ছাড় পেয়েছে ৮৬৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) ১ হাজার ১২ কোটি টাকা এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি ৭২৫ কোটি টাকা শুল্কছাড় নিয়েছে। এনবিআরের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৫ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা, অগ্রিম আয়করসহ অন্যান্য খাতে ৮১৬ কোটি টাকার শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে। বিশেষ অব্যাহতির মাধ্যমে ছাড় দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ১৯৮ টাকার শুল্ক। মূলধনি যন্ত্রপাতি কিনতে ছাড় দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ৯০১ কোটি টাকা, ত্রাণসামগ্রী খাতে ছাড় দেওয়া হয়েছে ২৮৩ কোটি টাকা, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামালের ছাড় ৩ হাজার ৪১১ কোটি টাকা, শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, সিংহভাগ সুবিধাই গেছে ব্যবসায়ীদের পকেটে। তাঁরা বলছেন, ঠিকমতো রাজস্ব আয় না হওয়ার পরিস্থিতিতেও বিভিন্ন খাতে শুল্কছাড় দেওয়ার কারণেই সরকারকে বিপুল অঙ্কের টাকা ধার করতে হয়েছে। এমনকি নতুন অর্থবছরের শুরুতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে ধার করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে, মাত্র ২০ দিনেই সরকার ১৩ হাজার কোটি টাকা ধার করেছে। বিদায়ী অর্থবছরে সরকারের ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৮৩০ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরে তা ছিল ২ লাখ ৭৭ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা।
শুল্কছাড় প্রসঙ্গে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) শর্ত হলো উল্লেখযোগ্যভাবে কর অব্যাহতি কমানো। আমরা তো উল্টো দিকে যাচ্ছি। সরকার যদি উল্টো দিকে যায় তাহলে তো মুশকিল। টাকার অঙ্কে ঘাটতি বাড়ায় সরকারের ঋণ বাড়ছে। দেশি-বিদেশি ঋণ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এই ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতা আমাদের ব্যাংকিং খাতের নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ ঋণই নিক না কেন, সেটা উদ্বেগের কারণ। আর এ সবই হচ্ছে মূলত রাজস্ব ঘাটতির কারণে। এতে ব্যয়সংকোচন করা হচ্ছে, ঋণ বাড়ছে, সুদ বাড়ছে এবং আমরা প্রয়োজনীয় ব্যয় করতে পারছি না।’
এনবিআরের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা অনুযায়ী, স্বল্প করহার, কর অব্যাহতি ও কর অবকাশ সুবিধার কারণে কর-জিডিপি অনুপাত ২ দশমিক ২৮ শতাংশ কম হচ্ছে। এসব সুবিধা তুলে দিলে কর-জিডিপি অনুপাত ১০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে দাঁড়াবে। অথচ সেদিকে নজর সীমিত বলে মনে করছেন রাজস্ব খাতের বিশেষজ্ঞরা।
ব্যবসায়ীরা অবশ্য শুল্কছাড়ের পক্ষে। এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভোজ্যতেলে ভ্যাট সুবিধা না দিলে ১৮০ টাকার পরিবর্তে ভোক্তারা ২১০ টাকায় খেত। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে সরকার ছাড় দিয়েছে এবং এতে অবশ্যই ভোক্তারা উপকৃত হয়েছে। তা না হলে ভোক্তাদের আরও কষ্ট হতো।’ এই সুবিধা প্রকৃতপক্ষে কারা বেশি পেল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ভোক্তারা বেশি পেয়েছে। ব্যবসায়ীর কি লাভ? ব্যবসায়ীরা তো ভোক্তাদের কাছ থেকেই ভ্যাট আদায় করে সরকারকে দিতেন। ব্যবসায়ীর কী আছে এখানে?’
কোভিডজনিত অর্থনৈতিক সংকট আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে চাপে পড়ে বিশ্ব অর্থনীতি। এর ধাক্কা লাগে বাংলাদেশেও। সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে ডলার সাশ্রয়সহ কৃচ্ছ্রসাধনের নানামুখী পদক্ষেপ নেয়। পাশাপাশি বড় রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ঠিক করে। এর সঙ্গে যোগ হয় আইএমএফের কঠিন সব শর্ত। এর অন্যতম ছিল করছাড় কমিয়ে আনা এবং ধাপে ধাপে তা একেবারে তুলে দেওয়া। রাজস্ব আয় বাড়িয়ে কর-জিডিপি অনুপাতও দুই অঙ্কের ঘরে নিয়ে যাওয়ার চাপ ছিল।
এমন পরিস্থিতিতে রাজস্ব আয়ে হতাশাজনক অবস্থায় পড়ে এনবিআর। দুর্বল আদায় ব্যবস্থাপনার কারণে বিদায়ী অর্থবছরে প্রায় ৪৪ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা ঘাটতি থাকে। রাজস্ব আদায়ে সংস্থাটি যখন ক্রমেই পিছিয়ে, তখনো বিভিন্ন খাত ও সংস্থাকে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ছাড় অব্যাহত রাখা হয়। এনবিআরের শুল্কছাড়-সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) এনবিআর ৫৬ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকার শুল্কছাড় দিয়েছে। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে তা ছিল ৪৬ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। যখন বেশি রাজস্ব আয় দরকার, তখন বাড়তি ৯ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা (২০ দশমিক ৩৫ শতাংশ) ছাড় দেওয়া হয়েছে।
এনবিআরের সাবেক সদস্য আবদুল মান্নান পাটোয়ারী অবশ্য বলেন, ‘আইএমএফ সব সময় চায় কোনো ধরনের রাজস্ব অব্যাহতি না দিতে। তবে সরকারকে জনগণের কথা ভাবতে হয়। ইচ্ছা না থাকলেও সরকারকে অনেক সময় রাজস্ব ছাড় দিতে হয়। যে পরিমাণ ছাড় দেওয়া হয়েছে, ততটুকু সুবিধা ভোক্তারা পাবে—এটা আশা করা যায় না। ব্যবসায়ীরা তাঁদের লাভের কথা চিন্তা করবেনই। ছাড় না দিলে এর অজুহাত দেখিয়ে হয়তো আরও দাম বাড়িয়ে দিতেন।’
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেখতে হবে কোন খাতে সুবিধা তুলে নিলে অর্থনীতিতে মোটাদাগে কোনো আঘাত আসবে না। অন্যদিকে রাজস্ব ক্ষতিও এড়িয়ে যেতে পারব। এমন অনেক সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যেখান থেকে কাঙ্ক্ষিত কোনো বেনিফিট পাওয়া যায় না, বরং অপব্যবহার হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে সুবিধা তুলে নিলে রাজস্ব ক্ষতিটা কমবে এবং কর-জিডিপি অনুপাত বাড়বে।’

টাকার অভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। সব ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রসাধনের চেষ্টা চলছে। রাজস্ব ঘাটতির কারণে নতুন টাকা ছাপিয়ে আর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তহবিল সংকটে সরকার যখন হিসেবি, তখনই রাজস্ব বা শুল্কছাড়ের বেহিসেবি তথ্য সামনে এল।
অর্থসংকট কাটাতে যখন বড় রাজস্ব আয় করার কথা, সেখানে উল্টো ১১ মাসেই অবাধ ছাড় দিয়ে ৫৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি করা হয়েছে। এ সুযোগ নিয়েছে ভোজ্যতেল আমদানিকারক, মোবাইল ফোনসেট উৎপাদক ও পোলট্রিশিল্প এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক প্রতিবেদন থেকে বিপুল পরিমাণ শুল্কছাড়ের তথ্য জানা গেছে।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, বিদায়ী অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত ভোজ্যতেলের আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট ছাড় দেওয়া হয়। এতে রাজস্ব ক্ষতি হয় ৩ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরে ছাড়ের পরিমাণ ছিল ৬১৮ কোটি টাকা। শুল্কছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তি ছিল, এতে ভোক্তারা কম দামে ভোজ্যতেল কিনতে পারবেন। অথচ ভোজ্যতেলের দাম দফায় দফায় বেড়েছে। একইভাবে দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন খাতে ২ হাজার ১৫৩ কোটি টাকার শুল্কছাড় দেওয়া হয়।
তখন বলা হয়েছিল, এর ফলে অপেক্ষাকৃত কম দামে মানুষ মোবাইল ফোনসেট কিনতে পারবে। অথচ বাজারে মোবাইল ফোনসেটের দাম খুব একটা কমেনি। পোলট্রিশিল্পে ছাড় দেওয়া হয় ৮৯৩ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে ছিল ৬৭২ কোটি টাকা। বাস্তবে পোলট্রি পণ্য, বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে।
এর বাইরে টেক্সটাইল খাত ছাড় পেয়েছে ৮৬৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) ১ হাজার ১২ কোটি টাকা এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি ৭২৫ কোটি টাকা শুল্কছাড় নিয়েছে। এনবিআরের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৫ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা, অগ্রিম আয়করসহ অন্যান্য খাতে ৮১৬ কোটি টাকার শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে। বিশেষ অব্যাহতির মাধ্যমে ছাড় দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ১৯৮ টাকার শুল্ক। মূলধনি যন্ত্রপাতি কিনতে ছাড় দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ৯০১ কোটি টাকা, ত্রাণসামগ্রী খাতে ছাড় দেওয়া হয়েছে ২৮৩ কোটি টাকা, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামালের ছাড় ৩ হাজার ৪১১ কোটি টাকা, শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, সিংহভাগ সুবিধাই গেছে ব্যবসায়ীদের পকেটে। তাঁরা বলছেন, ঠিকমতো রাজস্ব আয় না হওয়ার পরিস্থিতিতেও বিভিন্ন খাতে শুল্কছাড় দেওয়ার কারণেই সরকারকে বিপুল অঙ্কের টাকা ধার করতে হয়েছে। এমনকি নতুন অর্থবছরের শুরুতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে ধার করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে, মাত্র ২০ দিনেই সরকার ১৩ হাজার কোটি টাকা ধার করেছে। বিদায়ী অর্থবছরে সরকারের ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৮৩০ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরে তা ছিল ২ লাখ ৭৭ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা।
শুল্কছাড় প্রসঙ্গে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) শর্ত হলো উল্লেখযোগ্যভাবে কর অব্যাহতি কমানো। আমরা তো উল্টো দিকে যাচ্ছি। সরকার যদি উল্টো দিকে যায় তাহলে তো মুশকিল। টাকার অঙ্কে ঘাটতি বাড়ায় সরকারের ঋণ বাড়ছে। দেশি-বিদেশি ঋণ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এই ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতা আমাদের ব্যাংকিং খাতের নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ ঋণই নিক না কেন, সেটা উদ্বেগের কারণ। আর এ সবই হচ্ছে মূলত রাজস্ব ঘাটতির কারণে। এতে ব্যয়সংকোচন করা হচ্ছে, ঋণ বাড়ছে, সুদ বাড়ছে এবং আমরা প্রয়োজনীয় ব্যয় করতে পারছি না।’
এনবিআরের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা অনুযায়ী, স্বল্প করহার, কর অব্যাহতি ও কর অবকাশ সুবিধার কারণে কর-জিডিপি অনুপাত ২ দশমিক ২৮ শতাংশ কম হচ্ছে। এসব সুবিধা তুলে দিলে কর-জিডিপি অনুপাত ১০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে দাঁড়াবে। অথচ সেদিকে নজর সীমিত বলে মনে করছেন রাজস্ব খাতের বিশেষজ্ঞরা।
ব্যবসায়ীরা অবশ্য শুল্কছাড়ের পক্ষে। এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভোজ্যতেলে ভ্যাট সুবিধা না দিলে ১৮০ টাকার পরিবর্তে ভোক্তারা ২১০ টাকায় খেত। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে সরকার ছাড় দিয়েছে এবং এতে অবশ্যই ভোক্তারা উপকৃত হয়েছে। তা না হলে ভোক্তাদের আরও কষ্ট হতো।’ এই সুবিধা প্রকৃতপক্ষে কারা বেশি পেল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ভোক্তারা বেশি পেয়েছে। ব্যবসায়ীর কি লাভ? ব্যবসায়ীরা তো ভোক্তাদের কাছ থেকেই ভ্যাট আদায় করে সরকারকে দিতেন। ব্যবসায়ীর কী আছে এখানে?’
কোভিডজনিত অর্থনৈতিক সংকট আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে চাপে পড়ে বিশ্ব অর্থনীতি। এর ধাক্কা লাগে বাংলাদেশেও। সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে ডলার সাশ্রয়সহ কৃচ্ছ্রসাধনের নানামুখী পদক্ষেপ নেয়। পাশাপাশি বড় রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ঠিক করে। এর সঙ্গে যোগ হয় আইএমএফের কঠিন সব শর্ত। এর অন্যতম ছিল করছাড় কমিয়ে আনা এবং ধাপে ধাপে তা একেবারে তুলে দেওয়া। রাজস্ব আয় বাড়িয়ে কর-জিডিপি অনুপাতও দুই অঙ্কের ঘরে নিয়ে যাওয়ার চাপ ছিল।
এমন পরিস্থিতিতে রাজস্ব আয়ে হতাশাজনক অবস্থায় পড়ে এনবিআর। দুর্বল আদায় ব্যবস্থাপনার কারণে বিদায়ী অর্থবছরে প্রায় ৪৪ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা ঘাটতি থাকে। রাজস্ব আদায়ে সংস্থাটি যখন ক্রমেই পিছিয়ে, তখনো বিভিন্ন খাত ও সংস্থাকে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ছাড় অব্যাহত রাখা হয়। এনবিআরের শুল্কছাড়-সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) এনবিআর ৫৬ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকার শুল্কছাড় দিয়েছে। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে তা ছিল ৪৬ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। যখন বেশি রাজস্ব আয় দরকার, তখন বাড়তি ৯ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা (২০ দশমিক ৩৫ শতাংশ) ছাড় দেওয়া হয়েছে।
এনবিআরের সাবেক সদস্য আবদুল মান্নান পাটোয়ারী অবশ্য বলেন, ‘আইএমএফ সব সময় চায় কোনো ধরনের রাজস্ব অব্যাহতি না দিতে। তবে সরকারকে জনগণের কথা ভাবতে হয়। ইচ্ছা না থাকলেও সরকারকে অনেক সময় রাজস্ব ছাড় দিতে হয়। যে পরিমাণ ছাড় দেওয়া হয়েছে, ততটুকু সুবিধা ভোক্তারা পাবে—এটা আশা করা যায় না। ব্যবসায়ীরা তাঁদের লাভের কথা চিন্তা করবেনই। ছাড় না দিলে এর অজুহাত দেখিয়ে হয়তো আরও দাম বাড়িয়ে দিতেন।’
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেখতে হবে কোন খাতে সুবিধা তুলে নিলে অর্থনীতিতে মোটাদাগে কোনো আঘাত আসবে না। অন্যদিকে রাজস্ব ক্ষতিও এড়িয়ে যেতে পারব। এমন অনেক সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যেখান থেকে কাঙ্ক্ষিত কোনো বেনিফিট পাওয়া যায় না, বরং অপব্যবহার হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে সুবিধা তুলে নিলে রাজস্ব ক্ষতিটা কমবে এবং কর-জিডিপি অনুপাত বাড়বে।’
জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা

টাকার অভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। সব ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রসাধনের চেষ্টা চলছে। রাজস্ব ঘাটতির কারণে নতুন টাকা ছাপিয়ে আর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তহবিল সংকটে সরকার যখন হিসেবি, তখনই রাজস্ব বা শুল্কছাড়ের বেহিসেবি তথ্য সামনে এল।
অর্থসংকট কাটাতে যখন বড় রাজস্ব আয় করার কথা, সেখানে উল্টো ১১ মাসেই অবাধ ছাড় দিয়ে ৫৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি করা হয়েছে। এ সুযোগ নিয়েছে ভোজ্যতেল আমদানিকারক, মোবাইল ফোনসেট উৎপাদক ও পোলট্রিশিল্প এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক প্রতিবেদন থেকে বিপুল পরিমাণ শুল্কছাড়ের তথ্য জানা গেছে।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, বিদায়ী অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত ভোজ্যতেলের আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট ছাড় দেওয়া হয়। এতে রাজস্ব ক্ষতি হয় ৩ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরে ছাড়ের পরিমাণ ছিল ৬১৮ কোটি টাকা। শুল্কছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তি ছিল, এতে ভোক্তারা কম দামে ভোজ্যতেল কিনতে পারবেন। অথচ ভোজ্যতেলের দাম দফায় দফায় বেড়েছে। একইভাবে দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন খাতে ২ হাজার ১৫৩ কোটি টাকার শুল্কছাড় দেওয়া হয়।
তখন বলা হয়েছিল, এর ফলে অপেক্ষাকৃত কম দামে মানুষ মোবাইল ফোনসেট কিনতে পারবে। অথচ বাজারে মোবাইল ফোনসেটের দাম খুব একটা কমেনি। পোলট্রিশিল্পে ছাড় দেওয়া হয় ৮৯৩ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে ছিল ৬৭২ কোটি টাকা। বাস্তবে পোলট্রি পণ্য, বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে।
এর বাইরে টেক্সটাইল খাত ছাড় পেয়েছে ৮৬৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) ১ হাজার ১২ কোটি টাকা এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি ৭২৫ কোটি টাকা শুল্কছাড় নিয়েছে। এনবিআরের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৫ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা, অগ্রিম আয়করসহ অন্যান্য খাতে ৮১৬ কোটি টাকার শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে। বিশেষ অব্যাহতির মাধ্যমে ছাড় দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ১৯৮ টাকার শুল্ক। মূলধনি যন্ত্রপাতি কিনতে ছাড় দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ৯০১ কোটি টাকা, ত্রাণসামগ্রী খাতে ছাড় দেওয়া হয়েছে ২৮৩ কোটি টাকা, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামালের ছাড় ৩ হাজার ৪১১ কোটি টাকা, শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, সিংহভাগ সুবিধাই গেছে ব্যবসায়ীদের পকেটে। তাঁরা বলছেন, ঠিকমতো রাজস্ব আয় না হওয়ার পরিস্থিতিতেও বিভিন্ন খাতে শুল্কছাড় দেওয়ার কারণেই সরকারকে বিপুল অঙ্কের টাকা ধার করতে হয়েছে। এমনকি নতুন অর্থবছরের শুরুতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে ধার করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে, মাত্র ২০ দিনেই সরকার ১৩ হাজার কোটি টাকা ধার করেছে। বিদায়ী অর্থবছরে সরকারের ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৮৩০ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরে তা ছিল ২ লাখ ৭৭ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা।
শুল্কছাড় প্রসঙ্গে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) শর্ত হলো উল্লেখযোগ্যভাবে কর অব্যাহতি কমানো। আমরা তো উল্টো দিকে যাচ্ছি। সরকার যদি উল্টো দিকে যায় তাহলে তো মুশকিল। টাকার অঙ্কে ঘাটতি বাড়ায় সরকারের ঋণ বাড়ছে। দেশি-বিদেশি ঋণ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এই ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতা আমাদের ব্যাংকিং খাতের নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ ঋণই নিক না কেন, সেটা উদ্বেগের কারণ। আর এ সবই হচ্ছে মূলত রাজস্ব ঘাটতির কারণে। এতে ব্যয়সংকোচন করা হচ্ছে, ঋণ বাড়ছে, সুদ বাড়ছে এবং আমরা প্রয়োজনীয় ব্যয় করতে পারছি না।’
এনবিআরের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা অনুযায়ী, স্বল্প করহার, কর অব্যাহতি ও কর অবকাশ সুবিধার কারণে কর-জিডিপি অনুপাত ২ দশমিক ২৮ শতাংশ কম হচ্ছে। এসব সুবিধা তুলে দিলে কর-জিডিপি অনুপাত ১০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে দাঁড়াবে। অথচ সেদিকে নজর সীমিত বলে মনে করছেন রাজস্ব খাতের বিশেষজ্ঞরা।
ব্যবসায়ীরা অবশ্য শুল্কছাড়ের পক্ষে। এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভোজ্যতেলে ভ্যাট সুবিধা না দিলে ১৮০ টাকার পরিবর্তে ভোক্তারা ২১০ টাকায় খেত। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে সরকার ছাড় দিয়েছে এবং এতে অবশ্যই ভোক্তারা উপকৃত হয়েছে। তা না হলে ভোক্তাদের আরও কষ্ট হতো।’ এই সুবিধা প্রকৃতপক্ষে কারা বেশি পেল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ভোক্তারা বেশি পেয়েছে। ব্যবসায়ীর কি লাভ? ব্যবসায়ীরা তো ভোক্তাদের কাছ থেকেই ভ্যাট আদায় করে সরকারকে দিতেন। ব্যবসায়ীর কী আছে এখানে?’
কোভিডজনিত অর্থনৈতিক সংকট আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে চাপে পড়ে বিশ্ব অর্থনীতি। এর ধাক্কা লাগে বাংলাদেশেও। সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে ডলার সাশ্রয়সহ কৃচ্ছ্রসাধনের নানামুখী পদক্ষেপ নেয়। পাশাপাশি বড় রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ঠিক করে। এর সঙ্গে যোগ হয় আইএমএফের কঠিন সব শর্ত। এর অন্যতম ছিল করছাড় কমিয়ে আনা এবং ধাপে ধাপে তা একেবারে তুলে দেওয়া। রাজস্ব আয় বাড়িয়ে কর-জিডিপি অনুপাতও দুই অঙ্কের ঘরে নিয়ে যাওয়ার চাপ ছিল।
এমন পরিস্থিতিতে রাজস্ব আয়ে হতাশাজনক অবস্থায় পড়ে এনবিআর। দুর্বল আদায় ব্যবস্থাপনার কারণে বিদায়ী অর্থবছরে প্রায় ৪৪ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা ঘাটতি থাকে। রাজস্ব আদায়ে সংস্থাটি যখন ক্রমেই পিছিয়ে, তখনো বিভিন্ন খাত ও সংস্থাকে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ছাড় অব্যাহত রাখা হয়। এনবিআরের শুল্কছাড়-সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) এনবিআর ৫৬ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকার শুল্কছাড় দিয়েছে। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে তা ছিল ৪৬ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। যখন বেশি রাজস্ব আয় দরকার, তখন বাড়তি ৯ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা (২০ দশমিক ৩৫ শতাংশ) ছাড় দেওয়া হয়েছে।
এনবিআরের সাবেক সদস্য আবদুল মান্নান পাটোয়ারী অবশ্য বলেন, ‘আইএমএফ সব সময় চায় কোনো ধরনের রাজস্ব অব্যাহতি না দিতে। তবে সরকারকে জনগণের কথা ভাবতে হয়। ইচ্ছা না থাকলেও সরকারকে অনেক সময় রাজস্ব ছাড় দিতে হয়। যে পরিমাণ ছাড় দেওয়া হয়েছে, ততটুকু সুবিধা ভোক্তারা পাবে—এটা আশা করা যায় না। ব্যবসায়ীরা তাঁদের লাভের কথা চিন্তা করবেনই। ছাড় না দিলে এর অজুহাত দেখিয়ে হয়তো আরও দাম বাড়িয়ে দিতেন।’
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেখতে হবে কোন খাতে সুবিধা তুলে নিলে অর্থনীতিতে মোটাদাগে কোনো আঘাত আসবে না। অন্যদিকে রাজস্ব ক্ষতিও এড়িয়ে যেতে পারব। এমন অনেক সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যেখান থেকে কাঙ্ক্ষিত কোনো বেনিফিট পাওয়া যায় না, বরং অপব্যবহার হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে সুবিধা তুলে নিলে রাজস্ব ক্ষতিটা কমবে এবং কর-জিডিপি অনুপাত বাড়বে।’

টাকার অভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। সব ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রসাধনের চেষ্টা চলছে। রাজস্ব ঘাটতির কারণে নতুন টাকা ছাপিয়ে আর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তহবিল সংকটে সরকার যখন হিসেবি, তখনই রাজস্ব বা শুল্কছাড়ের বেহিসেবি তথ্য সামনে এল।
অর্থসংকট কাটাতে যখন বড় রাজস্ব আয় করার কথা, সেখানে উল্টো ১১ মাসেই অবাধ ছাড় দিয়ে ৫৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি করা হয়েছে। এ সুযোগ নিয়েছে ভোজ্যতেল আমদানিকারক, মোবাইল ফোনসেট উৎপাদক ও পোলট্রিশিল্প এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক প্রতিবেদন থেকে বিপুল পরিমাণ শুল্কছাড়ের তথ্য জানা গেছে।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, বিদায়ী অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত ভোজ্যতেলের আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট ছাড় দেওয়া হয়। এতে রাজস্ব ক্ষতি হয় ৩ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরে ছাড়ের পরিমাণ ছিল ৬১৮ কোটি টাকা। শুল্কছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তি ছিল, এতে ভোক্তারা কম দামে ভোজ্যতেল কিনতে পারবেন। অথচ ভোজ্যতেলের দাম দফায় দফায় বেড়েছে। একইভাবে দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন খাতে ২ হাজার ১৫৩ কোটি টাকার শুল্কছাড় দেওয়া হয়।
তখন বলা হয়েছিল, এর ফলে অপেক্ষাকৃত কম দামে মানুষ মোবাইল ফোনসেট কিনতে পারবে। অথচ বাজারে মোবাইল ফোনসেটের দাম খুব একটা কমেনি। পোলট্রিশিল্পে ছাড় দেওয়া হয় ৮৯৩ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে ছিল ৬৭২ কোটি টাকা। বাস্তবে পোলট্রি পণ্য, বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে।
এর বাইরে টেক্সটাইল খাত ছাড় পেয়েছে ৮৬৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) ১ হাজার ১২ কোটি টাকা এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি ৭২৫ কোটি টাকা শুল্কছাড় নিয়েছে। এনবিআরের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৫ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা, অগ্রিম আয়করসহ অন্যান্য খাতে ৮১৬ কোটি টাকার শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে। বিশেষ অব্যাহতির মাধ্যমে ছাড় দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ১৯৮ টাকার শুল্ক। মূলধনি যন্ত্রপাতি কিনতে ছাড় দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ৯০১ কোটি টাকা, ত্রাণসামগ্রী খাতে ছাড় দেওয়া হয়েছে ২৮৩ কোটি টাকা, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামালের ছাড় ৩ হাজার ৪১১ কোটি টাকা, শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, সিংহভাগ সুবিধাই গেছে ব্যবসায়ীদের পকেটে। তাঁরা বলছেন, ঠিকমতো রাজস্ব আয় না হওয়ার পরিস্থিতিতেও বিভিন্ন খাতে শুল্কছাড় দেওয়ার কারণেই সরকারকে বিপুল অঙ্কের টাকা ধার করতে হয়েছে। এমনকি নতুন অর্থবছরের শুরুতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে ধার করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে, মাত্র ২০ দিনেই সরকার ১৩ হাজার কোটি টাকা ধার করেছে। বিদায়ী অর্থবছরে সরকারের ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৮৩০ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরে তা ছিল ২ লাখ ৭৭ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা।
শুল্কছাড় প্রসঙ্গে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) শর্ত হলো উল্লেখযোগ্যভাবে কর অব্যাহতি কমানো। আমরা তো উল্টো দিকে যাচ্ছি। সরকার যদি উল্টো দিকে যায় তাহলে তো মুশকিল। টাকার অঙ্কে ঘাটতি বাড়ায় সরকারের ঋণ বাড়ছে। দেশি-বিদেশি ঋণ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এই ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতা আমাদের ব্যাংকিং খাতের নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ ঋণই নিক না কেন, সেটা উদ্বেগের কারণ। আর এ সবই হচ্ছে মূলত রাজস্ব ঘাটতির কারণে। এতে ব্যয়সংকোচন করা হচ্ছে, ঋণ বাড়ছে, সুদ বাড়ছে এবং আমরা প্রয়োজনীয় ব্যয় করতে পারছি না।’
এনবিআরের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা অনুযায়ী, স্বল্প করহার, কর অব্যাহতি ও কর অবকাশ সুবিধার কারণে কর-জিডিপি অনুপাত ২ দশমিক ২৮ শতাংশ কম হচ্ছে। এসব সুবিধা তুলে দিলে কর-জিডিপি অনুপাত ১০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে দাঁড়াবে। অথচ সেদিকে নজর সীমিত বলে মনে করছেন রাজস্ব খাতের বিশেষজ্ঞরা।
ব্যবসায়ীরা অবশ্য শুল্কছাড়ের পক্ষে। এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভোজ্যতেলে ভ্যাট সুবিধা না দিলে ১৮০ টাকার পরিবর্তে ভোক্তারা ২১০ টাকায় খেত। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে সরকার ছাড় দিয়েছে এবং এতে অবশ্যই ভোক্তারা উপকৃত হয়েছে। তা না হলে ভোক্তাদের আরও কষ্ট হতো।’ এই সুবিধা প্রকৃতপক্ষে কারা বেশি পেল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ভোক্তারা বেশি পেয়েছে। ব্যবসায়ীর কি লাভ? ব্যবসায়ীরা তো ভোক্তাদের কাছ থেকেই ভ্যাট আদায় করে সরকারকে দিতেন। ব্যবসায়ীর কী আছে এখানে?’
কোভিডজনিত অর্থনৈতিক সংকট আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে চাপে পড়ে বিশ্ব অর্থনীতি। এর ধাক্কা লাগে বাংলাদেশেও। সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে ডলার সাশ্রয়সহ কৃচ্ছ্রসাধনের নানামুখী পদক্ষেপ নেয়। পাশাপাশি বড় রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ঠিক করে। এর সঙ্গে যোগ হয় আইএমএফের কঠিন সব শর্ত। এর অন্যতম ছিল করছাড় কমিয়ে আনা এবং ধাপে ধাপে তা একেবারে তুলে দেওয়া। রাজস্ব আয় বাড়িয়ে কর-জিডিপি অনুপাতও দুই অঙ্কের ঘরে নিয়ে যাওয়ার চাপ ছিল।
এমন পরিস্থিতিতে রাজস্ব আয়ে হতাশাজনক অবস্থায় পড়ে এনবিআর। দুর্বল আদায় ব্যবস্থাপনার কারণে বিদায়ী অর্থবছরে প্রায় ৪৪ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা ঘাটতি থাকে। রাজস্ব আদায়ে সংস্থাটি যখন ক্রমেই পিছিয়ে, তখনো বিভিন্ন খাত ও সংস্থাকে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ছাড় অব্যাহত রাখা হয়। এনবিআরের শুল্কছাড়-সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) এনবিআর ৫৬ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকার শুল্কছাড় দিয়েছে। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে তা ছিল ৪৬ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। যখন বেশি রাজস্ব আয় দরকার, তখন বাড়তি ৯ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা (২০ দশমিক ৩৫ শতাংশ) ছাড় দেওয়া হয়েছে।
এনবিআরের সাবেক সদস্য আবদুল মান্নান পাটোয়ারী অবশ্য বলেন, ‘আইএমএফ সব সময় চায় কোনো ধরনের রাজস্ব অব্যাহতি না দিতে। তবে সরকারকে জনগণের কথা ভাবতে হয়। ইচ্ছা না থাকলেও সরকারকে অনেক সময় রাজস্ব ছাড় দিতে হয়। যে পরিমাণ ছাড় দেওয়া হয়েছে, ততটুকু সুবিধা ভোক্তারা পাবে—এটা আশা করা যায় না। ব্যবসায়ীরা তাঁদের লাভের কথা চিন্তা করবেনই। ছাড় না দিলে এর অজুহাত দেখিয়ে হয়তো আরও দাম বাড়িয়ে দিতেন।’
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেখতে হবে কোন খাতে সুবিধা তুলে নিলে অর্থনীতিতে মোটাদাগে কোনো আঘাত আসবে না। অন্যদিকে রাজস্ব ক্ষতিও এড়িয়ে যেতে পারব। এমন অনেক সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যেখান থেকে কাঙ্ক্ষিত কোনো বেনিফিট পাওয়া যায় না, বরং অপব্যবহার হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে সুবিধা তুলে নিলে রাজস্ব ক্ষতিটা কমবে এবং কর-জিডিপি অনুপাত বাড়বে।’

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

টাকার অভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। সব ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রসাধনের চেষ্টা চলছে। রাজস্ব ঘাটতির কারণে নতুন টাকা ছাপিয়ে আর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তহবিল সংকটে সরকার যখন হিসেবি, তখনই রাজস্ব বা শুল্কছাড়ের বেহিসেবি তথ্য সামনে এল।
২৩ জুলাই ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

টাকার অভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। সব ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রসাধনের চেষ্টা চলছে। রাজস্ব ঘাটতির কারণে নতুন টাকা ছাপিয়ে আর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তহবিল সংকটে সরকার যখন হিসেবি, তখনই রাজস্ব বা শুল্কছাড়ের বেহিসেবি তথ্য সামনে এল।
২৩ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

টাকার অভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। সব ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রসাধনের চেষ্টা চলছে। রাজস্ব ঘাটতির কারণে নতুন টাকা ছাপিয়ে আর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তহবিল সংকটে সরকার যখন হিসেবি, তখনই রাজস্ব বা শুল্কছাড়ের বেহিসেবি তথ্য সামনে এল।
২৩ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

টাকার অভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। সব ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রসাধনের চেষ্টা চলছে। রাজস্ব ঘাটতির কারণে নতুন টাকা ছাপিয়ে আর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তহবিল সংকটে সরকার যখন হিসেবি, তখনই রাজস্ব বা শুল্কছাড়ের বেহিসেবি তথ্য সামনে এল।
২৩ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫