Ajker Patrika

বৃষ্টিতে তরমুজ ও ধানের ক্ষতি

বরগুনা ও আমতলী প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ মে ২০২২, ১২: ৩৫
বৃষ্টিতে তরমুজ ও ধানের ক্ষতি

ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বরগুনায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে তরমুজখেত ডুবে গেছে। এতে খেতে থাকা লাখ লাখ টাকার তরমুজ নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষি বিভাগ বলছে, বৈরী আবহাওয়ায় তারা কৃষকদের সহায়তা করতে পারছে না।

এদিকে আমতলী উপজেলায় বোরো ধান ও রবি ফসলের খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। বিপাকে পড়েছেন উপজেলার অন্তত ৭ হাজার কৃষক। এতে রবি ফসলের পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, জেলার অধিকাংশ খেতের তরমুজ বিক্রি হয়ে গেছে। তবে সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের নিমতলী বালিয়াতলী ইউনিয়নের খাকবুনিয়া, আমতলী, চৌমুহনীসহ কয়েকটি এলাকায় তরমুজ এখনো খেতে রয়ে গেছে। কয়েক দিন পর বেশি লাভে এসব তরমুজ বিক্রির কথা ছিল।

গতকাল বুধবার সকালে সরেজমিন বরগুনা সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের নিমতলী ও বালিয়াতলী ইউনিয়নের খাকবুনিয়া এলাকায় দেখা গেছে, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টিতে তরমুজের খেতগুলো তলিয়ে গেছে। নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটুপানি জমে গেছে খেতে। কৃষকেরা খেত থেকে তরমুজ তুলে রাস্তার ওপর স্তূপ করে রেখেছেন, কেউ আবার পানিতে ডুবে থাকা তরমুজ কেটে নৌকায় তুলছেন। তরমুজ ডুবে যাওয়ায় লাখ লাখ টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।

খাকবুনিয়া এলাকার কৃষক জলিল মৃধা বলেন, ‘২ লাখ ২৮ হাজার টাকা ব্যয় করে তরমুজ আবাদ করেছি। ফলন মোটামুটি ভালো ছিল। ভাবছিলাম, ১০-১৫ দিন পর বিক্রি করব। তাই ফল কাটিনি। কিন্তু দুদিনের বৃষ্টিতে সব শেষ। এখন এই তরমুজ ২ লাখ টাকায়ও বিক্রি করতে পারব কি না সন্দেহ আছে।’

নিমতলী গ্রামের আল আমিন হোসেন বলেন, ‘১ লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ করে ১৬ বিঘা জমিতে তরমুজ আবাদ করেছি। বৃষ্টির পানিতে খেত তলিয়ে যাওয়ায় এখন ১০ হাজার টাকাও বিক্রি করা যাবে না। হঠাৎ বৃষ্টির ব্যাপারে কষি অফিস আমাদের সতর্ক করেনি। সতর্ক করলে হয়তো এত ক্ষতি হতো না।’

আরেক চাষি আবুল কালাম বলেন, ‘আমি ৪ লাখ টাকা ব্যয় করে তরমুজ চাষ করেছিলাম। কয়েক দিন পর ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারতাম। কিন্তু বিক্রি করার আগেই বৃষ্টিতে খেত তলিয়ে গেছে।’

আমতলীতে ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে তিন দিন ধরে উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। ওই বৃষ্টিতে বোরো ধান ও রবি ফসলের খেত তলিয়ে গেছে। বোরো ধানের তেমন ক্ষতি না হলেও রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে জানান কৃষকেরা। অধিকাংশ মুগ ডাল, বাদাম ও মিষ্টি আলুর খেত পানির নিচে তলিয়ে থাকায় ফসল ঘরে তুলছে পারছে না তাঁরা। এতে উপজেলায় ১০ হাজার ১৩০ হেক্টর জমির অন্তত পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হবে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা। অপর দিকে ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির বোরো ধান কাটার ধুম চললেও অশনির প্রভাবে ধান হেলে পড়ার ভয়ে আতঙ্কিত কৃষকেরা। ধান হেলে পড়লে বেশ ক্ষতি হবে বলে জানান তারা।

পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের রাসেল হাওলাদার বলেন, ‘পানিতে মুগডালের খেত তলিয়ে গেছে। কোনো ডালই ঘরে তুলতে পারিনি।’

গাবতলী গ্রামের কৃষক মাজহারুল বলেন, ‘এক একর জমিতে মুগডাল চাষ করেছিলাম কিন্তু পানিতে তলিয়ে থাকায় কোনো ডাল তুলতে পারিনি। এতে অন্তত ত্রিশ হাজার টাকা ক্ষতি হবে।’

আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিএম রেজাউল করিম বলেন, ‘পানিতে মাঠ তলিয়ে থাকায় রবি ফসলের বেশ ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে দ্রুত পানি নিষ্কাশন হলে ক্ষতির পরিমাণ কম হবে।’

বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু সৈয়দ জোবায়দুল আলম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বৃষ্টিপাতে তরমুজ ছাড়া অন্য কোনো ফসলের ক্ষতি হয়নি। যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের তালিকা তৈরি করা হবে। পরে এ কৃষকদের সহায়তা দেওয়া হবে। লোকবল সংকটে মাঠপর্যায়ে অনেক কাজই করতে পারছি না আমরা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত